মুভমেন্ট পাসের জন্য মিনিটে ১৫ হাজার আবেদন

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ
ফাইল ছবি

আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া আট দিনের লকডাউনে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বিশেষ অ্যাপ চালু করেছে। মুভমেন্ট পাস নামের অ্যাপটি উদ্বোধনের পর প্রথম ঘণ্টায় আবেদন জমা পড়েছে ১ লাখ ২৫  হাজার। প্রতি মিনিটে ১৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছে বলে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মিলনায়তনে অ্যাপটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আগামীকাল বুধবার থেকে সারা দেশে শুরু হওয়া লকডাউনে কাউকে রাস্তায় দেখতে চাই না।’ অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামসহ পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

লকডাউনে বাসা থেকে নিতান্ত প্রয়োজনে কাউকে বের হতে হলে www.movementpass.police.gov.bd এই ওয়েব ঠিকানায় ঢুকতে হবে। প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করার পর ডাউনলোড করে তা প্রিন্ট নিতে হবে। প্রিন্ট কপিটিই মুভমেন্ট পাস হিসেবে গণ্য করা হবে।

লকডাউন পালনে সবার সহযোগিতা চেয়ে আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা আগামীকাল বুধবার রাস্তাঘাট এবং বাইরে বিনা প্রয়োজনে কাউকে দেখতে চাই না। আমরা চাপ প্রয়োগের চেয়ে নিজেদের উদ্যোগেই এই দায়িত্ব পালন করব। এসব না মানলে সমগ্র বাংলাদেশকে আইসোলেশনে নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘গত বছর পুলিশ করোনা পরিস্থিতি যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে, এবারও করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সেভাবেই নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে অবশ্যই অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা বন্ধ করতে হবে। গত বছর লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। এবারও গত দুদিন ধরে ঢাকা ছাড়ছেন, এগুলো ঠিক না। এগুলো নৈতিকভাবে খুবই অন্যায় কাজ। গতকাল সোমবার বিভিন্নভাবে যারা যেখানে পৌঁছেছেন, তাঁরা সেখানেই থাকবেন।’

পুলিশপ্রধান বলেন, ‘সীমিত কারণে বের হওয়া লাগতে পারে। তাঁরা মুভমেন্ট পাস নেবেন। রাস্তাঘাটে কোনো আড্ডা দেবেন না। বিভিন্ন সড়কে, মোড়ে আড্ডা দেবেন না। দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তরুণেরা কেউ বের হবেন না। বের হতে হলে অবশ্যই দ্রুত ঘরে ফিরতে হবে।’ গাড়ি বের করার বিষয়েও নিরুৎসাহী করে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই মুভমেন্ট পাস নেবেন।’

করোনা পরিস্থিতিতে সবাইকে সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা কোনো প্রাণহানি চাই না। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের প্রধান উপায় হচ্ছে ব্যক্তিগত সচেতনতা। আমাদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। তা ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া—এসব বিধি আমাদের মনোযোগ ও আন্তরিকতা দিয়ে মানতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘মুভমেন্ট পাস নিতেই হবে এমন না। আমরা কাউকে বাধ্য করছি না। এখানে আইনগত কোনো বিষয় নেই।’ তবে পাস ছাড়া কেউ বের হলে তিনি পুলিশের জেরার মুখে পড়বেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আইজিপি।

প্রান্তিক মানুষের কী হবে, যাঁদের ইন্টারনেট ব্যবস্থা নেই, স্মার্টফোন নেই, তাঁরা কীভাবে এই পাস সংগ্রহ করবেন—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘দেশে প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। যদি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কেউ না পারে তাহলে প্রতিবেশীর সাহায্য নিতে পারে। তা ছাড়া আমরা তো গণমাধ্যমের কাছ থেকে প্রতিদিনের ফিডব্যাক পাব।’ গণমাধ্যম কর্মীদের এই পাস লাগবে না বলে আইজিপি জানিয়েছেন।