মা–বাবার আইনি লড়াই, ভুগছে শিশুরা

মানসিক চিকিৎসকেরা বলছেন, বিরোধে সংশ্লিষ্ট করা হলে ভবিষ্যতে শিশুর ব্যক্তিত্বের গঠন ও পারিবারিক জীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাবও পড়তে পারে।

প্রতীকী ছবি

মায়ের সঙ্গে নোয়াখালী থেকে হাইকোর্টে এসেছিল ১২ বছর বয়সী শিশুটি। বসেছিল আদালত কক্ষে রাখা শেষ বেঞ্চে, নির্বাক দৃষ্টি। তার বাবার করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুটিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর আদালতে উপস্থিত করা হয়।

ইতিমধ্যে শিশুটির মা ও বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে। শিশুটি তার মায়ের কাছে ছিল। তবে আইনজীবী গোলাম রাব্বানী শরীফের মাধ্যমে আদালতে বাবার আরজি ছিল, শিশুটিকে তার দাদি দেখতে চান।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৬ সেপ্টেম্বর শিশুটিকে তার দাদির সঙ্গে এক দিনের জন্য থাকার অনুমতি দেন। পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর মায়ের কাছে শিশুটিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। শিশুটির বাবা যখন সময় পাবেন, তখন শিশুটিকে দেখতে নোয়াখালী যেতে ও সময় কাটাতে পারবেন, বলেছেন আদালত। সেদিন শুনানিকালে আদালত বলেন, স্বামী ও স্ত্রীর সম্পর্ক খারাপ হলে এর চেয়ে খারাপ আর সম্পর্ক হয় না। হয়রানিতে পড়তে হয় শিশুদের। ইদানীং এটি বেড়ে গেছে।

শিশুকে বেআইনিভাবে আটক রাখার অভিযোগ নিয়ে সন্তানকে নিজ হেফাজতে নিতে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া বা বিচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় থাকা স্বামী ও স্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট পক্ষ উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। সম্প্রতি এমন ঘটনা বেশি দেখা যাচ্ছে।

উচ্চ আদালতে এ-সংক্রান্ত কতগুলো মামলা রয়েছে বা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায়নি। তবে চলতি বছরের চারটি, ২০২০ সালের একটি, ২০১৯ সালের একটি ও এর আগের বছরের দুটি—মোট আটটি ঘটনা আলোচনায় আসে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৩৭৫টি পারিবারিক বিরোধ নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো তাদের কাছে গেছে। এর মধ্যে ১৯টি ছিল সন্তানের জিম্মা নিয়ে। বিরোধগুলোর তিনটি আসকের মধ্যস্থতায় ও তিনটি আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। বাকি ১৩টি বিরোধ আসকে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক আহমেদ হেলাল প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ে ও বিচ্ছেদ দুটিই বৈধ বিষয়। তবে বিচ্ছেদের ঘটনায় সরাসরি শিশুদের সম্পৃক্ত করা হলে তখন তারা প্রক্রিয়ার অংশ হয়ে দাঁড়ায়। কখনো শিশুকে পারিবারিক পরিবেশে কিংবা আদালতে উপস্থিত হতে হয়। তিনি বলেন, বিরোধে সংশ্লিষ্ট করা হলে শিশুর ব্যক্তিত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। মনের ওপর চাপ পড়তে পারে। ভবিষ্যতে শিশুর ব্যক্তিত্বের গঠন ও পারিবারিক জীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাবও পড়তে পারে।

আহমেদ হেলাল আরও বলেন, বিচ্ছেদপ্রক্রিয়া স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। গুরুতর প্রয়োজন না হলে শিশুদের বিচ্ছেদের সামগ্রিক প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখাই বাঞ্ছনীয়।

চলতি বছরের আরও তিনটি ঘটনা

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে জাপান থেকে আসা দুই শিশুকে হেফাজতে রাখা নিয়ে একটি মামলা রয়েছে। শিশুদের বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক আর মা জাপানি নাগরিক। শুনানিতে হাইকোর্ট একাধিকবার উভয় পক্ষের আইনজীবীদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্যোগ নিতে সময় দেন। আদালত এ-ও বলেন, যদি উভয় পক্ষ সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে পারে, তা শিশুদের জন্য ভালো হবে। তবে গত ৩০ সেপ্টেম্বর শুনানিতে দুই পক্ষের সমঝোতার দৃশ্যমান অগ্রগতির তথ্য জানা যায়নি। এ অবস্থায় সেদিন হাইকোর্ট পরবর্তী শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর দিন রাখেন। আদালত বলেন, দুই শিশু তাদের মায়ের সঙ্গে গুলশানের বাসায় থাকবে। শিশুদের বাবা দিনের বেলা তাদের সঙ্গে দেখা করা ও সময় কাটাতে পারবেন—এভাবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

আইনজীবী সূত্রের তথ্যমতে, এক আইনজীবী ও এক অভিনেত্রীর সঙ্গে ২০১৮ সালে বিয়ে হয়। মতপার্থক্যের জেরে চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ দেন স্বামী। তাঁদের দুই সন্তান। ছোট শিশুসন্তানটি মায়ের কাছে আর বড়টি বাবার কাছে থাকে। এ অবস্থায় বড় সন্তানকে বাবা বেআইনিভাবে আটক রেখেছেন—এমন অভিযোগ নিয়ে সন্তানকে ফিরে পেতে রিট করেন শিশুটির মা। শুনানি নিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। শিশুটিকে ২৭ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে উপস্থিত করতে শিশুর বাবাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

* চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে সন্তানের জিম্মা সংক্রান্ত ১৯টি বিরোধ নিয়ে পক্ষগুলো আইন ও সালিস কেন্দ্রের কাছে গিয়েছে। * পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপ বলছে, দেশে প্রতি ১,০০০ নারী-পুরুষের মধ্যে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে গড়ে ১.৪টি। * ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে সন্তানের জিম্মা নিয়ে ৮টি আবেদন আলোচনায় এসেছে।

ভারতীয় মুসলিম পরিবারের এক মেয়ের সঙ্গে বাংলাদেশি এক ব্যবসায়ীর বিয়ে হয় ২০১৭ সালের ৪ জুলাই, ভারতের হায়দরাবাদে। ২০১৮ সালে এই দম্পতির এক ছেলেসন্তান হয়। তবে স্বামী গত ১১ আগস্ট স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান। স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানিয়ে ওই নারীর স্বজনেরা একটি মানবাধিকার সংগঠনের কাছে আইনি সহায়তা চান। প্রায় সাড়ে তিন বছর বয়সী শিশু ও তার মাকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিতে মানবাধিকার সংগঠনসহ অন্যরা রিট করে।

হাইকোর্ট প্রথমে রুল দিয়ে শিশু ও তার মাকে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে গত ২৬ আগস্ট আদালত বলেন, শিশুটি মানবাধিকার সংগঠনের ব্যবস্থাপনায় আপাতত তার মায়ের সঙ্গে থাকবে। বাবা সপ্তাহে তিন দিন শিশুটির সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। দুই মাসের জন্য এ আদেশ দেওয়া হয়।

শিশুটি আছে মায়ের কাছেই

এক অভিনেতা ও মডেল কন্যার ২০১২ সালের ২৪ মে বিয়ে হয়। পরের বছরের ২৫ জুন তাঁদের ঘরে আসে ছেলেসন্তান। পরে ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। শিশুটি তাঁর বাবার কাছে ছিল। এ অবস্থায় সন্তানকে নিজ হেফাজতে নিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিশুটির মা।

শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত দেন। বলা হয়, শিশুটি এখন থেকে তার মায়ের কাছে থাকবে। সপ্তাহে দুই দিন শিশুটিকে দেখার জন্য তার বাবা তাকে নিয়ে আসতে পারবেন, সঙ্গে রাখতে পারবেন। অভিভাবকত্ব নিতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতে কোনো পক্ষ চাইলে মামলা করতে পারবে। হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের পর থেকে শিশুটি তার মায়ের হেফাজতে আছে বলে জানান শিশুর মায়ের আইনজীবী রিপন কুমার বড়ুয়া।

বিচ্ছেদপ্রক্রিয়া স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। গুরুতর প্রয়োজন না হলে শিশুদের বিচ্ছেদের সামগ্রিক প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখাই বাঞ্ছনীয়।
আহমেদ হেলাল, সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

অস্ট্রেলিয়ান শিশুর সন্ধান জানা যায়নি

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ার এক নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশি এক নারীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর, ঢাকায়। ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর তাঁদের এক সন্তান হয়। বাবা অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হওয়ায় জন্মসূত্রে শিশুটি সে দেশের পাসপোর্ট পায়। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ শিশুটিকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যান তার মা।

একপর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক শিশুটির বাবা ও দাদি সে দেশ থেকে মাকে না জানিয়ে শিশুটিকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন বলে অভিযোগ ওঠে। শিশুটির বাবা ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ায় থাকা শিশুটির মায়ের বরাবরে তালাকের নোটিশ পাঠান। এরপর শিশুটির উপস্থিতি নিশ্চিতে হাইকোর্টে রিট করেন শিশুটির নানা ও নানি। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে শিশুটিকে আদালতে হাজির করতে তার বাবা ও দাদিকে নির্দেশ দেন। তবে ধার্য তারিখে শিশুটিকে আদালতে হাজির করা হয়নি।

শিশুটির ফুফুর আইনজীবী আদালতকে জানান, রিট করার আগেই শিশুটিসহ তার বাবা ও দাদি দেশ ত্যাগ করেছেন। শিশুটির নানা ও নানির আইনজীবী হাসান এম এস আজিম প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক শিশুটি দেশে ফিরলে সে তথ্য জানাতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। এরপর আর কোনো অগ্রগতি জানানো হয়নি।

দুই শিশু মায়ের কাছে

আরেক দম্পতির বিয়ে হয় ২০০২ সালে। তাঁদের দুই সন্তান। দাম্পত্য জীবনের মনোমালিন্যের জেরে ২০১৭ সালের ১২ মে স্বামী তালাকের নোটিশ পাঠান স্ত্রীকে। এর এক সপ্তাহ আগে দুই শিশুকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন বাবা। বড় ছেলের বয়স তখন ১২ ও ছোটটির বয়স ৯ বছর। এর মধ্যে দুই সন্তানের আর দেখা পাননি মা। এ অবস্থায় সন্তানদের নিজের হেফাজতে নিতে হাইকোর্টে আবেদন করেন মা। একই বছরের ২৯ মে হাইকোর্ট রুল দিয়ে দুই শিশুকে আদালতে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও শিশুদের বাবাকে নির্দেশ দেন।

দুই শিশুকে ২০১৮ সালের ২৫ জুন আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালতে তারা (দুই শিশু) তাদের মা-বাবাকে একত্রে দেখতে চায় বলে অনুভূতি প্রকাশ করে। অগ্রগতি জানাতে সময় দিয়ে হাইকোর্ট বলেন, আপাতত শিশুরা মায়ের সঙ্গে থাকবে।

মায়ের আইনজীবী কে এম রিয়াদ সলিমুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এরপর থেকে শিশুরা মায়ের সঙ্গে আছে। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

সন্তানদের দায়দায়িত্ব কে বহন করবে, তা বিয়ের সময় উল্লেখ থাকলে বাবা ও মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হলে বা বিচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় শিশুকে ভুগতে হয় না।
সৈয়দা নাসরিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

বাবার কাছে দুই শিশু

চট্টগ্রামের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে এক নারীর বিয়ে হয় ২০০৮ সালের ১২ মার্চ। তাঁদের দুই সন্তানের মধ্যে প্রথমটি মেয়ে, দ্বিতীয়টি ছেলে। ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর ওই দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর দুই সন্তান তাদের বাবার কাছে ছিল। তবে সন্তানদের নিজ হেফাজতে নিতে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে রিট করেন শিশুদের মা। ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, দুই শিশু সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে। মাকে অবহিত করে বাবা এক দিন পরপর শিশুদের গিয়ে দেখতে পারবেন।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের বাবা ও মা। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর আপিল বিভাগ আদেশ দেন। এ অনুসারে দুই শিশু বাবার কাছেই আছে বলে জানান তার আইনজীবী সৈয়দ তাজরুল হোসেন।

‘বিয়ের সময়ই চুক্তি হতে পারে’

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, কয়েক বছর ধরে দেশে তালাকের প্রবণতা বাড়ছে। শিক্ষিত স্বামী-স্ত্রীদের মধ্যে তালাক বেশি হচ্ছে। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে তালাকের ঘটনা বেড়েছে ১৭ শতাংশ। ২০১৯ সালে ১৫ বছরের বেশি বয়সী প্রতি ১ হাজার নারী-পুরুষের মধ্যে গড়ে ১ দশমিক ৪টি তালাকের ঘটনা ঘটে।

প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ মাসে ঢাকায় বিবাহবিচ্ছেদ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এই সময়ে দৈনিক গড়ে ৩৯টি তালাকের ঘটনা ঘটে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন প্রথম আলোকে, সন্তানের অভিভাবকত্ব ও হেফাজত নিয়ে কোনো বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রতিটি জেলায় পারিবারিক আদালত আছে। কিন্তু সম্প্রতি শিশুকে আটক রাখা হচ্ছে—এমন অভিযোগ নিয়ে বাবা বা মাকে হাইকোর্টে রিট করতে দেখা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শিশুর জীবনের দায়দায়িত্ব মা-বাবাকে নিতে হয়। তাই নিকাহনামার ফরমে বা আলাদাভাবে চুক্তি করে হলেও বিয়ের সময় ভবিষ্যতে বিবাহবিচ্ছেদ হলে ও শিশু থাকলে তাদের ভরণপোষণ, শিক্ষা, জিম্মা ও অভিভাবকত্বের বিষয়গুলো সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে। এসব দায়দায়িত্ব কে বহন করবে, তা বিয়ের সময় উল্লেখ থাকলে বাবা ও মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হলে বা বিচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় শিশুকে ভুগতে হয় না।