শালগম কিন্তু ফেলনা নয়

শালগম
শালগম

গন্ধের কারণে অনেকে শালগমের কথা শুনলেই নাক কুঁচকান। সালফারের উপস্থিতির কারণেই এতে এমন গন্ধ। মজার ব্যাপার হলো, সালফার কিন্তু ব্রঙ্কাইটিস জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। একসময় ব্রঙ্কাইটিস হলে লোকে নিরাময়ের জন্য দুধ দিয়ে রান্না করে শালগম খেতেন।
শালগম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি সবজি। শীতকালীন এই সবজিতে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও খাদ্য-আঁশ আছে। এর পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়, যা অত্যন্ত পুষ্টিকর।
প্রতি ১০০ গ্রাম শালগমে আছে ১ দশমিক ৪ গ্রাম আমিষ, ৩ দশমিক ৮ গ্রাম শর্করা, শূন্য দশমিক ৯গ্রাম আঁশ, শূন্য দশমিক ২ গ্রাম চর্বি, ২১ কিলোক্যালরি শক্তি, ২৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি।
শরীরে অগ্ন্যাশয় যদি ঠিকঠাকমতো ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীরে ইনসুলিন যদি কাজ না করে, তাহলে ডায়াবেটিস রোগ হয়। এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। অধিক তৃষ্ণার্ত অনুভব করে এবং বারবার মুখ শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত ব্যক্তিরা দুর্বলতা, সার্বক্ষণিক ক্ষুধা, স্বল্প সময়ে দেহের ওজন হ্রাস, চোখে ঝাপসা দেখাসহ নানা সমস্যায় ভোগেন। এ ধরনের রোগীদের জন্য শালগম উপকারী। ওষুধের পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি ও শালগম খেলে দেশের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ছাড়া শালগম দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি হৃদ্যন্ত্রের জন্য খুব উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন-সি দেহের কোষের ক্ষয় রোধ করে। শালগমের পাতায় গ্লুকোসিনোলেট নামক উপকারী উপাদান রয়েছে। যার কারণে এটি ক্যানসার প্রতিরোধ করে ও রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। শালগমে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে। শালগম কফ, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমা নিরাময়ে সাহায্য করে। এটি রক্ত পরিশোধিত করে এবং রক্তকণিকা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি দেহের রোগ সংক্রমণেও বাধা দেয়। এটি ক্ষুধামান্দ্য দূর করে। শালগমের রস রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এটি ব্রণসহ ত্বকের অন্যান্য সমস্যা নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

লেখক: প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম

ডায়াবেটিস জেনারেল হাসপাতাল