শেষ হলো ‘রাইজ অ্যাবভ অল’

দর্শকদের ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ওয়ালটন প্রেজেন্টস ‘রাইজ অ্যাবভ অল’ পাওয়ার্ড বাই ফ্রুটিকা এবং সহযোগিতায় আরটিভি। ডন সামদানি ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড কনসালটেন্সির আয়োজনে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।

এবারের আসরে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য রুবানা হক, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান, ওয়ালটনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ, আকিজ ভেনচার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আলমগীর, ওরাকলের কান্ট্রি ডিরেক্টর রুবাবা দৌলা, আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান, নয়েজ জিনস এবং লাভজেনের সহপ্রতিষ্ঠাতা মনীষ চৌহান ও অনুরাগ চৌহান, টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক, অভিনেতা সিয়াম আহমেদ এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইফতেখার রাফসান ও রাবা খান।

দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন ডন সামদানি ফ্যাসিলিটেশন অ্যান্ড কনসালটেন্সির চিফ ইন্সপিরেশন অফিসার গোলাম সামদানি ডন। দুই হাজারের অধিক চাকরিজীবী, তরুণ উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থী এতে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তাঁর বক্তব্যে তরুণদের অনুপ্রেরণার ক্ষেত্রে রাইজ অ্যাবভ অলের ভূমিকার প্রশংসা করেন। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিজেদের দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার তাগিদ দেন।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান তাঁর বক্তব্যে ব্যক্তিজীবনে লক্ষ্য, কর্মস্পৃহা ও কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে সবকিছুর খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আপনার যদি শেখার ইচ্ছা না থাকে, তবে আপনার জায়গাটা অন্য কেউ দখল করবে।’

আকিজ ভেনচার্সের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আলমগীর করপোরেট জগতে তাঁর দীর্ঘ যাত্রা ও অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।

টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক ছাত্রজীবন থেকেই পার্টটাইম জব করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেছেন। এ ছাড়া তিনি লিংকডইনের গুরুত্ব ও ইফেক্টিভ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে ধারণা দেন। তিনি বলেন, ‘একটা স্কিল থাকলে সেটা দিয়েই আমরা অনেক বড় কাজ করতে পারি। তুমি যে কাজই করো, সেখানে নিজেকে একটা ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করো।’

জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইফতেখার রাফসান তাঁর ক্যারিয়ারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা শেয়ার করেন। তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জীবনের আসল চ্যালেঞ্জগুলো কমফোর্ট জোনের বাইরে থাকে। সফল হতে চাইলে নিজের অবস্থান নিজেকেই তৈরি করতে হবে।’

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য রুবানা হক তাঁর বক্তব্যে সমষ্টিগত উন্নতির প্রতি জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘স্বপ্ন দেখতে হবে সমষ্টিগত। শুধু নিজের উন্নতির দিকে নজর না দিয়ে সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।’

নয়েজ জিনস ও লাভজেনের সহপ্রতিষ্ঠাতা মানীষ চৌহান শেখার অভ্যাস গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। পুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি প্রায়োগিক জ্ঞানের চর্চায় তরুণদের আহ্বান জানান তিনি।

জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ তাঁর অভিনেতা হয়ে ওঠার গল্প তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘নিজের শতভাগ দিয়ে হয়তো আপনি অনেক কিছু অর্জন করতে পারবেন, তবুও কিছু মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন না এবং সেটা মেনে নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’

বক্তব্যে ওয়ালটনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ রাইজ অ্যাবভ অল কীভাবে করপোরেট লিডার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ তৈরি করেছে, সে সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করলে তাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া যায়। সাফল্যের কোনো বাঁধাধরা পথ নেই। যে কাজ আপনাকে মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য দেয়, সেটাই বেছে নিলে সাফল্য আসবে।’

অনুষ্ঠানের শেষে আয়োজকেরা এই মহামারি-পরবর্তী কঠিন সময়ে অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য অতিথি ও দর্শকদের ধন্যবাদ জানান এবং আগামী বছরে আরও বড় আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। করপোরেট ও মিডিয়া জগতের সফল ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত বার্ষিক এই ইভেন্ট অংশগ্রহণকারীদের আত্মোন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করে, যা পরবর্তীকালে তাঁদের ব্যক্তিগত ও কর্মজীবন—দুই জায়গাতেই কাজে লাগবে।