যাঁর মাথায় পরচুল, উড়ে যাওয়ার ভয় তাঁরই: প্রধানমন্ত্রী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায়  বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ফোকাস বাংলা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ফোকাস বাংলা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমার মাথায় কাপড় থাকে, মাথায় পরচুলও নেই। এ কারণে বাতাসে চুল উড়ে যাওয়ার ভয় নেই। যাঁর মাথা থেকে পা পর্যন্ত নকল, উড়ে যাওয়ার ভয় তাঁরই আছে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বেন না বলে ঘোষণা দেওয়ার পর খালেদা জিয়া বলেন, আন্দোলনের বাতাসে প্রধানমন্ত্রীর সব চুল উড়ে যাবে।খালেদা জিয়ার ওই বক্তব্যের জের ধরে প্রধানমন্ত্রী  উল্লিখিত মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট মানুষকে কিছু দেয়নি।নিয়ে গেছে।শুধু নেয়নি, পাচারও করেছে।’ তিনি খালেদা জিয়ার  উদ্দেশে বলেন, ‘বিএনপির নেত্রী জবাব দিক, ১৫ আগস্টের খুনিদের সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক? সম্পর্ক নিশ্চয় আছে।কারণ ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে  তিনি  খুনিদের সংসদে বসিয়েছিলেন।’

 জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় থেকে ভোট চুরির কৌশল তাঁরা করেননি।তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে বিএনপি নেত্রী পাচার হওয়া  টাকা রক্ষা করতে গিয়েছিলেন।কিন্তু পারেননি।এই প্রথমবারের মতো পাচারের টাকা ও দুর্নীতির টাকা দেশে ফেরত এসেছে।’ 

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘১৫ আগস্ট জন্মদিন হলেও কেউ তা পালন করে না।কারণ ওই দিন জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল।’ এ সময় তিনি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিজ্ঞা ছিল, ক্ষমতায় এসে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার করবে।তিনি বলেন, ‘আমরা সেই খুনিদের বিচার করেছি।বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে।দেশের মানুষ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।’ তিনি বলেন,  ‘আরেকটা কলঙ্ক আছে।সেটা হলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।এটাও ছিল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গীকার।বিচারের কাজ শুরু হয়েছে।রায় দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছে।’

প্রতিটি আসনে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী রাজধানীবাসীকে ধন্যবাদ জানান।তিনি বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করেছে বলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে।বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দেন।তিনি আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য রাজধানীবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

এর আগে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে জনসভা শুরু হয়।দুপুর থেকেই বিভিন্ন ব্যানার ও পোস্টার নিয়ে সভাস্থলে জড়ো হন নেতা-কর্মীরা।সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কৃত্রিম হ্রদের দক্ষিণ পাড়ে পশ্চিমমুখী করে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়।দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা সেখানে বক্তব্য দেন।সবশেষে বক্তব্য দেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যানজটে নগরবাসী

জনসভার কারণে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বিকেলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে নগরবাসী।  জনসভাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকা ও মিরপুর সড়কে যানজটে পড়তে হয় নগরবাসীকে।