র‍্যাগ ডে-র পরিবর্তে ‘শিক্ষা সমাপনী উৎসব’ করতে পারবেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

শিক্ষাজীবন শেষে র‍্যাগ ডে-র মাধ্যমে অনেক দিন ধরেই ক্যাম্পাসে তা উদযাপন করে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে র‍্যাগ ডে উদযাপনকে 'আরও সুন্দর ও নান্দনিক' করতে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি করেছিল। সেই কমিটির নীতিমালা বুধবার (২৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, র‍্যাগ ডের নতুন নাম হবে ‘শিক্ষা সমাপনী উৎসব’। এই উৎসব উদযাপনে শিক্ষার্থীদের মানতে হবে একগুচ্ছ নিয়ম।

বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিন্ডিকেট সভা হয়। সভায় উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সভাপতিত্ব করেন। ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল র‌্যাগ ডে-কে ‘অমানবিক, নিষ্ঠুর ও নীতিবহির্ভূত উৎসব’ আখ্যা দিয়ে তা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পরদিন উপাচার্য জানান, র‌্যাগ ডে নিষিদ্ধ করা হয়নি। ‘অসাবধানতা ও ভুলবশত’ নিষিদ্ধ করার কথাটি গণমাধ্যমে গিয়েছিল। শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানকে ‘আরও সুন্দর, নান্দনিক ও ভালো’ করতে নীতিমালা তৈরির জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে।

নীতিমালা প্রণয়নে গঠিত ওই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ আর প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী ছিলেন সদস্যসচিব। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, জীববিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিনকে কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়। ওই কমিটির প্রণীত নীতিমালা বুধবার অনুমোদন দেয় সিন্ডিকেট।

একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এখন থেকে একদিনের র‍্যাগ ডে উদযাপন শিক্ষা সমাপনী উৎসব নামে পরিচিত হবে। এই উৎসব উদযাপনে শিক্ষার্থীদের কিছু নিয়ম মানতে হবে। এগুলো হচ্ছে-সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান বা ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং ছাত্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সভা করে অনুষ্ঠানের সূচি চূড়ান্ত করবেন; নিজ নিজ বিভাগ-ইনস্টিটিউটের ভবন চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা যাবে; ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সমবেত হয়ে পথচারীদের চলাচল স্বাভাবিক রেখে শোভাযাত্রা করা যাবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালে উচ্চ স্বরে বাদ্য-বাজনা পরিহার করতে হবে; বিভাগ-ইনস্টিটিউটের সংশ্লিষ্টতায় দুপুরে কিংবা রাতে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা যাবে; শিক্ষা সমাপনী উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রাত দশটার মধ্যে শেষ করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

এদিকে এত দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগেই র‍্যাগ ডে উদযাপন করতেন। আয়োজনের সঙ্গে বিভাগ-ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের তেমন সংশ্লিষ্টতা ছিল না৷ সাধারণত ঘোড়ার গাড়িতে করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজানো, রং ছোড়াছুড়ি, সবাই মিলে খাবার খাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে র‍্যাগ ডে-তে আনন্দ-উচ্ছ্বাস করতেন। এই সবকিছু শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে নিজেদের মতো করেই করতেন। কিন্তু নতুন নিয়মে এই উদযাপনের ধরনে পরিবর্তন আনতে হবে শিক্ষার্থীদের।

আরও পড়ুন