শিক্ষককে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী, ১৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী, ১৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে আছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম এনামুল জহির। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দায়িত্বরত একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে এনামুল জহিরের ধাক্কা লাগে। এ সময় ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক তাঁকে অপমানজনক কথা বললেন। এনামুল জহির তাঁকে ‘ননসেন্স’ বলে মন্তব্য করেন। একপর্যায়ে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক ফোন করলে আরও কয়েকজন ইন্টার্ন এসে এনামুল জহিরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন। বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র কলা ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ করে প্রধান ফটকে জড়ো হন। পরে তাঁরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এতে প্রধান ফটক থেকে কাটাখালী পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন শিক্ষক এনামুল জহির। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন শিক্ষক এনামুল জহির। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁদের শিক্ষককে তাঁরা কখনোই এভাবে দেখতে চান না। রাস্তায় কুপিয়ে শিক্ষককে মারা হবে, হাসপাতালে গেলে মারধর করা হবে, এগুলো তাঁরা মেনে নেবেন না। এ সময় শিক্ষার্থীরা জড়িত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যে শিক্ষক আহত হয়েছেন, তিনি তোমাদের শিক্ষক কিন্তু আমাদের সহকর্মী। আমাদেরও খারাপ লাগছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচারক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আংশিক সত্য। ধাক্কা লাগার পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা খবর পেয়ে আসেন। তাঁরা ওই শিক্ষককে ‘সরি’ বলতে বললে তিনি উল্টো তাঁদের সঙ্গে বাজে ভাষা ব্যবহার করেছেন।

এ ব্যাপারে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করায় ছাত্রদের খারাপ লেগেছে। তাঁরা আন্দোলন করছেন। এ কারণে অনেক গাড়ি আটকা পড়েছে। গাড়িগুলো বিকল্প পথে পার করার ব্যবস্থা করার হচ্ছে। ওঁদের বুঝিয়ে অবরোধ প্রত্যাহারের চেষ্টা করা হচ্ছে।