সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র

সগিরা মোর্শেদ। ফাইল ছবি
সগিরা মোর্শেদ। ফাইল ছবি

প্রায় তিন দশক আগে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যার ঘটনায় মামলায় তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডির পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার এ কথা জানান।

পিআইবির লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত বছরের ১৭ আগস্ট এ মামলাটি তদন্ত শুরু করে পিবিআই। হাইকোর্টের নির্দেশে ৬ মাস তদন্ত চলাকালে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা হাইকোর্টে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। সগিরা মোর্শদকে মূলত তুচ্ছ পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আসামিরা। পরিকল্পনামাফিক তা বাস্তবায়নের জন্য ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়োগ দেওয়া হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তের কবলে পড়েন। একপর্যায়ে দৌড় দিলে তাঁকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সগিরা মোর্শেদ মারা যান। সেদিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তাঁর স্বামী সালাম চৌধুরী। প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুজনের কথা বললেও মিন্টু ওরফে মন্টু নামের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। নেওয়া হয় সাতজনের সাক্ষ্য। বাদীপক্ষের সাক্ষ্যে আসামি মন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজার নাম আসে। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২৩ মে বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট রুল দিয়ে অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করেন। পরের বছরের ২৭ আগস্ট অপর এক আদেশে হাইকোর্ট ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান। এতে থমকে যায় মামলার কার্যক্রম।

বিষয়টি নজরে এলে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৬ জুন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ মামলার অধিকতর তদন্ত আদেশে ইতিপূর্বে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে ওই মামলার অধিকতর তদন্ত শেষ করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

১৪ নভেম্বর পিবিআইয়ের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সগিরা মোর্শেদার ভাশুর, ভাশুরের স্ত্রী ও শ্যালক মিলে তাঁকে (সগিরা) হত্যার পরিকল্পনা করেন। তাঁরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে তাঁকে হত্যা করান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এটি কোনো ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল না।

সগিরা মোর্শেদা (৩৪) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ছিলেন।