সমাজ গঠনে যুবসমাজের কার্যকর অংশগ্রহণ

গত ২৩ আগস্ট ২০১৭, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘সমাজ গঠনে যুবসমাজের কার্যকর অংশগ্রহণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

সহযোগিতায়:

আলোচনায় সুপারিশ

* শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে যুবসমাজের জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করা প্রয়োজন

* কিশোর–কিশোরীদের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে

* জনমিতির সুবিধা পেতে হলে এমপিওভুক্ত স্কুলগুলোতে জরুরিভাবে কর্মমুখী শিক্ষা চালু করা প্রয়োজন

* শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিশোর–কিশোরীদের শারীরিক সমস্যা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত

* পড়ার চাপে শিক্ষার্থীরা এখন গান, আবৃত্তি, সাহিত্যচর্চা করে না। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম: ১২ আগস্ট ছিল আন্তর্জাতিক যুব দিবস। দিবসটি উপলক্ষে আমাদের আজকের আয়োজন। আমাদের দেশের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ যুবসমাজ। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্ঞান–বিজ্ঞান, মানবিক গুণাবলি তৈরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। তাহলে এই তরুণসমাজই আমাদের দেশ গঠনে, দেশের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

তরুণদের বিভিন্ন চিন্তাভাবনা নিয়ে প্রথম আলোর উদ্যোগে পরিচালিত জরিপের ফলাফল পাঁচ পর্বে ছাপা হয়েছে। তাদের ভাবনার অনেক বিষয় এ প্রতিবেদনে এসেছে। তারা তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ, দেশ, দেশের উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তি, জ্ঞান–বিজ্ঞান অনেক বিষয় নিয়ে ভাবছে। এসব বিষয় আজকের আলোচনায় আসবে। এখন সূচনা বক্তব্য দেবেন প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার।

বীরেন শিকদার
বীরেন শিকদার

বীরেন শিকদার: ১২ আগস্ট আমরা আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালন করেছি। এবারের বিষয় ছিল শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ। আজকের আলোচনার বিষয় ‘সমাজ গঠনে যুবসমাজের কার্যকর অংশগ্রহণ’। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত না হলে সমাজ গঠনে যুবসমাজ ভূমিকা রাখতে পারে না। শান্তি একটি আপেক্ষিক বিষয়। একে একেকজন একেকভাবে দেখে।
এই মুহূর্তে জঙ্গিবাদ শান্তি প্রতিষ্ঠায় বড় বাধা। ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে যাদের বয়স, আমরা মনে করি তারাই যুবসমাজ। এই হিসেবে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ। তাদের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশের ঐতিহাসিক সব অর্জনের সঙ্গে যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
যদি ২০২১ সালে মধ্য আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চাই, তাহলে অবশ্যই যুবসমাজের উন্নয়ন করতে হবে। তাদের সঠিক উন্নয়ন হলেই তারা সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

আয়েশা সিদ্দিকা
আয়েশা সিদ্দিকা

আয়েশা সিদ্দিকা: বাংলাদেশের প্রায় ৪০ শতাংশ জনসংখ্যা ১০-৩৪ বছর বয়সী। সুস্থ শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য এই বয়সীদের যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্যের বিষয়ে সঠিক তথ্য জানা প্রয়োজন। এ বাস্তবতায় ইউনাইট ফর বডিরাইটস অ্যালায়েন্স ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশের ১২টি উপজেলায় ছয়টি সংগঠনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।

আমাদের উদ্দেশ্য কিশোর-কিশোরী এবং এদের থেকেও বেশি বয়সের মানুষ যেন লিঙ্গ ও সামাজিক অবস্থানভেদে সঠিক তথ্য জেনে নিজের প্রজনন ও যৌনস্বাস্থ্যের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এ জন্য আমরা জোর দিচ্ছি সেই বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর। একইভাবে মানসম্মত ও যুববান্ধব সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতকরণেও সরকারের সঙ্গে আমরা কাজ করছি।

যুবসমাজের জীবনদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই ছয় সংগঠনের পাশাপাশি আরও পাঁচটি দেশি ও বিদেশি সংগঠন আমাদের কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। ইউনাইট ফর বডিরাইটস অ্যালায়েন্স এবং সমমনা সংগঠনগুলো বিশ্বাস করে, সহায়ক পরিবেশ ও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যুবসমাজের সঠিক দক্ষতা বৃদ্ধি হলে তারা সমাজ পরিবর্তনের দূত হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে।

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন: জেনারেশন ব্রেক থ্রু নামে একটি প্রকল্পে আমি এখন কাজ করছি। আমরা মনে করেছি, অনেক ক্ষেত্রে শ্রেণিতে সঠিকভাবে পড়ানো হয় না। অভিভাবকেরাও বাসা বা বাড়িতে সেভাবে বইটি খুলে দেখেন না। এ ভাবনা থেকেই আমরা ঠিক করেছি কত আনন্দদায়কভাবে বইকে ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকের কাছে উপস্থাপন করা যায়। ৩৫০টি স্কুলে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।

এসব স্কুলে পরীক্ষা নেই, প্রশ্ন নেই। অথচ ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক সবাই একসঙ্গে সবকিছু জানছেন-বুঝছেন। এসব স্কুল আপনারা পরিদর্শন করলেই বুঝতে পারবেন উদ্যোগটি কত চমৎকার। আমরা মনে করি, প্রশ্নপত্র বড় বিষয় নয়। উপস্থাপনাটাই গুরুত্বপূর্ণ।

কিশোর-কিশোরীদের উন্নয়ন করতে হলে তাদের জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এসআরএইচআরের (সেক্সুয়াল রিপ্রোডাকটিভ হেলথ রাইটস) সঙ্গে জেন্ডারভিত্তিক ভায়োলেন্সের বিষয়টিতেও গুরুত্ব দিতে হবে। সমন্বিতভাবে এ দুটো কাজ করা প্রয়োজন।

ওবায়দুর রব
ওবায়দুর রব

ওবায়দুর রব: আমাদের জনসংখ্যা সম্ভবত ২০ কোটিতে গিয়ে স্থির হবে। এ ভাবনাটা মাথায় নিয়ে আমাদের সব পরিকল্পনা করতে হবে। প্রতিবছর অসংখ্য ছেলেমেয়ে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ছে। এটা বন্ধ করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আরও বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায় যে ২০২১ সালে আমরা মধ্য আয়ের দেশ হব। মধ্য আয়ের দেশে কিছু ধনী থাকবে, কিছু গরিব থাকবে। এখন দেশে প্রায় তিন কোটি পরিবার আছে। এর ৫০ লাখ পরিবার মধ্য আয়ের ওপরে গেছে। তিন থেকে চার বছরের মধ্যে আরও ৫০ লাখ পরিবার মধ্য আয়ের ওপরে যাবে। এখন আমাদের জিডিপি হলো প্রায় ২৬০ বিলিয়ন ডলার। আমাদের জনসংখ্যা হলো ১৬০ মিলিয়ন। আমাদের মাথাপিছু আয় হলো কমবেশি ১ হাজার ৬০০ ডলার। এক দশক আগেও মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৬০০ ডলার।

যুবসমাজের উন্নয়ন করতে হলে এবং জনমিতির সুবিধা পেতে হলে এমপিওভুক্ত স্কুলগুলোতে জরুরিভাবে কর্মমুখী শিক্ষা চালু করা প্রয়োজন।

প্রসেনজিৎ দাস
প্রসেনজিৎ দাস

প্রসেনজিৎ দাস: প্রতিটি উপজেলায় আমাদের একটি করে ইয়ুথ ফোরাম আছে। একটি ফোরামে ২০ জন করে সদস্য আছেন। এর মধ্যে ছয়জন আছেন নির্বাহী সদস্য। স্থানীয় কিশোর-কিশোরীদের এসআরএইচআরের সঠিক তথ্য দেওয়া হয়। দেশে অনেক হাসপাতাল-ক্লিনিক আছে।

কিন্তু এসব জায়গায় কিশোর-কিশোরীদের প্রজননস্বাস্থ্যের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। আমরা চেষ্টা করছি সরকারি হাসপাতালে এসআরএইচআর স্বাস্থ্যসেবা চালু করার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যখন কোনো মেয়ের শারীরিক সমস্যা হয়, তখন অনেক শিক্ষকই এটাকে গুরুত্ব দেন না।

শিক্ষার্থীরা দিনের অধিকাংশ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকেন। তাই শিক্ষকসহ সব অভিভাবকের কিশোর-কিশোরীদের প্রজননস্বাস্থ্যের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

নাহিদ নাজিয়া
নাহিদ নাজিয়া

নাহিদ নাজিয়া: এখন যারা স্কুলে পড়ছে, কয়েক বছরের মধ্যে এরা যুবসমাজের অন্তর্ভুক্ত হবে। এরা কীভাবে সমাজ গঠনে অবদান রাখবে, সেটা গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা প্রয়োজন। কিছুদিন আগে দেখলাম উত্তরায় অপরাধীদের দল গড়ে উঠেছে।

অনেক তরুণ মাদকাসক্ত হচ্ছে। আমরা চাই আমাদের বন্ধুরা এ পথে না যাক। এখন দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ; এরা যদি দক্ষ হয়, সচেতন হয়, মানবিক গুণাবলি অর্জন করে, তাহলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশটা অনেক সুন্দর হবে।

ফেসবুকে যেন যুবসমাজ বাজে বিষয় পোস্ট না দিয়ে গঠনমূলক কিছু লেখে। পড়ার চাপে শিক্ষার্থীরা এখন গান, আবৃত্তি, সাহিত্যচর্চা করে না। এসব বিষয়ে গুরুত্ব না দিলে ভবিষ্যতে ভালো যুবসমাজ পাব না।

ইমরুল হাসান খান
ইমরুল হাসান খান

ইমরুল হাসান খান: যুবসমাজ গঠনে সমাজের কী ভূমিকা, সেটিও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা স্কুলে পড়ালেখার সঙ্গে গান, নাটক, আবৃত্তি, ছাত্ররাজনীতি সবই করেছি।

এ জন্য পেশাগত জীবনে কোথাও আমাদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়নি। যখন খেলাধুলা না করতে পারবে, সুস্থ সংস্কৃতিচর্চার জায়গা না থাকবে, তখন তরুণদের মাদকাসক্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি হবে। একসময় মেধাবী বন্ধুদের অনেককে মাদকাসক্ত হয়ে যেতে দেখেছি।

কিশোর-কিশোরীরা খেলাধুলাসহ সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা করতে চায়। খুব ভোরে হাঁটতে বেরোলে দেখা যায়, পার্ক ও মাঠগুলোতে তারা খেলাধুলা করছে। কিন্তু এ সুযোগ খুব কম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় না। মতপ্রকাশের জায়গা নেই। অনেক মেধাবী তরুণকে আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। ফলে অনেক মেধাবী তরুণের জঙ্গি–সংশ্লিষ্টতা দেখতে পাই।

খন্দকার আতিক
খন্দকার আতিক

খন্দকার আতিক: শহরের অনেক স্কুলেই খেলাধুলা বা সংস্কৃতিচর্চার তেমন সুযোগ নেই। এটা অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বিপথে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

ধূমপানও যুবসমাজের বিপথগামী হওয়ার কারণ হতে পারে। ধূমপান বন্ধ করার জন্য কত চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ উৎপাদন ও আমদানি বন্ধ করলেই ধূমপান বন্ধ হয়। একজন বললেন, তাঁর মেধাবী বন্ধুরা মাদকাসক্ত হয়েছে। যারা ধূমপান করে, তাদের মাদকাসক্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি।

শিক্ষা শেষ হওয়ার পর যুবসমাজকে কোনো না কোনো আয়মূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে এরা মাদকসহ িবভিন্ন প্রকার খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেতে পারে। দেশের উন্নয়নে যুবসমাজকে কাজে লাগাতে হলে তাদের জন্য িবভিন্ন ক্ষেত্রে িবনিয়োগ করতে হবে।

আরেফ সৈয়দ
আরেফ সৈয়দ

আরেফ সৈয়দ: যুবসমাজ অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। এটাও মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। আগে পারিবারিক মূল্যবোধ বেশ ভালো ছিল। এখন এই জায়গা থেকে কিছুটা সরে এসেছি বলে মনে হয়।

মানুষের জীবনে শিক্ষার বিকল্প কিছু নেই। কিন্তু সব জায়গা থেকে অত্যধিক পড়ার চাপ কতটা সহায়ক, সেটা ভাবা প্রয়োজন। আমার মা-বাবা কখনোই আমাদের পড়ার জন্য চাপ দেননি। পরীক্ষায় ভালো ফলই বড় কথা নয়। যেটা শিক্ষার্থীরা শেখে, সেটা যেন তারা প্রয়োগ করতে পারে।

আমার প্রথম ছবি ছিল হ‌ুমায়ূন আহমেদের অনিল বাগচির একদিন। এখানে একজন বাবা তার সন্তানকে বলছে, ‘তুমি যা-ই করো না কেন জীবনে সৎ থেকো।’ ভালো শিক্ষক ভালো ছাত্র তৈরি করবেন। কিন্তু শিক্ষকের বেতনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা প্রয়োজন। তাহলে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হবেন। যুবসমাজের উন্নয়নের জন্য আরও অনেক বিষয়ে কাজ করা প্রয়োজন।

অবন্তি সিঁথি
অবন্তি সিঁথি

অবন্তি সিঁথি: আমি সবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করেছি। দেশের অধিকাংশ মা-বাবা চান না তাঁর সন্তান বড় হয়ে গান করবে, নৃত্য করবে ইত্যাদি। আমার বাবা-মাও চাননি আমি গায়িকা হই।

আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেই সাধারণত কিছু না কিছু করার চেষ্টা করে। এদের বড় একটা অংশ টিউশনি করে নিজের খরচ চালায়। সামাজিক সাইটগুলো আন্তর্জাতিকভাবে বিস্তৃত। কিছুটা দক্ষতা অর্জন করতে পারলে এসব সাইট থেকে আয় করার সুযোগ আছে। যুবসমাজকে কাজে লাগানোর অনেক সুযোগ আছে। সঠিকভাবে তাদের কাজে লাগাতে না পারলে আমাদের সবার ক্ষতি হবে।

রোকেয়া কবীর
রোকেয়া কবীর

রোকেয়া কবীর: অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কথা বলেন। এসব ক্ষেত্র থেকে আমরা তথ্য পাই। তথ্য যদি বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা না থাকে, তাহলে তথ্য কোনো কাজে আসবে না। সমাজ গঠনে তরুণেরা সমাজের কোথায় কাজ করবেন, কীভাবে কাজ করবেন, সেটা কি নির্দিষ্ট?

সমাজে নারী-পুরুষে বৈষম্য রয়েছে। দেশের অধিকাংশ পরিবার মেয়ে ও ছেলেদের এখনো ভিন্নভাবে দেখে। ভারতের একজন বিখ্যাত সাংবাদিক বলেছেন, ‘নারীদের কাছ থেকে আমরা সব সময় িবনয়ী আচরণ আশা করি।’

যৌন ও প্রজননের বিষয়টি মৌলিক মানবাধিকারের মধ্যে পড়ে। নারীদের কম দামে স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। আমাদের তরুণদের এমন একটি পরিবেশ দিতে হবে, যেখানে তারা তাদের অধিকার চর্চা করতে পারবে। বিশ্লেষণমূলক শিক্ষার পরিবেশ পাবে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করতে পারবে।

দিবালোক সিংহ
দিবালোক সিংহ

দিবালোক সিংহ: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে যুবসমাজের উন্নয়ন প্রয়োজন। আমাদের সরকারের একটা যুব নীতিমালা আছে। সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে হলে যুবসমাজকে দক্ষ ও যোগ্য করে তুলতে হবে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের একটা বাজেট আছে। এ বাজেটের কত অংশ যুবসমাজের জন্য আর কত অংশ খেলাধুলার জন্য খরচ হয়, সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই। এটা জানা প্রয়োজন বলে মনে করি।

দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ দরিদ্র। এর দুই কোটি মানুষ অতিদরিদ্র। এক কোটি মানুষ বিদেশে থাকে। এর ৭৫ শতাংশ থাকে মধ্যপ্রাচ্যে। বিদেশে তারা মানসম্মত বেতন পায় না। কাজ পায় না। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন।

কামরুন নাহার
কামরুন নাহার

কামরুন নাহার: শিশু একাডেমী, স্কাউটিং, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এখনো আছে। কিন্তু আমাদের সন্তানেরা এতে কতটুকু যুক্ত হচ্ছে, সেটা একটা প্রশ্ন। যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেন আমাদের সন্তানেরা প্রতিবাদ করার সাহস অর্জন করতে পারে, সেভাবে তাদের তৈরি করা প্রয়োজন।

কিশোর-কিশোরীদের মধ্য থেকে অনেক বেশি রোল মডেল তৈরি করতে হবে। সাংবিধানিক অধিকারগুলো তরুণদের জানানো প্রয়োজন। অন্যান্য সনদে কী আছে, সেটা তাদের জানা প্রয়োজন। যুবসমাজকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিলে তারা সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার
মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার

মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার: যুবসমাজের স্বাস্থ্যের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আমরা সবাই কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখি।

এদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অনেক ধরনের কাজ করে থাকি। কিশোরীদের গর্ভকালীন ও গর্ভ-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকি। আমরা বিভিন্ন স্কুলের পিয়ার গার্ল ও শিক্ষকের সঙ্গে কাজ করি। প্রজননস্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেবামূলক বিষয় নিয়ে আমরা শিক্ষক ও পিয়ার গার্লদের সঙ্গে আলোচনা করি। পরে অন্য শিক্ষার্থীরাও এদের মাধ্যমে জেনে যায়। যুবসমাজের প্রজননস্বাস্থ্য, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য হাইজিন বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সেবামূলক কার্যক্রম রয়েছে। আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য ঠিক থাকলেই এরা সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবে।

এ এফ এম মতিউর রহমান
এ এফ এম মতিউর রহমান

এ এফ এম মতিউর রহমান: বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যাগুলো ছেলেমেয়েরা কারও কাছে বলতে পারে না। অনেক মেয়ে তার মায়ের কাছে বলে। বয়সভিত্তিক সেবা ও তথ্য পাওয়ার সুবিধার্থে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সম্প্রতি ইয়ুথ কর্নার চালু করেছে।

কিশোর-কিশোরীদের সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। শিক্ষক প্রশিক্ষণ কারিকুলামে যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্যের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েদের টয়লেট নেই। ফলে মেয়েদের অনেক সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়।

বইয়ে তরুণ-তরুণীদের প্রজননস্বাস্থ্যের বিষয় আছে কিন্তু পড়ানো হয় না। যদি পড়ানো না হয়, কেউ তাদের এ বিষয়ে না বলে, তাহলে এসব তরুণ-তরুণী যাবে কোথায়? কোথা থেকে তারা শিখবে? পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে না।

নুর মোহাম্মদ
নুর মোহাম্মদ

নুর মোহাম্মদ: যেকোনো কাজের পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন—এ তিনটি পর্যায়ে যুবসমাজের কার্যকর অংশগ্রহণ জরুরি। তাহলে যেকোনো পরিকল্পনা কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে। বড়রা মনে করেন, তাঁরা সব জানেন। এমন মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যুবসমাজকে কথা বলতে দিতে হবে। তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।

যুব ও ক্রীড়া এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে, যেন যুবসমাজের উন্নয়নে অনেক কাজ করা যায়। সব ক্ষেত্রে এদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। তাদের এমন পরিবেশ আমাদের দিতে হবে, যেন তারা নিজেদের মতো করে বিকশিত হতে পারে।

নিশাত ফাতিমা রহমান
নিশাত ফাতিমা রহমান

নিশাত ফাতিমা রহমান: যুবসমাজের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মতে, ১২ থেকে ১৫ বছরের ছেলেমেয়েদের একটা বড় অংশের মানসিক সমস্যা রয়েছে।

২০১২ সালে কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে আমরা ২২টি সেশন করেছিলাম। এর মাধ্যমে  জানতে পারি, কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে তারা আস্থা পায় না। এমনকি বাবা-মাও তাদের বিশ্বাস করছেন না। এরা রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তারা ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন থাকে। প্রচণ্ড চাপে থাকে। মাদকাসক্তের প্রবণতা, পরীক্ষাভীতি, যৌন হয়রানি, বাল্যবিবাহ ইত্যাদি সমস্যা তাদের রয়েছে। প্রতিটি স্কুলে একজন শিক্ষক যেন এসব বিষয়ে তাদের সহযোগিতা করেন, এ ব্যবস্থা করেছিলাম।

কাজী সুরাইয়া সুলতানা
কাজী সুরাইয়া সুলতানা

কাজী সুরাইয়া সুলতানা: যুবসমাজকে বিভিন্ন অবক্ষয় থেকে রক্ষার জন্য মা-বাবা, স্কুলের শিক্ষক, নাগরিক সমাজ, জাতীয় পর্যায়ের নেতা, এনজিও সবাইকে কাজ করতে হবে। খেলাধুলা, গান, নাটক, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যুবসমাজকে ব্যস্ত রাখা প্রয়োজন।

অনেক পরিবারে এসবের কোনো চর্চা নেই। পরিবার থেকে সন্তানদের সারাক্ষণ শুধু পড়ার কথা বলা হয়। শুধু পড়াই তো জীবন নয়, এর বাইরে তারা অনেক কিছু করতে চায়। এসব করার সুযোগ না থাকলে তারা বিপথগামী হবে। বাবা-মা সন্তানদের সময় দিচ্ছেন না। কিন্তু তাদের কাছ থেকে পরীক্ষায় ভালো ফল আশা করছেন। এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।

শার্মিন ফরহাত ওবায়েদ
শার্মিন ফরহাত ওবায়েদ

শার্মিন ফরহাত ওবায়েদ: প্রজননস্বাস্থ্য–শিক্ষার পাশে যুবাদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বৈষম্য ও সহিংসতা নিরসনের জন্য কাজ করছি। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা তাদের এমনভাবে তৈরি করছি, যেন তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে,  নেতৃত্ব দিতে পারে। এবারের যুব দিবসের প্রতিপাদ্য হলো শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ। এরা যদি সঠিক তথ্য না পায় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রদানে অংশগ্রহণ করতে না পারে, তাহলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা অসম্ভব। মাঠপর্যায়ে  সরকারের বিভিন্ন কমিটিতে যুবাদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। অথচ কর্মপরিকল্পনায়, বাস্তবায়নে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের অংশগ্রহণ প্রায় থাকেই না। কার্যকর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোও বিবেচনায় রাখা জরুরি।

প্রদীপ দত্ত
প্রদীপ দত্ত

প্রদীপ দত্ত: নেত্রকোনা জেলার একটা অংশে কাজ করি। এখানে ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সের মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এখানে আমরা প্রজননস্বাস্থ্যের বিষয়ে সেবা দিই। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরও এখানে একই কাজ করে।

কিন্তু অামরা কাজ করতে গিয়ে দেখি যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্যের বিষয়ে এখানকার যুবসমাজ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে তেমন কোনো সহায়তা পায়নি। এসব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। তাহলে যুবসমাজ অনেক উপকৃত হবে। আমাদের সবার লক্ষ্য, কিশোর-কিশোরীদের আরও ভালোভাবে সেবা দেওয়া, যেন তারা শারীরিক ও মানসিক দিকে সুস্থ থাকে।

মাশফিকা জামান সাটিয়ার
মাশফিকা জামান সাটিয়ার

মাশফিকা জামান সাটিয়ার: আজকের শিরোনাম, ‘সমাজ গঠনে যুবসমাজের কার্যকর অংশগ্রহণ।’ কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে যুবসমাজকে একটি অনুকূল পরিবেশ দিতে হবে। এ পরিবেশ তৈরি করতে হবে আমাদের।

মাঠপর্যায়ে আমাদের যুবসমাজের জন্য ১০টি প্রকল্প রয়েছে। ৩২ জন অংশীদার এসব প্রকল্পে কাজ করছেন। আমাদের সব প্রকল্পের প্রতিটি কাজের সঙ্গে যুবসমাজের অংশগ্রহণ রয়েছে। দেশের বাস্তবতায় আমাদের হয়তো আরও বড় পরিসরে কাজ করা প্রয়োজন।

আমাদের একটা লক্ষ্য থাকে, আমরা যা-ই করি, তা যেন টেকসই হয়। আমাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষার কাঠামো বেশ শক্তিশালী। তৃণমূল পর্যন্ত এর কাঠামো আছে। হয়তো সব জায়গায় সঠিকভাবে কার্যকর নয়। এসব প্রতিষ্ঠান যেন কার্যকর থাকে, আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করি। একই সঙ্গে সরকারেরও বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন। সরকার ও আমরা একসঙ্গে কাজ করলে এটি আরও বেশি ফলপ্রসূ হবে।

মো. জয়নাল হক
মো. জয়নাল হক

মো. জয়নাল হক: সমাজ গঠনে যুবসমাজের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হলে ১০ বছর বয়স থেকেই এ জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিতে হবে। এদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উন্নয়নে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করা জরুরি।

টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনায় কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গত দেড় বছর হলো আমরা তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার জন্য বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। জনবল কত হবে, সেবার মান কেমন হবে, সবই ঠিক করেছি। এ ক্ষেত্রে ৫০ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে, যেন কোথাও একটির বেশি দল কাজ না করে। ফলে ভবিষ্যতে এ ক্ষেত্রে আমরা ভালো অগ্রগতি অর্জন করতে পারব।

নার্গিস সুলতানা
নার্গিস সুলতানা

নার্গিস সুলতানা: প্রতিবছর প্রায় দুই লাখ যুবক ও যুব মহিলা বিদেশে যান। তাঁরা দেশে ফিরে যেন দেশের সেবা করেন, এমন একটা উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তাঁরা বিদেশে যাওয়ার আগে যেন দক্ষ প্রশিক্ষণ পান, সে বিষয়টা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তাহলে বিদেশে গিয়ে মানসম্মত কাজ করতে পারবেন। তা না হলে তাঁরা বিদেশে গিয়ে মানসম্মত কাজ করতে পারবেন না।

উপরন্তু নিজেরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়বেন। দেশে রেখে যাওয়া পরিবারও বিপদে পড়বে। কারণ, মানুষগুলোর পেছনে ইতিমধ্যে অনেক পরিবার তাদের সর্বস্ব বিনিয়োগ করে ফেলে। ফলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

আনোয়ারুল করিম
আনোয়ারুল করিম

আনোয়ারুল করিম: দেশে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সের কত মানুষ আছে, এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। আমরা পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে জেনেছি, এ সংখ্যা ৪ কোটি ৮০ লাখ। সংখ্যাটি আরও নির্ভরযোগ্য হওয়া প্রয়োজন। জাতিসংঘের পপুলেশন বিভাগ বলছে, এখন আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২ শতাংশ।
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ যুক্ত হচ্ছে। তাদের হিসাবমতে এই বৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে কমে আসবে।
২০১৭ সালে যুবনীতি করা হয়েছে। এটি একটি সমন্বিত যুবনীতি। এ নীতি অনুযায়ী এখন যুব মন্ত্রণালয়সহ ১৬টি মন্ত্রণালয় যুবসমাজের উন্নয়নে কাজ করবে। যুবসমাজের জন্য শুধু বড় ডিগ্রির ব্যবস্থা করলে হবে না। এদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে হবে। তাহলে যুবসমাজ ভবিষ্যতে সমাজ উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।

বীরেন শিকদার: যুবসমাজ দেশের মোট জনসংখ্যার সবচেয়ে কার্যকর অংশ। তাদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নতি হবে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন দেখিয়েছেন, ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হব।

আমাদের দেশের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ যুবসমাজের অংশ। ২০৪১ সাল পর্যন্ত যুবসমাজকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারব। এদের কাজে লাগাতে হলে শিক্ষিত করতে হবে। প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যোগ্য করতে হবে। শুধু প্রচলিত শিক্ষা দিয়ে এই বিশাল যুবসমাজকে দক্ষ ও যোগ্য করে তুলতে পারব না।

তাই তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণসহ অনেক উদ্যোগ নিয়েছি, যেন যুবসমাজ দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। দেশের যুবসমাজের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি। ভবিষ্যতে এরা সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

আব্দুল কাইয়ুম: যুবসমাজের উন্নয়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা জরুরি। নীতিনির্ধারণী জায়গা থেকে এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে বলে আশা করি। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।

যাঁরা অংশ নিলেন

বীরেন শিকদার             :  সাংসদ, প্রতিমন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

আনোয়ারুল করিম       :  মহাপরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন  :      পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর

মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার        :           লাইন ডিরেক্টর, মাতৃ, নবজাতক,

                            শিশু ও কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

মো. জয়নাল হক         :  ম্যানেজার, প্রোগ্রাম, অ্যাডোলসেন্ট ও রিপ্রোডাকটিভ

                            হেলথ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর

এ এফ এম মতিউর রহমান  :      নির্বাহী পরিচালক, ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন

                            অব বাংলাদেশ (এফপিএবি)

মাশফিকা জামান সাটিয়ার   :      সিনিয়র অ্যাডভাইজর, এসআরএইচআর অ্যান্ড জেন্ডার,

                            এমবাসি অব কিংডম অব নেদারল্যান্ডস

ওবায়দুর রব             :  কান্ট্রি ডিরেক্টর, পপুলেশন কাউন্সিল

কাজী সুরাইয়া সুলতানা  :  নির্বাহী পরিচালক, রিপ্রোডাকটিভ হেলথ সার্ভিস,

                            ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রাম, আরএইচটিইপি

রোকেয়া কবীর          :  এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অ্যান্ড চেয়ার,

                            ইউবিআর অ্যালায়েন্স, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ

দিবালোক সিংহ          :  নির্বাহী পরিচালক, দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র (ডিএসকে)

নুর মোহাম্মদ             :  নির্বাহী পরিচালক, পপুলেশন সার্ভিস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার

নিশাত ফাতিমা রহমান   :  সহকারী অধ্যাপক, বিআইইডি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

ইমরুল হাসান খান       :  জেনারেল ম্যানেজার, স্পেশাল প্রোগ্রামস, মেরি স্টোপস

খন্দকার আতিক         :  শিক্ষক, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ

কামরুন নাহার           :  সদস্য, নারীপক্ষ

অবন্তি সিঁথি              :  সংগীতশিল্পী

আরেফ সৈয়দ            :  অভিনয়শিল্পী

আয়েশা সিদ্দিকা         :  টিম লিডার, ইউবিআর অ্যালায়েন্স

প্রসেনজিৎ দাস          :  যুব প্রতিনিধি

নাহিদ নাজিয়া           :  যুব প্রতিনিধি

শার্মিন ফরহাত ওবায়েদ  :  প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর, ইউবিআর, অ্যালায়েন্স

প্রদীপ দত্ত               :  প্রজেক্ট ম্যানেজার, ইউবিআর

নার্গিস সুলতানা          :  সহকারী প্রোগ্রাম অফিসার, পপুলেশন কাউন্সিল

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম           :  সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো