মতলব দক্ষিণে প্লাস্টিকের বস্তার অবাধ ব্যবহার

সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার বাজারগুলোতে মালামাল বেচাকেনা ও সংরক্ষণে দোকানিরা ব্যাপক হারে প্লাস্টিকের বস্তা (মোড়ক) ও থলে ব্যবহার করছেন।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম কানিজ ফাতেমা প্রথম আলোকে বলেন, ২০১০ সালে সরকার পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহারে আইন জারি করে। আইনে বলা হয়েছে, পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার না করে যদি কেউ প্লাস্টিকের মোড়ক ব্যবহার করে, তবে ওই আইনের ১৪ ধারায় তা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।
গত সোমবার উপজেলা সদর বাজার, মুন্সিরহাট, নারায়ণপুর, বরদিয়া, নওগাঁও ও তাফালিং বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় সব মুদি দোকানে এবং চাল ও সারের আড়তে প্লাস্টিকের বস্তায় মালামাল রাখা হয়েছে। প্লাস্টিকের বস্তা বা থলেতেই দোকানিরা বিক্রি করছেন চাল, ডাল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুন্সিরহাট বাজারের একজন চাল ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, পাটের বস্তার চেয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় পণ্য বেচাকেনা ও আনা-নেওয়া বেশি সুবিধাজনক। এ জন্য প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করছেন। তিনি দাবি করেন, বাজারের ৮০ শতাংশ দোকানি প্লাস্টিকের বস্তা নিষিদ্ধ হওয়ার কথা জানেন না।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর বাজারের চালের আড়ত পপি ট্রেডার্সের মালিক পীতোষ সাহা বলেন, দোকানে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল রাখায় তাঁর জরিমানা দিতে হয়েছে। এখন থেকে পাটের বস্তায় পণ্য রাখবেন।
স্থানীয় মতলব ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জি এম হাবিব খান প্রথম আলোকে বলেন, প্লাস্টিকের মোড়ক পচে না। এগুলো মাটিতে মিশে ফসল উৎপাদনকে ব্যাহত করে। এগুলোর বর্জ্যে দূষিত হয় পরিবেশ। পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও বিঘ্নিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্লাস্টিকের বস্তায় চাল, ডাল, গম, সার ও চিনি সংরক্ষণ এবং বেচাকেনা নিষিদ্ধ। আইন ভঙ্গ করে প্লাস্টিকের মোড়ক ব্যবহার করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে চারজন চাল ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। বাজারে প্লাস্টিকের মোড়কের ব্যবহার বন্ধ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো অব্যাহত থাকবে। তদারকির ব্যবস্থাও চলবে।