রুস্তম আলী ফরাজী 'ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা'

পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজীর বিরুদ্ধে জোট সরকারের সময়ে প্রভাব খাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দুপুরে মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা এ অভিযোগ করেন।
মুক্তিযোদ্ধারা সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজীর নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং সরকারের কাছ থেকে পাওয়া সব সুযোগ-সুবিধা ও ভাতার টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।
মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা শাহ আলম সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, ১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক গণপরিষদ সদস্য সওগাতুল আলমের নেতৃত্বে মঠবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হন। স্থানীয় কে এম লতিফ ইনস্টিটিউশন মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের সময় সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী কোনো প্রশিক্ষণ নেননি এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর রুস্তম আলী ফরাজী সাংসদ থাকার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। সম্প্রতি সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাবি করেন, তিনি ’৭১-এ স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, ’৬৯-এ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও মঠবাড়িয়া ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সাংসদের এই দাবি মিথ্যা। ১৯৬৫ সালে মুজিবুল হক খান ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৬৯ সালের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এমাদুল হক খান।
সংবাদ সম্মেলনে সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজীকে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে দৈনিক সকালের খবর-এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আজমল হক, যুবলীগের নেতা নুরুল আমিন ও বশির হোসেনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলা এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১০ নেতার বিরুদ্ধে সাংসদকে হত্যাচেষ্টার মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু লোক অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
গত ৩ জুন মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবাদ সম্মেলনে সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজীকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অভিহিত করা হয়।