
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ভাতিজির বিয়ের অনুষ্ঠানে গুলি ছুড়ে উল্লাস করা আওয়ামী লীগের নেতা ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে ‘শেষবারের মতো’ ক্ষমা করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জহির রায়হান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা হাকিম হাবিবুর রহমান। তিনি গতকাল বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, গুলি ছোড়ার ঘটনায় ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র শামীমুল ইসলাম ওরফে ছানা গত মঙ্গলবার বিকেলে৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি হলফনামা জমা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, সেদিন ভুলবশত তিনি গুলি ছুড়েছিলেন। ভবিষ্যতে আইন লঙ্ঘন করে এ ধরনের কোনো কাজ করবেন না মর্মে হলফনামায় অঙ্গীকার করেছেন তিনি। ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করায় এবারের মতো তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।
গত ১০ জানুয়ারি রাতে বড় ভাইয়ের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে শটগানের গুলি ছুড়ে উল্লাস করেন শামীমুল ইসলাম। তিনি সেখানে পিস্তলও প্রদর্শন করেন। এমন দৃশ্য ফেসবুক লাইভে প্রচার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। ঘটনার পরদিন শামীমুল নিজেই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
গুলি ছোড়ার ঘটনার পর ‘কেন তাঁর (শামীমুলের) অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করা হবে না’ তা জানতে চেয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতাকে ১৫ জানুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন জেলা প্রশাসক জহির রায়হান। ২৩ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দেন শামীমুল। তারপর তাঁকে ৩০০ টাকার হলফনামায় ক্ষমা চাওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়।
আ.লীগ কর্মীর অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল
স্থানীয় একটি রাস্তা নির্মাণ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ২২ জানুয়ারি দৌলতপুর উপজেলার কামালপুর গ্রামে লোকজনের ওপর শটগান দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মী আবদুস সালাম। এতে ২০ জন আহত হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ তাঁকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। তাঁর অস্ত্রটিও জব্দ করে পুলিশ। সালামের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের কর্মী আবদুস সালামের শটগানের লাইসেন্স বাতিল করেছেন জেলা প্রশাসক জহির রায়হান। তিনিগতকাল বুধবার সন্ধ্যায়এ সিদ্ধান্ত নেন।
জেলা প্রশাসক জহির রায়হান গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আওয়ামী লীগ কর্মী আবদুস সালামের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।