সহায়তা পেলে এগিয়ে যাবে দুগ্ধ খাত

প্রতিদিন দেশে ১ কোটি ৮০ লাখ লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। এর মাত্র ৭ শতাংশ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে বাজারজাত করা হয়। বাকি দুধ মান নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বাজারে বিক্রি করা হয়। তাই সরকারি সহায়তা পেলে দেশের সম্ভাবনাময় দুগ্ধশিল্প এগিয়ে যাবে। বিনিয়োগকারীদের বিপুল আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু বাধার কারণে দেশে দুধের উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না। এ খাতের সমস্যা সমাধানে সরকারের আরও সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সরকার তা করবে। সবার সহযোগিতায় দেশে ‘সাদা বিপ্লব’ হয়ে যাবে।

আজ রোববার প্রথম আলোর আয়োজনে ‘সম্ভাবনাময় দুগ্ধশিল্প: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশের সহযোগিতায় প্রথম আলো কার্যালয়ে ওই গোলটেবিল বৈঠকে দুগ্ধশিল্পের সঙ্গে জড়িত সরকারি ও বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা ছাড়াও সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।

দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা গুঁড়ো দুধ আমদানির ওপরে শুল্ক কমিয়ে দেওয়া, দুধ শীতলীকরণ কারখানাগুলোতে সহজে বিদ্যুৎ-সংযোগ না পাওয়া, কৃষিভিত্তিক শিল্প হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ শিল্পের মতো বিদ্যুৎ বিল আদায় করা, গরু লালনপালন এবং যত্নের জন্য কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন লোকবলের অভাব, খামার ও কারখানা স্থাপনের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ না পাওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় বৈঠকে তুলে ধরেন বক্তারা।

সভার শুরুতে ও শেষে বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তিনি দুগ্ধশিল্পের সমস্যাগুলো সমাধানে তাঁর মন্ত্রণালয় থেকে বড় পরিসরে আলোচনার জন্য বৈঠকের আয়োজন করবেন বলে জানান। দুগ্ধশিল্পের সঙ্গে জড়িত সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই খাতের সমস্যাগুলোর সমাধানে উদ্যোগ নেবেন বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
দেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে হলে এর মাত্র ৭ শতাংশ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে বাজারে আসে। বাকি দুধ মান নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বাজারে বিক্রি হয়।

প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, গরুর প্রতিটি অঙ্গ ব্যবহার করা যায়। এবারের কোরবানির ঈদের পর গরুর ফেলে দেওয়া বর্জ্যসহ অন্যান্য কিছু রপ্তানি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে।

আরও বক্তব্য দেন কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর জেমি টার্জি, ব্র্যাক ডেইরি ও ফুড প্রকল্পের মহাপরিচালক মো. আনিসুর রহমান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আইনুল হক, কৃষি উৎসের মহাব্যবস্থাপক মারুফ আজম, মিল্ক ভিটার পরিচালক গোলাম মোস্তফা, কেয়ার বাংলাদেশের ইআরপিপির পরিচালক মো. আনোয়ারুল হক, এসিআই এগ্রিবিজনেসের নির্বাহী পরিচালক এফ এইচ আনসারি, স্টেপ ওআরজির চেয়ারম্যান হাসান ইমাম, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডেইরির প্রধান (এক্সটেনশন) মো. রাকিবুর রহমান, কেয়ার বাংলাদেশের এসডিভিসি-২-এর টিম লিডার মোস্তফা নূরুল ইসলাম, কেয়ারের এসডিভিসি-২-এর খামারি দলনেতা মোছা. আম্বিয়া খাতুন প্রমুখ।