শমশেরনগর থেকে যাত্রায় দুই ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর স্টেশন থেকে দুটি আন্তনগর ট্রেনে কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনী স্টেশনে যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকলেও যাত্রীদের জন্য কোনো আসন বরাদ্দ নেই। এ কারণে এই চার স্টেশনের যাত্রীদের ওই দুটি ট্রেনে ভ্রমণের সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে তাঁরা এভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এরপরও রেল কর্তৃপক্ষ এ সমস্যা সমাধানে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

শমশেরনগর রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথের আন্তনগর পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে শমশেরনগর থেকে কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনী স্টেশনের যাত্রীরা চলাচল করে। কিন্তু আসন বরাদ্দ না থাকায় এই চার স্টেশনের যাত্রীদের বেশি টাকা দিয়ে চট্টগ্রামের টিকিট কিনে আসনে বসে অথবা আসনবিহীন টিকিট কিনে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে হচ্ছে।

১৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় শমশেরনগর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিটের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনী স্টেশনের যাত্রীরা টিকিট চেয়েও পাচ্ছেন না।

কুমিল্লার যাত্রী শমশেরনগর ইসলামী মিশনের কর্মচারী খাইরুল ইসলাম ও লাকসামের যাত্রী শিক্ষক খলিলুর রহমান অভিযোগ করেন, প্রায় ১৩ বছর আগে কুমিল্লা এলাকায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনাকবলিত হওয়ার পর ট্রেনের বগি কমিয়ে দেওয়ায় এই তিনটি স্টেশনের আসন বাতিল করা হয়েছিল বলে তাঁরা জেনেছেন। দুর্ঘটনার কিছুদিন পর আন্তনগর পাহাড়িকা ট্রেনে নতুন বগি সংযুক্ত হলেও আর শমশেরনগর থেকে কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনী স্টেশনের জন্য আসন বরাদ্দ করেনি রেল কর্তৃপক্ষ। যাত্রীরা আরও জানান, শমশেরনগর থেকে শোভন শ্রেণির ভাড়া কুমিল্লা ১৪৫, লাকসাম ১৬৫ ও ফেনী ১৯৫ টাকা। কিন্তু যাত্রীদের আসন নেওয়ার জন্য সরাসরি চট্টগ্রামের ভাড়া ২৬০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হয়।

শমশেরনগরের স্টেশনমাস্টার কবির আহমদ বলেন, এখানে যাঁরা আগে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তাঁরা টানা ১৩ বছর ধরে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে মৌখিক ও লিখিতভাবে আন্তনগর পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসে কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনীর জন্য আসন বরাদ্দের আবেদন করেছেন। তারপরও আসন বরাদ্দ হয়নি। স্টেশনমাস্টার আরও বলেন, এই পথে চলাচলকারী শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ ও সিলেট স্টেশন থেকে কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনীর আসন বরাদ্দ থাকলেও শুধু শমশেরনগর স্টেশনের জন্য বরাদ্দ নেই।

এ বিষয়ে রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ঢাকা) মাহবুবুর রহমান বলেন, আসন বরাদ্দ হয় বাণিজ্যিক বিভাগ থেকে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আসন বরাদ্দের জন্য বলা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে শিগগিরই শমশেরনগর থেকে উদয়ন ও পাহাড়িকা ট্রেনে কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনী স্টেশনের যাত্রীদের জন্য আসন বরাদ্দ হয়ে যাবে।

সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক কাজী শহিদুর রহমান বলেন, সিলেট-চট্টগ্রাম ও সিলেট-ঢাকা রেলপথের মাঝে শমশেরনগর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এখান থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি রাজস্ব আয় হয়। এখানে যাত্রীসংখ্যা অনেক বেশি। তাই দ্রুত শমশেরনগর থেকে আন্তনগর পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসে কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনীর জন্য আসন বরাদ্দ করা উচিত।