মাগুরায় দম্পতির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

মাগুরায় একই রশির দুই মাথায় স্বামী-স্ত্রী দুজনের গলায় ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কানুটিয়া গ্রাম থেকে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত দম্পতি হলেন রবিউল ইসলাম (৩৪) ও তাঁর স্ত্রী খাদিজা বেগম (২৭)। রবিউলের বাবা হাবিবুর রহমান মোল্লা বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে রবিউলের সঙ্গে মহম্মদপুরের ছোট জোকা গ্রামের ছুরমান মিয়ার মেয়ে খাদিজার বিয়ে হয়। অবস্থাসম্পন্ন রবিউল রবিশস্যের ব্যবসায়ী। এ দম্পতির আড়াই বছর বয়সের একটি মেয়েসন্তান রয়েছে। সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে গত বুধবার রাতে এ দম্পতি ঘুমাতে যান। সকাল সাড়ে সাতটা বাজলেও ঘুম থেকে না ওঠায় রবিউলের মা ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি বাড়ি ও আশপাশের লোকজন ডাকেন। তাঁরা ঘরে ঢুকে দেখতে পান, ফ্যানের সঙ্গে দুজন একই রশিতে ঝুলছেন। শিশুসন্তানটি পাশের কক্ষে। মৃতদেহ দুটি নামিয়ে তাঁরা পুলিশে খবর দেন।
রবিউলের চাচা ইয়াসিন মোল্লা (৫০) প্রথম আলোকে বলেন, রবিউল ও তাঁর স্ত্রী খুবই শান্ত ও ভালো স্বভাবের ছিলেন। তাঁরা দুই ভাই ও এক বোন। বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোট ভাইয়ের এখনো বিয়ে হয়নি। বাড়িতে অভাব-অভিযোগ ছিল না। ছোট্ট শিশুসন্তান রেখে স্বামী-স্ত্রী কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, সে হিসাব তাঁরা মেলাতে পারছেন না।
জিজ্ঞেস করা হলে মাগুরা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৃতদেহ দুটি একই দড়িতে ঝুলছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা পুলিশকে জানিয়েছেন। পুলিশ যাওয়ার আগেই তাঁরা লাশ দুটি নামিয়ে ফেলেন। রবিউলের দুই পা ঘরের খাট ছুঁয়ে ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন। তাই আত্মহত্যা, না হত্যা, তা ময়নাতদন্ত ছাড়া নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রবিউলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, মাতম চলছে। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। বাড়িতে শত শত মানুষ ভিড় করছেন। রবিউলের মা বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল ইসলাম বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। ওই ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।