সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে বাঘ রক্ষার বিকল্প নেই

বাঘ আমাদের জাতীয় গৌরব, এদের রক্ষায় সদয় হোন—এ প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হলো এবারের বিশ্ব বাঘ দিবস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সুন্দরবনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বাঘ রক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
বিশ্বব্যাপী ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হলেও এবার ঈদের জন্য বাংলাদেশে উদ্যাপিত হলো গতকাল ৭ আগস্ট। সকালে রাজধানীর দোয়েল চত্বর থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে ওসমানী মিলনায়তনে যান স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শোভাযাত্রা শেষে ওসমানী মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠান হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, বিশ্বে ১৯০০ সালে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় এক লাখ বাঘ থাকলেও বর্তমানে এ সংখ্যা মাত্র চার হাজার। বাংলাদেশ, ভারতসহ মাত্র ১৩টি দেশে এখন বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে এভাবে বাঘের সংখ্যা কমতে থাকলে কয়েক দশকের মধ্যেই পৃথিবী থেকে বাঘ হারিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে ‘টাইগার: দি ন্যাশনাল প্রাইড অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খান। প্রবন্ধে বাঘকে বনের স্বাস্থ্যের ‘নির্দেশক’ উল্লেখ করে বলা হয়, সুন্দরবনে এখন ২০০-৪৫০টির মতো বাঘ আছে। এ ছাড়া বাঘের জন্য হুমকি হিসেবে মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি লবণাক্ততা ও সুন্দরবনের মাঝখান দিয়ে নৌ-রুট চালুর বিষয়টি দায়ী। অধ্যাপক মনির নৌ-রুট বন্ধে পদক্ষেপ নিতে পরিবেশ ও বনমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, এগুলো মোকাবিলার জন্য বিদেশি বন্ধুদের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাদের নিজেদেরও একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্বব্যাংকের এ দেশীয় পরিচালক ইয়োহানেস জাট বলেন, আন্তর্জাতিক চোরাকারবারিরা বাঘের অস্তিত্ব রক্ষায় অন্যতম হুমকি। এদের প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারী। সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুছ আলী।