ভুলে ভরা মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগকারী মো. মুরাদ হাসান প্রধানমন্ত্রীর কাছে আজ মঙ্গলবার যে আবেদন করেছেন, তাতে বানান ভুল আছে অন্তত ১১টি। বড় তিনটি বাক্যে করা পদত্যাগের মূল আবেদনপত্রে একটি বাক্যও ভুল। সম্বোধন ও আবেদনকারীর নাম-পরিচয় অংশ ছাড়া আবেদনপত্রটি মোট সাত লাইনের।
আবেদনপত্রের প্রথম ভুলটি হচ্ছে ‘তেঁজগাও’। প্রকৃত শব্দ ‘তেজগাঁও’। মুরাদ হাসান ত-এর ওপর চন্দ্রবিন্দু দিয়েছেন, যা হবে গ-এর ওপর। একটি জায়গায় বাহুল্য হিসেবে ‘হতে’ ব্যবহার করেছেন তিনি। যেমন ‘আমি অদ্য ০৭.১২.২০২১ খ্রি: তারিখ হতে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব হতে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।’
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’ সম্বোধন করা আবেদনপত্রের প্রথম বাক্যটিই অদ্ভুত। সেটি হচ্ছে, ‘স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নিবেন’। ‘নিবেন’-এর পর তিনি কমা ব্যবহার করেছেন, বাক্য শেষ হওয়ায় যেখানে দাঁড়ি হবে। আর এমন ‘স্ব-শ্রদ্ধেয়’ সালামের অস্তিত্ব বাংলা ভাষায় নেই বলে বলছেন বাংলা একাডেমির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা।
আবেদনপত্রে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার তারিখটিও ভুল উল্লেখ করেছেন মুরাদ হাসান। তিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন ২০১৯ সালের ১৯ মে। অথচ আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন ২০২১ সালের ১৯ মে। আবেদনপত্রে খ্রিষ্টাব্দ বোঝাতে সংক্ষেপে ‘খ্রি:’ ব্যবহার করা হয়েছে তিনবার। অথচ বাংলা একাডেমি নিয়ম করে দিয়েছে, সংক্ষেপে খ্রিষ্টাব্দ লিখতে খ্রি-এর পর শুধু একটা ফুলস্টপ, অর্থাৎ ‘খ্রি.’ ব্যবহার করতে হবে।
আবেদনপত্রের দ্বিতীয় অংশটি এক বাক্যে লেখা। সেটি হচ্ছে, ‘এমতাবস্থায়, আপনার নিকট বিনীত নিবেদন এই যে, আমাকে অদ্য ০৭.১২.২১ খ্রি: হতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদানের লক্ষ্যে পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।’
এই লাইনে বানান ভুল দুটি। অব্যাহতির বদলে লেখা হয়েছে ‘অব্যহতি’। পদত্যাগপত্রটির বদলে ভেঙে লেখা হয়েছে ‘পদত্যাগ পত্রটি’। এমনকি বাক্য হিসেবেও সম্পূর্ণ হয়নি এটি। বাংলা একাডেমির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, ‘আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি’র বদলে হবে ‘আপনার যেন একান্ত মর্জি হয়’।
পদত্যাগকারী প্রতিমন্ত্রীর নামটি কি ‘মো: মুরাদ হাসান’, না ‘মো. মুরাদ হাসান’। আবেদনপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘মো: মুরাদ হাসান’। বানানরীতি অনুযায়ী, এটিও ভুল।