সংক্রমণ ঠেকাতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে মূল অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ঢাকা, ২৮ মার্চ
ছবি: পিআইডি

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশবাসীর প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে নতুন করে করোনা সংক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধির বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যেহেতু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবার দেখা গেছে ও এই ভাইরাসটাও আবার ভিন্ন ভিন্নভাবে এসেছে। তাই আমাদের ঠিক আগের মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে। এই প্রাদুর্ভাব কত দিন থাকবে, আমরা জানি না। তার জন্য আমাদের প্রস্তুতিটা থাকতে হবে।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আজ রোববার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করব, মাস্ক ছাড়া কেউ যাতে বাইরে না যায়, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে এবং প্রত্যেকটি সভা বা সিম্পোজিয়াম, সেমিনার বা প্রশিক্ষণ কর্মশালা সামাজিক দূরত্ব মেনে করতে হবে। যত দূর সম্ভব খোলা জায়গায় কর্মসূচি করতে হবে। ঘরের মধ্যে করলে করোনার প্রাদুর্ভাব আরও বেশি দেখা দেয়।’ এ সময় করোনার টিকা প্রদানও চলবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্কুল-কলেজগুলো খুলে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন হঠাৎ করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়াতে এখন নয়, রোজার ঈদের পর স্কুল-কলেজ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেব। আর এই ফাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসবের মেরামত লাগবে, সেসব কাজ সরকার করে দেবে।’ ‘পাশাপাশি দেশের উন্নয়নকাজ চলতে থাকবে, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে, সে প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। সব অনুষ্ঠান সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে।

পাশাপাশি গত বছর মানুষের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছেন, তেমনি সামনেও মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষ যেন কষ্টে না থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যা করার করব। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেও মানুষের পাশে থাকতে হবে। যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের ওপর অনেক দায়িত্ব। মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণ, মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ ও নানা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের নিহতদেরসহ সব গণ-আন্দোলনে আত্মাহুতিদানকারীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সবাই।

‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা,’ এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পাঁচ দেশের প্রধান এসেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ২৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে শুভেচ্ছাবার্তা আমরা পেয়েছি। এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। এটাই আমাদের সার্থকতা।’ তিনি বলেন, মুজিব বর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশে একটি মানুষও আর গৃহহীন থাকবে না। তাঁর সরকার সবাইকে ঘর করে দেবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যেগুলো বাকি আছে, সেগুলোও করে দেব। শতভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে শতভাগ গৃহকে আমরা আলোকিত করব।’