যে মার্কার টাকা পাও সেই মার্কার গান গাও

‘মুই যেই মার্কার টাকা পাও, সেই মার্কার গান গাও। ভোট আইলে প্রার্থীরা মোক ভাড়া করি নিয়া যায়। যাঁর মার্কার গান কও, তাঁর খাবারও খাও। ঘণ্টায় গান কওয়ার জন্যে ৮০ টাকা করিও নেও। এক দিনে চার-পাঁচটা প্রার্থীর পক্ষে গানে গানে ভোট চাইয়া মুই সাত-আট শ টাকা কামাও (আয় করি)।’ এভাবেই একনিশ্বাসে কথাগুলো বলেন শাহিনুর ইসলাম।
শাহিনুর ইসলামের বাড়ি রংপুর সদর উপজেলার পাগলাপীর গ্রামে। তারাগঞ্জে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রচারণা জমে উঠেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় শাহিনুরের গানও ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শাহিনুর ঢোল নিয়ে যেখানে বসেন, সেখানেই গান শোনার জন্য জড়ো হন ভোটাররা। এভাবে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আয় করছেন শাহিনুর।
গত মঙ্গলবার দুপুরে শাহিনুর ইসলামকে তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী বাজারের পাশে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গানে গানে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে দেখা যায়। ওই সময় তিনি ইকরচালী ইউনিয়নের জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী মোবারক হোসেনের পক্ষে ঢোলের তালে গান গেয়ে লাঙল প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছিলেন। ‘ইকরচালীবাসী কয়, লাঙল মার্কার হবে জয়। সবায় মিলি বাঁধম জোট, লাঙল মার্কায় দিম ভোট’।
ওই দিন শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘এখন কথা কওয়ার সময় নাই। লাঙল মার্কার প্রার্থীর পক্ষে দুই ঘণ্টা গান কওয়ার জন্যে মুই টাকা নিছুং। আজ জাতীয় পার্টির প্রার্থীর গান কওয়া শেষ হইলে মুই নৌকা মার্কার প্রার্থীর গান কইম।’
শাহিনুর ইসলাম বলেন, চার ভাইবোনের মধ্য তিনি সবার ছোট। জন্ম থেকেই বাঁ চোখে কম দেখেন। বাবার অভাবের সংসার। তাই লেখাপড়া শিখতে পারেননি তিনি। চোখে কম দেখেন বলে তেমন কাজকর্মও করতে পারেন না। পাগলাপীর গ্রামে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন হাটবাজারে ঘুরে গান করে যা আয় হয়, তা বাবা-মায়ের হাতে দেন তিনি।
জাপার প্রার্থী মোবারক হোসেন বলেন, শাহিনুরের গান সবার পছন্দ। এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা আছে। তাঁকে দেখলেই লোকজন জড়ো হন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইদ্রিস উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি, শাহিনুর গান করেও আমার প্রচারণা চালাচ্ছেন।’