মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি ও রায় কার্যকরের দাবি সহকর্মীদের

অধ্যাপক তাহের
অধ্যাপক তাহের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পার হলেও মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি থেকে মামলার রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে করা আপিলের দ্রুত নিষ্পত্তি ও রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে অধ্যাপক তাহের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার পশ্চিম ২৩/বি বাসা থেকে নিখোঁজ হন। ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে বাসার পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সকালে ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সামনে থেকে প্রতিবাদ র্যা লি বের করা হয়। র্যা লিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বিভাগের সামনে এসে শেষ হয়। পরে বেলা ১১টায় বিভাগের ৪১২ নম্বর কক্ষে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে শোকসভায় অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ও সহ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা দ্রুত মামলার কার্যক্রম শেষ করে দোষীদের শাস্তি কার্যকরের দাবি জানান।
২০০৬ সালে ঘটনার পরই অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভী নগরের মতিহার থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাহেরের বাসার কেয়ারটেকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় তাহেরের সহকর্মী জামায়াতপন্থী শিক্ষক মিয়া মো. মহিউদ্দিনকে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৮ মার্চ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক আহসানুল কবির জামায়াতপন্থী শিক্ষক মিয়া মহিউদ্দিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন শিবিরের নেতা মাহবুবুল আলম সালেহীসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ৩ জুলাই রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। ২০০৮ সালের ২২ মে আদালত শিক্ষক মিয়া মহিউদ্দিন, বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীরের ভাই শিবিরের কর্মী আবদুস সালাম ও নাজমুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। অন্য দুই আসামি মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিন পান বেকসুর খালাস। ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন আসামিরা। পাঁচ বছর পর ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল আপিলের রায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে অন্য দুজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে উল্লিখিত আসামিদের দুজন খালাস পাওয়ায় এবং দুজনের সাজা কমানোয় তাহেরের পরিবারের পক্ষ থেকে আবার উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়, যা এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।