সাংবাদিক রোজিনাকে অবিলম্বে মুক্তির আহ্বান সিপিজের

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আজ মঙ্গলবার আদালতে নেওয়া হয়।
ছবি: সাজিদ হোসেন

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)। গতকাল সোমবার সিপিজে এক বিবৃতিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্ত বন্ধ ও অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

সিপিজে বিবৃতিতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আরও জানায়, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিযোগ করার পর প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভেতরে দীর্ঘ সময় আটকে রাখার একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান রোজিনা ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারা অনুসারে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিসের নথিপত্রের ছবি তোলার অভিযোগ আনা হয়। পেনাল কোডের ৩৭৯ ও ৪১১ ধারা অনুসারে দোষী সাব্যস্ত হলে রোজিনা ইসলামের ১৪ বছরের কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।

প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ সিপিজেকে ফোনে গতকাল বলেছেন, রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় রাখা হয়েছে।

সিপিজের এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক আলিয়া ইফতিখার বলেন, ‘বাংলাদেশে কঠোর ঔপনিবেশিক আইনের ধারায় সাংবাদিককে আটক ও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনায় আমরা শঙ্কিত। এই আইনে দুঃখজনকভাবে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।’

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরতা সাংবাদিকেরা।
প্রথম আলো

সিপিজের এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ এই গবেষক আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ ও সরকারকে বুঝতে হবে রোজিনা ইসলাম একজন সাংবাদিক। তাঁর কাজ জনসেবামূলক। অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে তাঁকে মুক্তি দিতে হবে।’

ঢাকা ট্রিবিউনের বরাত দিয়ে ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ করার কথা ছিল।

প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ সিপিজেকে বলেন, রোজিনা ইসলাম গত মাসে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন।
সাজ্জাদ শরিফ আরও জানান, থানায় নিয়ে যাওয়ার আগে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রাখা হয়।

সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, সচিবালয়ে রোজিনা ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।

সাজ্জাদ শরিফ সিপিজেকে বলেন, মনে হচ্ছে, দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের কারণে রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সিপিজেকে ফোনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। এ ব্যাপারে ই-মেইলে মন্তব্য জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাইদুল ইসলাম কোনো উত্তর দেননি।