মঞ্চে নৃত্যনাট্য 'শাপমোচন'

রবীন্দ্রনাথের ‘শাপমোচন’ নৃত্যনাট্যের একটি বিশেষ মুহূর্তে নৃত্য শিল্পী প্রমা অবন্তী
রবীন্দ্রনাথের ‘শাপমোচন’ নৃত্যনাট্যের একটি বিশেষ মুহূর্তে নৃত্য শিল্পী প্রমা অবন্তী

গন্ধর্ব সৌরসেন স্বর্গের সুরলোকের সংগীতসভায় প্রধানদের একজন। তার প্রেয়সী মধুশ্রী গেছে সুমেরু শিখরে সূর্য প্রদক্ষিণে। সৌরসেনের মন তখন উদাসী। সে আনমনা হয়ে গেলে তার মৃদঙ্গের তাল কেটে যায়, উর্বশীদের নাচে পড়ে বাঁধা, ইন্দ্রানীর কপাল লাল হয়ে ওঠে। সে সুরসভার অভিশাপে গন্ধর্ব সৌরসেনের দেহ ও মুখমণ্ডল বিকৃত হয়ে যায়। তাকে প্রেরণ করা হয় মর্ত্যে। অরুণেশ্বর নাম নিয়ে তার জন্ম হয় গান্ধার রাজগৃহে। এই সময় মধুশ্রী ইন্দ্রানীর পায়ে মাথা ঠেকিয়ে বলে, ‘আমাদের বিচ্ছেদ ঘটিয়ো না, আমাকে পাঠিয়ে দাও মর্ত্যে।’ এভাবেই নানা আবেগঘন ঘটনার প্রতিফলন হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্য ‘শাপমোচনে’।
এ নৃত্যনাট্যে দর্শকদের সামনে উঠে আসে অরুণেশ্বর ও কমলিকার প্রেম-বিরহের ঘটনাপ্রবাহ। ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় থিয়েটার ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে সুরঙ্গন শিল্পীগোষ্ঠীর ৪৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নৃত্যনাট্যটি মঞ্চস্থ হয়। এটি পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন প্রমা অবন্তী।
বর্ষপূর্তির আয়োজনে ছিল কথামালা, গান ও নৃত্যনাট্য। আয়োজনের শুরুতে বাবুল সেনগুপ্তের সভাপতিত্বে কথামালায় প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজবিজ্ঞানী অনুপম সেন। অতিথি ছিলেন অরুণ সেনগুপ্ত, এস এম আবুল হোসেন, তহুরীন সবুর, মো. ইউসুফ হোসেন ভূঁইয়া, মানবেন্দ্র বড়ুয়া ও এনামুল কবির।
নৃত্যনাট্যে কমলিকা ও মধুশ্রী চরিত্রে ছিলেন প্রমা অবন্তী, অরুণেশ্বর ও গন্ধর্ব সৌরসেনের চরিত্রে ছিলেন আবিদুর রহমান। অরুণেশ্বর ও কমলিকা চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন আবৃত্তিশিল্পী রণজিৎ রক্ষিত ও সোমা। নৃত্যনাট্যে আরও অংশ নিয়েছেন জয়িতা, নিবিড়, পারমিতা, স্মিতা, হিয়া, সংগীতা, কান্তা, প্রিয়া, রাই, মৃত্তিকা, তুষি, প্রিয়ম, অর্কিড, প্রাচী, মোমিতা, মৌ-প্রিয়া, অর্জিতা ও সুফিয়া। যন্ত্রসংগীতে ছিলেন বাবুল দাশ, মদন মোহন ঘোষ, অরূপ তালুকদার, মনজরুল হক, প্রদীপ দাশ, রাজ-কিশোর, মিহির কানুগো, সানু দাশগুপ্ত, পলাশ দাশ, মৌমিতা ঘোষ, বিষতোষ তালুকদার ও শ্যামল মিত্র। এ ছাড়া আয়োজনে হারানো দিনের গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।