শেষ দেখা করল দুই পরিবার

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে শেষ দেখা করতে গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা l প্রথম আলো
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে শেষ দেখা করতে গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা l প্রথম আলো

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের পরিবারের সদস্যরা তাঁদের সঙ্গে শেষ দেখা করলেন গতকাল রাতে। কারা কর্তৃপক্ষ গতকাল রাতে তাঁদের ডেকে পাঠায়।
সাকা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে বেরোনোর পর তাঁর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, তাঁর বাবা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করেননি বলে জানালেন। সাকা চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা বলেছেন, সরকার নির্বাচনে আমাকে (সাকা) হারাতে পারেনি। তাই আমার জান নিয়ে নিচ্ছে।’
রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁর বাবা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন কি না, জানতে চাইলে হুম্মাম বলেন, ‘আমার বাবা আমাকে বলেছেন, এ সরকারের আমলে কত কাগজ বের হচ্ছে। এ রকম বাজে কথা (প্রাণভিক্ষা) কে বলেছে?’

আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের সঙ্গে শেষ দেখা করতে গতকাল রাত ১১টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান তাঁর স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও পরিবারের সদস্যরা l প্রথম আলো
আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের সঙ্গে শেষ দেখা করতে গতকাল রাত ১১টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান তাঁর স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও পরিবারের সদস্যরা l প্রথম আলো

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ভাই জামাল উদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাই একটি কথাই বলেছেন, আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর।’
সাকার স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বাকরুদ্ধ। আমি কোনো কথা বলতে পারব না। যা বলবে আমার ছেলেরাই বলবে।’
রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্তৃপক্ষ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা) ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ডেকে পাঠায়। রাত নয়টার পর সাকার স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী, দুই ছেলে, ছেলেদের স্ত্রীসহ পরিবারের অন্তত ১৮ জন সদস্য কারাগারে ঢোকেন। রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে তাঁরা বেরিয়ে আসেন। এ সময় সবার চোখ ছিল অশ্রুসিক্ত। ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাবা ন্যায়বিচার পাননি।’
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের পরিবারের ২৭ সদস্য রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে যান। এর কিছুক্ষণ পর স্বজনেরা মুজাহিদের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে ভেতরে ঢোকেন। মুজাহিদের স্ত্রী তামান্না-ই-জাহান, ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর ১১জন কারাগারে ঢোকেন।
রাত সোয়া ১২টার দিকে বাবার সঙ্গে দেখা করে কারাগার থেকে বেরোনোর পর মুজাহিদের ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর বাবা প্রাণভিক্ষা চাননি। এরা আগে মিথ্যাচার করেছে, এখনো করছে।