মামা-ভাগনের কাদা ছোড়াছুড়ি
নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী মামা ও ভাগনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এরই মধ্যে চরম রূপ নিয়েছে। নির্বাচনের মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।
মেয়র প্রার্থী এই মামা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সদ্যসাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আবদুল ওয়াহেদ ওরফে বাহাদুর এবং তাঁর ভাগনে জাপা থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েও দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জলঢাকা পৌরসভার মেয়র ইলিয়াস হোসেন ওরফে বাবলু।
গত সোমবার দুপুরে জলঢাকা যুবলীগের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নেতা-কর্মীদের নিয়ে আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত আবদুল ওয়াহেদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী বিধিনিষেধের কারণে এখনো প্রচারণায় নামিনি। কিন্তু আমার ভাগনে ইলিয়াস হোসেন বিভিন্ন জায়গায় আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার ও গালমন্দ করে বেড়াচ্ছেন। তাঁর দুই ছেলে গত রোববার আমার কর্মী বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের নেতা রবিউল ইসলাম ও আজমসহ চার-পাঁচজন মিলে এলাকায় জনসংযোগ চালানোর সময় তাঁদের ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বড় ছেলে প্রাইভেট কার আর ছোট ছেলে নীলয় মোটরসাইকেল নিয়ে এসে এ চেষ্টা চালায়। আমি পরিবেশ ঠিক রাখতে আমার কর্মীদের সংযত থাকতে বলেছি।।’ তিনি আরও বলেন, ‘সে (ভাগনা) বলেছিল আমি মনোনয়ন পেলে আমার পক্ষে প্রচারণা চালাবে। এখন নিজে মনোনয়ন না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে।’
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ইলিয়াস হোসেনের বড় ছেলে নোভা ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। বাবার নির্বাচন উপলক্ষে বর্তমানে এলাকায় আছেন। আর ছোট ছেলে নীলয় বিএ প্রথম বর্ষে লেখাপড়া করেন।
গতকাল বিকেলে ইলিয়াস হোসেনের বাসভবনে গিয়ে দেখা যায়, তিনিও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মামার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘মামাই আমার বিরুদ্ধে খারাপ কথা বলে বেড়াচ্ছেন। তাঁর এসব কথা আমার কাছে রেকর্ড করা আছে। শুনতে চাইলে শুনতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলেরা অত বড় না যে উনার কর্মীদের ওপর গাড়ি তুলে দেবে। আসলে মামা ভাইস চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দিয়ে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। এখন নিশ্চিত পরাজয় জেনে আবলতাবল বলে বেড়াচ্ছেন।’
জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন এ মামা-ভাগনে। দুজনই দলের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পান মামা। আর ভাগনে ইলিয়াস দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।
জলঢাকা পৌরসভার ২০১১ সালের উপনির্বাচনে ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির নেতা ইলিয়াস হোসেন। কিন্তু গত ২৪ নভেম্বর রাতে তিনি জাপা ছেড়ে জলঢাকা উপজেলা কৃষক লীগে যোগদান করেন।
আবদুল ওয়াহেদ অবশ্য ভাগনের কথা খারিজ করে বলেন, ‘পরাজয়ের ভয়ে তিনি আগে থেকেই এসব কথা বলছেন। আর তাঁর ছেলেরা কেমন সেটা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বললেই জানতে পারবেন।’