মৌলভীবাজার পৌরসভার বিভিন্ন সরু রাস্তা প্রশস্ত করতে স্বেচ্ছায় জমি ছেড়ে দিচ্ছেন মালিকেরা। কোথাও মালিকেরাই বাসার সীমানাপ্রাচীর ভেঙে রাস্তার জায়গা দিচ্ছেন। কোথাও পৌর কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করছেন। এর ফলে রাস্তাগুলো বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ প্রশস্ত হচ্ছে।
গত শনিবার কাশীনাথ সড়কে দেখা যায়, একটি বাসার মালিক সৌমিত্র দেব নিজেই হাতুড়ি দিয়ে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে রাস্তা প্রশস্ত করার কাজ করছেন। তাঁর সঙ্গে শ্রমিকেরাও কাজ করছেন। রাস্তার জায়গায় যেসব বাসার সীমানাপ্রাচীর ভাঙা পড়েছে সেগুলোর প্রায় সব বাসার মালিকই শ্রমিকদের কাজে সহযোগিতা করছেন। পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল হোসাইন খান, কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরীসহ অনেকেই সেখানে আছেন।
বাসার মালিক সৌমিত্র দেব বলেন, ‘রাস্তা প্রশস্ত করতে পৌর মেয়র সাহেবের উদ্যোগ খুব ভালো লেগেছে। কোনো জোর খাটানো হচ্ছে না। তাই জনস্বার্থে আমার বাসার সীমানাপ্রাচীর নিজেই ভেঙে দিয়েছি। রাস্তা বড় হলে সবার উপকার হবে।’
পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, রাস্তা প্রশস্ত করার কাজ শুধু কাশীনাথ সড়কেই হচ্ছে না। ধারাবাহিকভাবে শহরের বিভিন্ন পাড়ার সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে। প্রশস্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গায় কারও বাসার সীমানাপ্রাচীর পড়েছে। কোথাও কবরস্থান পড়েছে। তাঁদের অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে জায়গা দিচ্ছেন। অনেকের সঙ্গে মেয়র বৈঠক করে সম্মতি নিয়েছেন। এ পর্যন্ত শহরের শাহ মোস্তফা কলেজ, ধরকাপন-মোস্তফাপুর, ধরকাপন-শেখেরগাঁও ও ধরকাপন-গোবিন্দশ্রী স্কুল সড়কের রাস্তা প্রশস্ত করার কাজ হয়েছে। এগুলোর একেকটি সড়কে ৩ থেকে ১৩টি পর্যন্ত বাসার সীমানাপ্রাচীর ভাঙতে হয়েছে। এর ফলে যেসব রাস্তা ১০ থেকে ১২ ফুট প্রশস্ত ছিল এখন সেগুলো ১৮ থেকে ২২ ফুট পর্যন্ত চওড়া হচ্ছে।
রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য কাশীনাথ সড়কের বাসিন্দা ও যুবলীগের জেলা কমিটির সভাপতি নাহিদ আহমদের বাসার সীমানাপ্রাচীরও ভাঙা পড়ছে। তিনি বলেন, ‘এত দিন এ রাস্তা সংকীর্ণ ছিল। এক সাথে দুটি গাড়ি পার হতে পারত না। বর্তমান মেয়র সবার সাথে কথা বলে রাস্তা প্রশস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা যার যার জায়গা থেকে সহযোগিতা করছি। রাস্তা প্রশস্ত হলে এলাকার মানুষেরই সুবিধা বাড়বে। যাতায়াত সহজ হবে।’
এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শহরের প্রধান রাস্তাগুলো এমনিতেই প্রশস্ত। এত দিন কিছু রাস্তা সংকীর্ণ ছিল। এগুলো বড় করার কাজে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, স্থানীয় লোকজন যে যেভাবে পারছেন সহযোগিতা করছেন।’