সংশোধনী ও প্রতিবাদ

গত মঙ্গল ও বুধবার প্রথম আলোতে ‘উপাচার্য-কথা’ শিরোনামে প্রকাশিত দুই পর্বের প্রতিবেদনের কিছু তথ্যের প্রতিবাদ করেছেন সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন উপাচার্য। এ ছাড়া প্রথম আলোর কয়েকজন সুহৃদ ও শুভাকাঙ্ক্ষী কিছু তথ্যবিভ্রাটের বিষয়ে ফেসবুক ও টেলিফোনে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
‘রাজনৈতিক রং দেখে উপাচার্য’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। এ প্রসঙ্গে আজাদ চৌধুরী জানান, তিনি উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে উপাচার্য হন। সিনেট নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়ার পর সরকার তাঁকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়। ইউজিসির চেয়ারম্যান হওয়ার আগেও তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদ ছেড়ে দেন। তাই দলীয় পরিচয়ের কারণে তিনি উপাচার্য বা ইউজিসির চেয়ারম্যান হননি।
একই শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রভাবশালী শিক্ষক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের বিপক্ষে অবস্থান নেন। এর মধ্যে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের নাম রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে ছাত্র, শিক্ষক ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তার অর্থ এই নয় যে উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে তাঁর খারাপ সম্পর্ক ছিল।
‘দলীয়করণ নিয়ে কোনো রাখঢাক নেই’ শীর্ষক প্রতিবেদনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম শামস-উল-হক ইউজিসির চেয়ারম্যান ছিলেন বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শামসুল হক ইউজিসির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। এ ছাড়া প্রতিবেদনে ১৯৯৭ সালে অধ্যাপক আবদুল খালেক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন দেন বলা হলেও, সময়টি ছিল ১৯৯৯।
‘১১ উপাচার্যের কেউই মেয়াদ শেষ করতে পারেননি’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য মুহাম্মদ কায়েস উদ্দিন সম্পর্কে বলা হয়, বিভিন্ন অভিযোগে আন্দোলন শুরু হলে তিনি পদত্যাগ করেন। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক আমানুর রহমান জানান, তিনি পদত্যাগ করেননি। তবে মেয়াদ পূরণ করতে না পারার কারণ ছিল অধ্যাপক কায়েস উদ্দিনকে সরকার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবেদনে উল্লেখিত অভিযোগগুলো সঠিক নয়।
‘উপাচার্যরা দোষ করলেও পার পেয়ে যান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে অধ্যাপক এরশাদুল বারীকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলা হলেও তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারের নাম ছাপা হয়েছে মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার।
একই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. অহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করতে পারেনি ইউজিসি কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো প্রতিবাদে দাবি করা হয়, উপাচার্য অহিদুজ্জমান ইউজিসির তদন্ত দলকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু ইউজিসিসহ বিভিন্ন জায়গায় যাঁরা বেনামী চিঠি দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চেয়েছিলেন, তাঁরাই উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এ জন্য তদন্ত দল ঢাকায় ফিরে যায় বলে প্রতিবাদে দাবি করা হয়।