সংখ্যালঘুদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে মোটাদাগে যেসব প্রতিশ্রুতি ছিল, তার মধ্যে রয়েছে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ, সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন তৈরি। কিন্তু এসব পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে গণ–অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ইসকন ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। গত ২৩ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগেফাইল ছবি

বগুড়ার শেরপুরের বাসিন্দা পরিতোষ সাহার (ছদ্মনাম) অর্পিত সম্পত্তির মামলা আট বছর ধরে ঝুলে আছে। জেলা সদর থেকে শেরপুরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। যদি একবার মামলার শুনানির তারিখ পড়ে, তবে আদালতে আসা-যাওয়া করতেই একটি দিন পার হয়ে যায় এ ব্যবসায়ীর। পরিতোষ বলছিলেন, ‘নতুন তারিখ দেওয়া ছাড়া আর কোনো উন্নতি হয়নি। আসা-যাওয়ার ভাড়া, উকিলের ফিসহ নানা খরচ হয়। এ মামলা কবে সুরাহা হবে, তার কোনো দিশা পাই না।’

সর্বশেষ ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের নিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল, অর্পিত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু প্রায় তিন বছর হতে চলল। অর্পিত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে গেছে।

অর্পিত সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রায় ১৩ বছর ধরে কাজ করছে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন নাগরিক সমন্বয় সেল। তাদের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯ বছরে ২১ জেলার অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালে আসা আবেদনের ১০ শতাংশ সম্পত্তিও অবমুক্ত হয়নি।

সম্পত্তি অবমুক্ত করার এই চিত্র অনেকটাই হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন সমন্বয় সেলের সদস্যসচিব শামসুল হুদা।

শুধু অর্পিত সম্পত্তি নয়, আওয়ামী লীগের ইশতেহারে মোটাদাগে যেসব প্রতিশ্রুতি ছিল, তার মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন তৈরি, ভূমি কমিশনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, বৈষম্যমূলক সব ধরনের আইন ও অন্যান্য ব্যবস্থার অবসান, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের স্বীকৃতি এবং তাদের ভাষা, সাহিত্য ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষা।

এখন আইনটির একটু সংশোধনী লাগবে। এ নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।

তিন বছর আগে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো এখন মূল্যায়ন করছেন সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর নেতারা। সম্প্রতি দুর্গাপূজার সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের মন্দির-মণ্ডপ, বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, আগুন ও লুটপাটের ঘটনায় উদ্বিগ্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় কাজ করেন, নাগরিক সমাজের এমন নেতারা মনে করেন, ইশতেহারে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা আইন তৈরির প্রতিশ্রুতি ছিল। এটি করা হলে বা বাস্তবায়িত হলে এখনকার সহিংসতা কিছুটা হলেও রোধ করা যেত। ইশতেহারে দেওয়া অন্য প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের চিত্রও আশানুরূপ নয়।

অবশ্য নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ধীরগতির কথা স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের একাধিক মন্ত্রী ও নেতাও। তাঁরা বলছেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের গতি ধীর।

অর্পিত সম্পত্তি আইন, সুরহা হলো না আজও

সংখ্যালঘুদের মধ্যে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি হিন্দুদের একটি বড় সমস্যা শত্রু বা অর্পিত সম্পত্তি আইন। পাকিস্তানি আমলে ১৯৬৫ সালে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের লক্ষ্য করে এই আইন হয়। এর ফলে সংখ্যালঘুরা সম্পত্তির কর দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় এবং সম্পত্তি কেনাবেচাও বন্ধ হয়।

২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন পাস হয়। যাদের সম্পত্তি, তাদের হাতে ফিরিয়ে দিতেই এই আইন। কিন্তু পরে বিষয়টি এগোয়নি। ২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। সরকার ‘ক’ ও ‘খ’ তালিকাভুক্ত করে অর্পিত সম্পত্তির গেজেট প্রকাশ করে। একপর্যায়ে ‘খ’ তালিকা বাতিল করা হয়। এর ফলে এই তালিকায় থাকা সম্পত্তির ওপর সংখ্যালঘুদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।

সরকারের হাতে থাকা সম্পত্তি ‘ক’ তালিকাভুক্ত। এসব সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য ২০১১ সালে ৬১ জেলায় অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।

২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ২১ জেলার অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল থেকে আবেদন নিষ্পত্তির তথ্য সংগ্রহ করেছে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন নাগরিক সেল। এতে দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালে আবেদনের প্রায় ৪১ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। আর আপিল ট্রাইব্যুনালে আবেদনের প্রায় ৫৫ শতাংশ নিষ্পত্তি হয়েছে। কিন্তু আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকের ৪৫ দিনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ভুক্তভোগীদের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ আছে। যদিও ২০১৮ সালে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে, কোনো অজুহাত না দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের সম্পত্তি ফেরত দিতে হবে।

ভূমি অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা এএলআরডির সহকারী সমন্বয়কারী ও নাগরিক সমন্বয় সেলের সদস্য রফিক আহমেদ সিরাজী প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনালে আবেদন নিষ্পত্তির হার ভালো। কিন্তু সম্পত্তি অবমুক্ত হওয়ার হার ১০ শতাংশের বেশি নয়।

অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্ত করার প্রক্রিয়া দেখভালের দায়িত্ব ভূমি মন্ত্রণালয়ের। অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্ত করার গতি শ্লথ হলেও শাসক দলের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হবে বলে জানান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন আইনটির একটু সংশোধনী লাগবে। এ নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।’

যদিও অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১ সালে হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১৩ দফায় সংশোধন ও বিধিমালা তৈরি হয়েছে।

সুরক্ষা আইন নিয়ে প্রতিশ্রুতি

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, গত ৯ বছরের মধ্যে ২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার হয়েছে হিন্দু জনগোষ্ঠী। ওই বছরের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল। সে সময় ৭৬১টি হিন্দু বাড়িঘর, ১৯৩টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ২৪৭টি মন্দির-মণ্ডপে হামলা হয়েছিল। নিহত হন একজন।

এর আগে ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর ব্যাপক সহিংসতা হয়। এ সময় হিন্দু জনগোষ্ঠীও আক্রান্ত হয়। এসব পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই কমিশন বা আইন হয়নি।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার মধ্যে ২৪ অক্টোবর একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এক ওয়েবিনারে সুরক্ষা আইন করার দাবি ওঠে। সেখান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন খুব শিগগির তৈরি করার অঙ্গীকার করছি।’ যদিও পরে আইনমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের কথা বলি নাই। আমি বলেছি সাক্ষী সুরক্ষা আইন নিয়ে। সংখ্যালঘু কমিশনের বিষয়ে বলেছি। এ ব্যাপারে যে দাবি উঠেছে, সেটা নীতিনির্ধারণী ব্যাপার।’

এত দিন পরও কমিশন গঠন হলো না কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রায় দুই বছর হলো করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। কমিশন গঠনের চেষ্টা চলছে।

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, পার্বত্য চট্টগ্রাম

দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি অংশের বসবাস পার্বত্য তিন জেলায়। দুই দশকের বেশি সময় সেখানে সশস্ত্র লড়াইয়ের পর ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি হয়। তখন সরকারে ছিল আওয়ামী লীগ। সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনকারী ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদে দেওয়া এক ভাষণে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, পার্বত্য চুক্তির মোট ৭২টি ধারা রয়েছে। চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ইতিমধ্যে ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণ, ১৫টি ধারা আংশিক এবং ৯টি ধারার বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

তবে এ চুক্তির স্বাক্ষরকারী ও জেএসএস চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা দীর্ঘ সময় থেকেই তাঁর হতাশার কথা বলে আসছেন। চলতি বছরের আগস্ট মাসে এক সভায় লিখিত ভাষণে সন্তু লারমা বলেন, ‘সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। গত ২৩ বছরেও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। বহুবার দাবি তুলে ধরা সত্ত্বেও চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সময়সূচিভিত্তিক কার্যকর পরিকল্পনা (রোডম্যাপ) ঘোষণা করা হয়নি।’

পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সমস্যা ভূমি। এ সমস্যা সমাধানে একটি কমিশন গঠিত হলেও তার অগ্রগতি নিয়ে হতাশা আছে জেএসএসসহ পাহাড়িদের অনেকেরই। কমিশনের কাজের শ্লথ গতির কথা স্বীকার করেন মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোভিডের কারণে গতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে। চুক্তির বাস্তবায়নের গতিও কিছুটা কমেছে। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে জেএসএসের অভিযোগ ঠিক নয়।’

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নে চলতি বছরের আগস্ট মাসে সামাজিক বনায়নের নামে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস, খাসি ও গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর হামলা হয়। সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন খাসিপুঞ্জিতে চলতি বছর ১২ বার খাসিপুঞ্জির মানুষ হামলার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যা বলা হয়েছিল, তা ছিল খুব আশাব্যঞ্জক। কিন্তু সেই আশা পূর্ণ হয়নি। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের অধিকার সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই বলেই আমাদের মনে হয়।’

নেতারা যা বলছেন

সম্প্রতি দুর্গাপূজার সময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিষয়টি শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও সমালোচনা হয়েছে। আগের সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হলে আজকে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না বলে অনেকে মনে করেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ভোলার লালমোহন, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয় ২০০১ সালের নির্বাচনের পর। সেই হামলার কী বিচার হয়েছে? ২০১২ সালে রামুর বৌদ্ধমন্দির, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জোর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। প্রথম এক-দুই মাস এ নিয়ে খুব তোড়জোড় চলে। কিন্তু পরে তা স্তিমিত হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে চিন্তাচেতনা বা ভাবনা, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের মন্ত্রিপরিষদ বা প্রশাসন কাজ করতে পারছে না।

যদিও শাসক দল আন্তরিক কিন্তু প্রশাসন নয়—এমন বক্তব্যে একমত নন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে নিপীড়ন হলো, তা ন্যক্কারজনক। এর দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। শাসক দল সুরক্ষা আইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেনি।

টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় বর্তমান শাসক দল আওয়ামী লীগ। জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটের বড় অংশ দলটির পক্ষে বলেই মনে করা হয়। তবে সংখ্যালঘুদের দেওয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে শাসক দল আন্তরিক নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর কথাবার্তায় সেই আস্থা সংকটে পড়ে। আইনমন্ত্রী সুরক্ষা আইনের কথা বলে সেটা অস্বীকার করলেন। এসব কথায় সরকারের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়।’ প্রবীণ এই আইনজীবীর মত হলো, ‘সংখ্যালঘুদের নিয়ে অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগের কথা আমাদের জানা নেই। সরকার সংখ্যালঘুদের সামনে লজেন্স ঝুলিয়ে রেখেছে।’