রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের আচরণ লজ্জার

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। মিয়ানমারের আচরণ সারা বিশ্বের বৌদ্ধদের জন্য চরম লজ্জার। বৌদ্ধ রাষ্ট্রগুলোর উচিত মিয়ানমারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কথা বলা। গতকাল রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দুটি সংগঠনের নেতারা।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা’ ও ‘বৌদ্ধ বিহার সংঘ সম্পত্তি সংরক্ষণ কমিটি’র উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংগঠন দুটির নেতারা রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য ভাষা বিভাগের শিক্ষক ও বৌদ্ধ বিহার সংঘ সম্পত্তি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি জিনবোধি ভিক্ষু। এ সময় বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার মহাসচিব এস লোকজিৎ থেরোসহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জিনবোধি ভিক্ষু বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু তাই বলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন মানা যায় না। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারে না। বিশেষ করে জাতিসংঘকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আরও সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করতে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সংগঠনগুলো জোর দাবি জানাচ্ছে। মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলা এবং প্রতিবাদ জানানো শুধু বাংলাদেশের বা মুসলমানদের দায়িত্ব নয়, এটা বিশ্বনেতৃত্ব ও বিশ্ববাসীর নৈতিক দায়িত্ব।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। বিষয়টি ধর্মের নয়, মানবতার। বিষয়টি ধর্মের হলে আমরা বলব, গৌতম বুদ্ধ বলেছেন, “জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।” আর জগতের সকল প্রাণীর মধ্যে নির্যাতিত রোহিঙ্গারাও আছে। মিয়ানমার বুদ্ধের বাণী মান্য করলে কিছুতেই এমন মানবতাবিরোধী কাজে জড়িত হতে পারত না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গা নিপীড়ন করতে গিয়ে মানবতাবিরোধী যত অপরাধ হচ্ছে, এর সবই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মিয়ানমার স্বীকার করুক আর না করুক, রোহিঙ্গারা ঐতিহাসিকভাবে সে দেশের নাগরিক। দমন-নিপীড়নের কারণে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। মিয়ানমার এ বিষয়টি অস্বীকার করছে। মিয়ানমার এখনো বলছে, রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করা হচ্ছে না।