মানিক মিয়া সাংবাদিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র

মানিক মিয়া, সাংবাদিকতা ও বাংলাদেশের রাজনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি একই সঙ্গে সাংবাদিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র। আবার তাঁর অনুপ্রেরণা তৎকালীন পাকিস্তান আমলে রাজনৈতিক আন্দোলনের অন্যতম উৎস। এমনকি বঙ্গবন্ধুও তাঁর থেকে প্রেরণা পেতেন, তাঁকে ভরসার জায়গা ও রাজনৈতিক দিকদর্শক মনে করতেন।

দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের এক মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় পার্টি-জেপি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি।
বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে মানিক মিয়া অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, তাঁর লেখা কলাম ‘মোসাফির’ না থাকলে দেশে গণ-আন্দোলন হতো না। তাঁর লেখা পড়েই তখন ছাত্ররা আন্দোলনের অনুপ্রেরণা পেতেন। মানুষ রাজনৈতিক শিক্ষা পেতেন।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মানিক মিয়ার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল বলে আমু বলেন, ছয় দফার সময় মানিক মিয়া বলিষ্ঠভাবে বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন করেছিলেন।
এতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকতায় মানিক মিয়ার বিভিন্ন অবদান তুলে ধরেন। বর্তমানে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছে সংবাদপত্র জিম্মি হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বর্তমান সাংবাদিকদের মানিক মিয়াকে অনুসরণ করার পরামর্শও দেন।
নাসিম আরও বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। আবার দেশের বাইরের এবং দেশের ভেতরের শক্তি এক হয়ে প্রেসক্রিপশন দিচ্ছে, কীভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু নির্বাচন কীভাবে হবে তা সংবিধানেই লেখা আছে। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই নির্বাচন হবে।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, যাঁরা আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মানিক মিয়া। বাংলাদেশে সংবাদপত্রের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। আর এ দুটি ক্ষেত্রেই মানিক মিয়ার অবদান অনেক। তিনি তাঁর সাহসিকতায় সংবাদপত্রে এক অন্য মাত্রা যুক্ত করেছেন।
অনুষ্ঠানে মানিক মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমানসহ বরেণ্য ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে মরহুমের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
মানিক মিয়া ১৯১১ সালে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে দৈনিক ইত্তেহাদের পরিচালনা পরিষদের সেক্রেটারি হিসেবে যোগ দেন। তাঁর সম্পাদনায় ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক ইত্তেফাক দৈনিক ইত্তেফাকে রূপ নেয়। মানিক মিয়া পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে ১৯৬৯ সালের ১ জুন মারা যান।