যাঁরা অনিয়ম ধরবেন, তাঁদের স্বজনেরাই পান চাকরি

এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড

  • ইডিসিএলের জনবল প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ওষুধ তৈরি। কর্মী প্রায় ৪,৫০০

  • ইডিসিএলের শুধু ঢাকা কারখানায় গুদাম পাহারা ও রক্ষণাবেক্ষণে কর্মী ৪৩৫ জন

  • বনভোজনকে দাপ্তরিক কাজ দেখিয়ে ভাতা নেওয়া হয়।

দেশের একমাত্র সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

সরকারের একমাত্র ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগে ২০১৮ সালে নিয়োগ পান কর্মী। এর মধ্যে একজন সরকারের বাণিজ্যিক নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক মো. আফতাবুজ্জামানের ভাইয়ের মেয়ে। আর অন্যজন অধিদপ্তরের বর্তমান পরিচালক সাঈদ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের বোন।

বাণিজ্যিক নিরীক্ষা অধিদপ্তরের একটি দল ইডিসিএলে নিরীক্ষা করে যাওয়ার পরপরই এই দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিরীক্ষা দলের তদারকিতে ছিলেন আফতাবুজ্জামান এবং দলের নেতা ছিলেন সাঈদ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

শুধু দুজন নন, ইডিসিএলের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগে মোট ছয়জনের নিয়োগের তথ্য পাওয়া গেছে, যাঁরা ওই প্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষা করতে যাওয়া কর্মকর্তাদের স্বজন। যদিও নিরীক্ষকদের কাজ হলো অনিয়ম ধরা। ইডিসিএলের কর্মকর্তাদের একাংশ অভিযোগ করছেন যে নিরীক্ষায় অনিয়ম-দুর্নীতিতে ছাড় দেওয়ার বদলে স্বজনদের চাকরির ব্যবস্থা করেছেন নিরীক্ষা কর্মকর্তারা।

ইডিসিএলে আরও কিছু অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনিয়মের দিকগুলো হলো, বনভোজনকে দাপ্তরিক কাজ দেখিয়ে ভ্রমণ ও অন্যান্য ভাতা নেওয়া। তদবির ও সুপারিশে যোগ্যতাহীন কর্মীদের নিয়োগ। বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়া অবৈধভাবে কর্মী নিয়োগ।

সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির জনবল প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও দপ্তরে জনবলের ঘাটতি আছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ইডিসিএল। একটি উদাহরণ দেওয়া যাক—ইডিসিএলের ঢাকা কারখানায় ভান্ডার পাহারা ও রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করেন ৪৩৫ জন কর্মী। বেসরকারি একটি ওষুধ কোম্পানি বলছে, তারা এই কাজে ৩৫ জনের বেশি নিয়োগ দিত না।

ইডিসিএলে জনবল বেশি থাকার কথা মানেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক এহসানুল কবিরও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। নানা পর্যায় থেকে লোক নেওয়ার চাপ থাকে । বিভিন্ন সরকারের আমলে নানাভাবে এখানে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সব যে ঠিকভাবে হয়েছে, তা বলা যাবে না। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অপ্রয়োজনীয় লোক নিয়োগ দেওয়ার প্রবণতা কমেছে।

সরকারের একমাত্র ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইডিসিএলে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি। তদবির ও সুপারিশে যোগ্যতাহীন কর্মীদের নিয়োগ।

নিরীক্ষা, আত্মীয় ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব

ইডিসিএলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার তেজগাঁওয়ের সাত রাস্তার মোড়ে। প্রতিষ্ঠানটি ১২৩টি ওষুধ উৎপাদন করতে পারে। তবে তৈরি করে ৮৫টি। বর্তমানে বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ওষুধ ইডিসিএলের নামে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়। এর একাংশ অবশ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে তৈরি করানো।

ইডিসিএলের সবচেয়ে পুরোনো ওষুধ কারখানাটি তেজগাঁওয়ে। কারখানার একটি শাখা রয়েছে বগুড়ায়। প্রতিষ্ঠানটির একটি কনডম কারখানা রয়েছে খুলনায়। কনডম তৈরির জন্য রাবার প্রক্রিয়াজাতের একটি কারখানা রয়েছে টাঙ্গাইলের মধুপুরে। এ ছাড়া ইডিসিএল গত বছর গোপালগঞ্জে নতুন একটি কারখানা করেছে।

ইডিসিএলের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আর্থিক বিষয়াদি নিরীক্ষা করেছিলেন বাণিজ্যিক নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ছয় কর্মকর্তা। এই দলেরই নেতা ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক সাঈদ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তখন মহাপরিচালক হিসেবে নিরীক্ষা তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন মো. আফতাবুজ্জামান।

নিরীক্ষক দলটি ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি ইডিসিএলে গিয়ে কাজ শুরু করে। শেষ হয় ওই বছর ২৯ মার্চ। এর ১৭ দিন পর ইডিসিএলের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগে সহকারী কর্মকর্তা পদে যোগ দেন বাণিজ্যিক নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক মো. আফতাবুজ্জামানের ভাইয়ের মেয়ে।

আফতাবুজ্জামান সরকারি চাকরি থেকে অবসরে গিয়ে এখন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথম আলোকে শুরুতে তিনি বলেন, ওই সময়ের কথা তাঁর মনে নেই। ভাইয়ের মেয়ের ইডিসিএলে নিয়োগের ক্ষেত্রে ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি পরদিন যোগাযোগ করার জন্য বলেন। যদিও পরে তিনি আর ফোন ধরেননি।

নিরীক্ষা দলটির নেতা সাঈদ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের বোন অফিস সহকারী পদে নিয়োগ পান ২০১৮ সালের ৩১ মে। বোনের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা ছিল কি না, জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সাঈদ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইডিসিএলে বাণিজ্যিক নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের স্বজনদের চাকরি পাওয়ার আরও ঘটনা আছে। যেমন ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট সহকারী কর্মকর্তা পদে যোগ দেন এক নারী। ইডিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের শুরুতে নিরীক্ষাকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই নারী কর্মীর স্বামী নারায়ণ চন্দ্র সাহা। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে কর্মরত নারায়ণ চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, স্ত্রীর চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি কোনো প্রভাব খাটাননি।

২০১৭ সালের এপ্রিলে কনিষ্ঠ কর্মকর্তা পদে যোগ দেন এক তরুণ। তাঁর বাবা নজরুল ইসলাম নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে অবসরজীবন কাটাচ্ছেন। এই তরুণ চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর বাবার প্রভাবের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি এই প্রতিবেদককে নিজের বাবার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু দেননি।

ইডিসিএলে চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরীক্ষা করতে আসা কর্মকর্তাদের চাপ থাকে কি না, জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসানুল কবির বলেন, শুধু অডিট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নন, মন্ত্রী-সাংসদ, সাংবাদিক, পুলিশের কারও কারও কাছ থেকে চাপ আসে। এটা সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাস্তবতা।

নিরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের স্বজনদের চাকরি পাওয়াকে স্বার্থের সংঘাত হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, এভাবে যোগসাজশ তৈরি হলে দুর্নীতি ধামাচাপা পড়ে। সরকারের লোকসান হয়।

দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইডিসিএলে যা ঘটেছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে ঘটনাগুলো যোগসাজশেই ঘটেছে। মনে হয় দুই পক্ষই সুবিধা নিয়েছে বা পেয়েছে। এতে নিরীক্ষার বস্তুনিষ্ঠতা নষ্ট হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিরীক্ষা কার্যালয় মূলত দুর্নীতি প্রতিরোধক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তারা দুর্নীতিসহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

ইডিসিএলের কর্মকর্তাদের একটি অংশ কিছু অভিযোগ ঊর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েছিল। যদিও পাঁচ বছর আগে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে পরিবর্তন ছাড়া আর কিছুই হয়নি।

বিপুল জনবল

ইডিসিএলের প্রধান কাজ সরকারি হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ করা। সরকারি হাসপাতালে ও কমিউনিটি ক্লিনিকে মানুষ বিনা মূল্যে যে ওষুধ পায়, তা মূলত ইডিসিএল উৎপাদিত। প্রতিষ্ঠানটি বছরে যে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ওষুধ সরবরাহ করে, তার প্রায় ৩০ শতাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে তৈরি করানো। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী ইডিসিএলের নিজস্ব কারখানায় বছরে ৫০০ কোটি টাকার ওষুধ তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করেন প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মী।

দেখে নেওয়া যাক বেসরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনবল কেমন। দেশের একটি উদীয়মান ওষুধ কোম্পানি বলছে, বছরে তারা প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ওষুধ তৈরি করে। তাদের জনবল মোট দেড় হাজার।

আরেকটি বেসরকারি কোম্পানি মাসে ২০০ কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি করে। কোম্পানিটির একজন ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তাঁদের গুদাম পাহারা, রক্ষণাবেক্ষণে কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ৫০। বিপরীতে ইডিসিএলের ঢাকা কারখানা মাসে গড়ে ৩৫ কোটি টাকার ওষুধ সরবরাহ করে। এই কারখানার গুদাম পাহারা ও রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করেন ৪৩৫ জন।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) একজন প্রভাবশালী নেতার স্বজন ইডিসিএলে চাকরি পেয়েছেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সময়ে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসানুল কবির নিজেও বিএমএর বর্তমান কমিটির সদস্য। এ ছাড়া পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মচারী ইউনিয়নের একজন নেত্রীর ভাই ও বোন ইডিসিএলে কাজ করেন। অভিযোগ আছে, ইডিসিএলের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারাও কর্মী নিয়োগে প্রভাব খাটান।

ইটভাটা থেকে ইডিসিএলে

ইডিসিএলের ওপর করা ২০১৭-১৮ সময়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন ঘেঁটে অন্তত ১২ জন কর্মীকে অবৈধভাবে নিয়োগের তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে একজন ইডিসিএলের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম। তিনি প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরির আবেদন করেছিলেন ২০১০ সালে। আবেদনপত্রে তিনি ইটের ভাটায় কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে যেকোনো পদে নিয়োগের অনুরোধ জানান। তখন নজরুলকে ডেপুটি ম্যানেজার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের আগে লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। পরে পদোন্নতি পেয়ে তিনি ম্যানেজার হন।

অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া আরেকজন ফয়জুর রহমান। তিনি সিনিয়র ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরির আবেদন করেছিলেন। আবেদনপত্রে কোনো তারিখ ছিল না। ২০১৭ সালের ১৩ জুন তারিখে তাঁকে জুনিয়র অফিসার (ভান্ডার) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। অর্থাৎ তাঁকে আবেদনের চেয়ে উচ্চতর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

একই বছর ১৪ এপ্রিল আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে জুনিয়র অফিসার (কম্পিউটার) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ ইডিসিএলের চাকরিবিধিতে এ রকম কোনো পদই ছিল না। নথিপত্র অনুযায়ী, আবদুর রহমান স্নাতক পাসের যে সনদ জমা দিয়েছিলেন, তা ছিল ভুয়া। নিয়োগ দেওয়ার সময় সনদ যাচাই করা হয়নি।

বনভোজনের জন্যও ভাতা!

ইডিসিএল প্রতিবছর বনভোজনের আয়োজন করে। সর্বশেষ হয়েছিল ২০১৯ সালে। এটি ছিল ভিন্ন রকমের বনভোজন! ওই বছর সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে প্রায় ২৫০ কর্মকর্তা টাঙ্গাইলের মধুপুরে বনভোজনে গিয়েছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছর বনভোজনের খরচ কোম্পানি বহন করে। তবে গত বছর যাঁরা বনভোজনে গিয়েছিলেন, তাঁরা পদ অনুয়ায়ী চার দিনের ভ্রমণ ও অন্যান্য ভাতা পেয়েছিলেন। মূলত কর্তাব্যক্তিদের পছন্দের লোকদের এই বনভোজনে নেওয়া হয়েছিল।

ইডিসিএল ওই বনভোজনকে দাপ্তরিক কাজ দেখিয়ে তিন থেকে চার দিনের ভ্রমণ ও অন্যান্য ভাতার ব্যবস্থা করেছিল। নথিতে দেখা যায়, মধুপুর যাওয়ার জন্য ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মোট ১৮টি চলাচল আদেশ জারি করে কর্তৃপক্ষ। প্রথম আদেশটি ছিল সিবিএর সহসভাপতি মো. মিজানুর রহমান ও সহসাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের নামে। এতে বলা ছিল, সিবিএর এই দুই নেতা দাপ্তরিক কাজে কোম্পানির গাড়ি চড়ে (গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো-গ-১৫-২৬১০) মধুপুরে যাবেন।

আদেশে তাঁদের প্রত্যেককে ৪ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়ার কথাও বলা ছিল। গাড়িচালক ছিলেন মো. শামীম আল মামুন। তাঁকে ১০ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। আদেশে আরও বলা ছিল, তাঁরা প্রত্যেকে কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী ভ্রমণভাতা পাবেন এবং ভ্রমণ শেষে অগ্রিম নেওয়া অর্থ সমন্বয় করা হবে।

১৮টি আদেশের ভাষা মোটামুটি একই ছিল। একটিতে অগ্রিম হিসেবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসানুল কবিরকে ১৮ হাজার টাকা দেওয়ার কথা উল্লেখ ছিল। সিবিএর সহসাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে এভাবে ভ্রমণভাতা নেওয়া দীর্ঘদিনের চল।’