সুন্দর আগামীর জন্য পোলট্রি

>
.
.
গত ২২ জানুয়ারি ২০১৭, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘সুন্দর আগামীর জন্য পোলট্রি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

আলোচনায় সুপারিশ

* আয়কর, আমদানি শুল্ক ছাড়াও অনেক বেশি পরিমাণ এআইটি দিতে হয়। পোলট্রিশিল্প সম্প্রসারণে এসব বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে
* পোলট্রিশিল্পের স্বাের্থ দেশে অত্যাধুনিক ভ্যাকসিন তৈরির প্ল্যান্ট স্থাপন করে নিজেদের জন৵ প্রয়োজনীয় ও উপযোগী ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারলে বিদেশি ভ্যাকসিনের চেয়ে বেশি কার্যকর হবে
* সরকারের একটা পোলট্রি নীতিমালা আছে। এখানে বলা আছে কীভাবে পোলট্রিশিল্পের উন্নয়ন হবে। কিন্তু এই নীতিমালার কোনো বাস্তবায়ন দুর্বল
* পোলট্রির ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সেবা চালু করা প্রয়োজন। শিক্ষার ক্ষেত্রে পোলট্রির বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করতে হবে

আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম: পোলট্রিশিল্পে দেশে আমিষের চাহিদা পূরণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। ব্যাপক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই এ শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সরকারি ও বেসরকারি খাতের আরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
পোলট্রিশিল্পের সম্প্রসারণে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এখন এ বিষয়ে আলোচনা করবেন প্রিয় মোহন দাশ।

প্রিয় মোহন দাশ
প্রিয় মোহন দাশ

প্রিয় মোহন দাশ: পোলট্রিশিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। এটি অন্যান্য খাত থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। দুই দশক ধরে ব্যাপকভাবে পোলট্রিশিল্পের উন্নয়ন হয়েছে। তবে আমাদের দূরদর্শিতার অভাবে এ শিল্পকে টেকসই করতে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে।
পোলট্রিশিল্প যখন শুরু হলো, তখন থেকেই জীব নিরাপত্তা ও পরিবেশ সম্পর্কে ভাবা প্রয়োজন ছিল। তাহলে এর সম্প্রসারণ কিছুটা কম হলেও অনেক বেশি টেকসই হতো। আমাদের দরকার ছিল জীব নিরাপত্তা ও সরকারের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করে চলা। সেটা হয়নি।
জাতি হিসেবে আমাদের মানবিক মূল্যবোধের কিছুটা অভাব আছে কি না, এ বিষয়েও প্রশ্ন আছে। কারণ, আমরা সবাই চাই খুব দ্রুত ধনী হতে। এটা হতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নৈতিকতা থেকে সরে যাচ্ছি। মুনাফা করতে গিয়ে যেন মানুষের ক্ষতি না করি, এ বিষয়টি সবার গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা প্রয়োজন।
মসিউর রহমান: ‘সুন্দর আগামীর জন্য পোলট্রি’—এটিই আমাদের আজকের স্লোগান। আজকের গোলটেবিলের উদ্দেশ্য হলো পোলট্রি খাতের উন্নয়ন করা। শুরুর দিকে এ শিল্পের উন্নয়ন ছিল ৫ থেকে ১০ শতাংশ। ১০ বছর ধরে পোলট্রিশিল্পের প্রবৃিদ্ধ হচ্ছে ১৫ শতাংশের বেশি।

রানা প্লাজা যেমন পোশাকশিল্পকে বদলে দিয়েছে, তেমনি ২০০৭-০৮ সালের বার্ড ফ্লু আমাদের অনেক সতর্ক করেছে। রোগ প্রতিরোধের জন্য জীবন্ত মুরগির বাজারজাতকরণ ধাপে ধাপে বন্ধ করা প্রয়োজন। তা না হলে রোগ প্রতিরোধ সম্ভব নয়।

মসিউর রহমান
মসিউর রহমান


প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার প্রায় শতভাগ। অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানদের ডিম খাওয়ান। অনেক স্কুলে শিক্ষার্থীদের ডিম দেওয়া হয়। আমরা পোলট্রির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আপস করি না। ফলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ডিমের মান ঠিক থাকে।
মুরগি ডিম পাড়ার পর সর্বোচ্চ সাত দিনের মধ্যেই ভোক্তার টেবিলে চলে আসে। আমরা মাংস ও ডিমের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। এখন বছরে একজন মানুষ গড়ে ডিম খায় ৫০টির বেশি। কয়েক বছর আগেও এটা ছিল ২৫ থেকে ৩০টি। আগে মানুষ মাংস খেত বছরে গড়ে দুই কেজি। এখন এটা চার কেজিতে পৌঁছেছে। মানুষ যেভাবে পোলট্রি গ্রহণ করেছে, তাতে ২০২০ সালে আমাদের উৎপাদন বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করতে হবে।
ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতি দুই বছর পর পর একটা আন্তর্জাতিক সেমিনার করে থাকে। ১৯৯৭ সাল থেকে এটা হয়ে আসছে। আগে এই সেমিনার দেখতে বিদেশে যেতে হতো। এখন এটা বাংলাদেশে হয়। এখান থেকে জানার ও শেখার অনেক কিছু আছে। এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি। মাংস ও ডিমের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবাই সতর্ক।
এ খাতের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আগে এ শিল্পে আয়কর ছিল না, এখন আয়কর, আমদানি শুল্ক ছাড়াও অনেক বেশি পরিমাণ এআইটি দিতে হয়। পোলট্রিশিল্প সম্প্রসারণে এসব বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে বিবেচনা করবে বলে আশা করি।

সামসুল আরেফিন খালেদ
সামসুল আরেফিন খালেদ

সামসুল আরেফিন খালেদ: আমাদের স্লোগান ‘সুন্দর আগামীর জন্য পোলট্রি’। এটা বুঝতে হলে বর্তমান অবস্থা জানতে হবে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ভালো। অল্প সময়ের মধ্যেই মধ্য আয়ের দেশ হব। আমাদের বেকার সমস্যা আছে।
আয়বৈষম্য আছে। নারীকে আরও অনেক এগিয়ে আসতে হবে। শর্করা খাদ্যের অভাব নেই। এটা বরং অতিরিক্ত। কিন্তু পুষ্টির ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থা খারাপ বলতে হবে। এ জন্য শিশুরা অনেক ক্ষেত্রে খর্বকায় হচ্ছে।
সুন্দর আগামীর জন্য বেকার সমস্যা দূর করতে হবে। নারীকে আরও অনেক বেশি কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। আয়বৈষম্য থাকবে না ইত্যাদি। জিডিপি প্রবৃদ্ধি যতই বাড়ুক, তাতে যদি গ্রামের মানুষের আয় না বাড়ে, তাহলে এই জিডিপি গ্রোথ আমাদের কাজে আসবে না।
আন্তর্জাতিক খাদ্য সংস্থার মতে, শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলে হবে না, এটা হতে হবে পুষ্টিবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এ ক্ষেত্রে পোলট্রি ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।
পোলট্রি হলো পুষ্টির সবচেয়ে সহজলভ্য ও সস্তা উৎস। পোলট্রি অনেক কম জায়গায় উৎপাদন করা যায়। পোলট্রি ছাড়া অন্য কোনো শিল্প ভার্টিক্যাল করা যায় না।
নিজের বাড়িতে, এলাকায় থেকেই পোলট্রি করা যায়। ঘর-সংসারের কাজ করেও এটা করা যায়। অধিকাংশ খামারে দেখেছি পোলট্রিতে মেয়েরা কাজ করছে। মেয়েরা বাচ্চার প্রতি যেভাবে আন্তরিক হয়, পুরুষেরা মোটেই সেভাবে পারেন না। ভবিষ্যতে এ শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখবে।

খালেদা ইসলাম
খালেদা ইসলাম

খালেদা ইসলাম: দেশ স্বাধীনের আগে পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট একবার জরিপ করেছিল। জরিপে দেখা গেল, পুষ্টির সমস্যা ভয়াবহ। কিছু ছিল মারাত্মক পর্যায়ে। যেমন গলা ফোলা।
বাংলাদেশে এখনো প্রকট পুষ্টির সমস্যা রয়েছে। এ জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। দেশে জন্ম নেওয়া অনেক শিশুর ওজন কম। অনেক শিশু খর্বকায় ইত্যাদি। এসব শিশু কী খায়? প্লেটভর্তি ভাত, আলুভর্তা, শাকসবজি ইত্যাদি। এর সবই শর্করা। তবে এখন পোলট্রিশিল্প পুষ্টির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
দেশের মানুষ অনেক কম দামে মাংস ও ডিম খেতে পারছে। রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য প্রয়োজন মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ। মাংস ও ডিম যদি আমরা নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে পুষ্টির অনেকটাই পূরণ হয়ে যায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী পুষ্টি দূর করার জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। এ জন্য সবাই আমরা গর্ববোধ করি।
আরেকটা বড় সমস্যা হলো খর্বকায়। শিশুদের যদি পর্যাপ্ত মাংস খাওয়ার সুযোগ হয়, তাহলে এটাও আর থাকবে না। শুধু শিশুরা নয়, গর্ভবতী মায়েরাও সহজে ডিম ও মাংস খেতে পারবেন। পোলট্রির খাদ্য কী দিয়ে তৈরি, জনগণের জানা প্রয়োজন। এ সম্পর্কে অনেক সময় খবর হয়। পোলট্রির খাদ্য নিয়ে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা আছে।
একধরনের কথা শোনা যায় যে দ্রুত মুরগির ওজন বাড়ানোর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়। আপনারা যাঁরা এই পোলট্রিশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাঁদের এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকা জরুরি।

মো. সিরাজুল হক
মো. সিরাজুল হক

মো. সিরাজুল হক: ২০১৭ সালের ২ থেকে ৪ মার্চ বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে পোলট্রিশিল্প নিয়ে একটা বিশাল মেলা হবে। এ ধরনের মেলায় এ শিল্পের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এখানে আসলে সব প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে। আরও জানা যাবে, পোলট্রির উৎকর্ষ কত বেড়েছে।
সম্প্রতি হোটেল র্যাডিসনে যুক্তরােজ্যর একজন পোলট্রি বিশেষজ্ঞ বিশ্বে পোলট্রিতে ওষুধের ব্যবহার নিয়ে কথা বলেছেন। আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশ ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশি সতর্ক। তাহলে এত কথা আসছে কেন?
হরমোন দিলে একটা মুরগির দাম পড়ে এক হাজার টাকা। বাংলাদেশ কেন, বিশ্বের কোথাও মুরগিতে হরমোন দেওয়া হয় না।
বাংলাদেশে পোলট্রির উৎকর্ষের মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সমান। পোলট্রির উৎকর্ষ যেন সবাই বাড়াতে পারে, এ জন্য রাজশাহীতে ৩০০ খামারি নিয়ে সভা করেছি। কোনো কোনো সাংবাদিক ভাইয়ের পোলট্রি নিয়ে ভুল ধারণা আছে। এ জন্য সাংবাদিকদের জানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
পোলট্রির অ্যান্টিবায়োটিক ও মানুষের অ্যান্টিবায়োটিক সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ দুটোকে এক করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। মানুষের রোগ হলে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সময় তেমন কোনো নিয়ম মানা হয় না। এটা প্রয়োগের ন্যূনতম নিয়ম গ্রামের চিকিৎসকেরাও মানেন না। তাঁরা ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক দেন।
যে–কেউ দোকান থেকে এটা কিনতে পারে। রোগীরা আবার নিজেরাও পছন্দমতো অ্যান্টিবায়োটিক কেনেন। এ ক্ষেত্রে একটা নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। কেএফসি, আগোরা, মিনাবাজার, স্বপ্ন সবাই বলেছে বাংলাদেশের পোলট্রির মান ভালো।

আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান
আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান

আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান: এই মুহূর্তে বিশ্বে পোলট্রির অবস্থা কী? যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, মিসর, যুক্তরাজ্য ছাড়াও আরও অনেক দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা দেখা দিয়েছে।
আমাদের দেশে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে কাকে ভাইরাস দেখা গিয়েছিল। এরপর এখন পর্যন্ত কোনো মুরগি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ, তারপরও আমরা কেন ভালো থাকতে পারলাম? এ ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী এইচ৫এন১ ভ্যাকসিন চালু করার অনুমতি দিয়েছেন। কয়েকটি জেলায় এ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য এখনো দেশের পোলট্রি নিরাপদ আছে।
এখন এইচ৫এন১ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দেশে এইচ৭এন৯ এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এটি ভীষণভবে এ শিল্পের উৎপাদনশীলতা কমাচ্ছে।
পোলট্রিশিল্পের স্বাের্থ দেশে অত্যাধুনিক ভ্যাকসিন তৈরির প্ল্যান্ট স্থাপন করে নিজেদের জন৵ প্রয়োজনীয় ও উপযোগী ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারলে বিদেশি ভ্যাকসিনের চেয়ে বেশি  কার্যকর হবে।
আন্তর্জাতিক মান অনুসারে একটি মুরগি থেকে ১৫২টি বাচ্চা পাওয়ার কথা। বাংলােদেশে প্রতিটি মুরগি থেকে ১৩৩–১৩৭টি ডিম পাওয়া যায়। কিন্তু এইচ৭এন৯ ভাইরাসের জন৵ প্রতিটি মুরগি থেকে ১০৬টি বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে। খামারি পর্যায় এটি মুরগির দাম বাড়ার কারণ।
বাংলাদেশে যে পরিমাণ মা-মুরগির প্রয়োজন, সেটা আছে। কিন্তু এ মুরগি থেকে যে পরিমাণ মানসম্মত ডিম আসার কথা, সেটা আসছে না। এই মুহূর্তে যে পরিমাণ মা-মুরগি আছে, তাতে সপ্তাহে ১ কোটি ৩৫ লাখ মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হওয়ার কথা। কিন্তু সেটা আসছে না।
এইচ৭এন৯ ভাইরাসের ভ্যাকসিন আমদানি জরুরি হয়ে পড়েছে। এ জন৵ সরকারের অনুমতি প্রয়োজন।

মঞ্জুর মোরশেদ খান
মঞ্জুর মোরশেদ খান

মঞ্জুর মোরশেদ খান: ২০০৬-০৭ সালে বাংলাদেশের পোলট্রি ফার্মে একটা বিপর্যয় ছিল। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে সমাধানের পথ বের করা হয়েছিল।
এইচ৫ ও এইচ৭—এ দুটি ইনফ্লুয়েঞ্জা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। এটা মানুষকেও আক্রান্ত করে। এ জন্য সরকার থেকেই এর ভ্যাকসিন করার নির্দেশ আসে। এ ভ্যাকসিনের জন্যই পোলট্রির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
বর্তমানে আবার দেশের পোলট্রি খামারগুলোতে ভাইরাস বেড়ে গেছে। নতুন নতুন ভাইরাস দেখা দিচ্ছে। এতে দেশের পোলট্রিশিেল্পর সদূরপ্রসারী ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থায় পোলট্রিশিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য পোলট্রি গবেষক, পরামর্শক ও এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একটি উচ্চ মানের কমিটি গঠনের অনুরোধ করছি।
পোলট্রির প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে ২০২০-২১ সালে প্রতিজনের ৮ কেজি মাংস ও ১০০টি ডিম খাওয়া সম্ভব। ২০২০-২১ সালে উৎপাদন এখনকার দ্বিগুণ হবে। ইনফ্লুয়েঞ্জার সমস্যা প্রাণীতে, মানুষে থাকবে। আগে এর প্রতিকারের ব্যবস্থা ছিল না। এখন প্রতিকার করা সম্ভব।
ইদানীং এইচ৯ আরেকটি ভাইরাস মুরগির বেশ ক্ষতি করছে। এটা অনেক ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও কাজ করে না। এইচ৯ ভ্যাকসিনের অনুমতি দিলে মুরগির উৎপাদন বাড়তে থাকবে।
বিশ্বের মতো আমরাও অ্যান্টিবায়োটিক কমানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। মুরগির পালক দিয়ে বিভিন্ন উপকরণ ও বর্জ্য দিয়ে বায়োগ্যাস করা যায়। এ গ্যাস রান্না ও আলো জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।

শাহ্ মুনির হোসেন
শাহ্ মুনির হোসেন

শাহ্ মুনির হোসেন: কিছু সংবাদ আমাদের আতঙ্কিত করে দেয়। ফাও (আন্তর্জাতিক খাদ্য সংস্থা) পোলট্রিকে এক, দুই, তিন...পাঁচটি সেকশনে ভাগ করেছে। অধিকাংশ পোলট্রি খামার রয়েছে সেকশন তিনে।
আমরা একটা জরিপ করে পোলট্রির ঝুঁকি নির্ণয় করার চেষ্টা করেছি। এ ক্ষেত্রে প্রতি ৩৬টি উপজেলার ২০ জন করে পোলট্রি খামারিকে নিয়ে কাজ করব। ভবিষ্যতে আরও ৩৬ উপজেলায় এভাবে কাজ করব। আমাদের উদ্দেশ্য হলো নিরাপদ উৎপাদন।
এখন সময় এসেছে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পোলট্রি খাদ্য নিরাপত্তার একটা ম্যানুয়েল তৈরি করেছি। আমরা নিজেরা কাজ করি না। আমাদের গাইডলাইন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে দিয়েছি। তারা এ ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
নিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ১০টি ব্যবস্থা প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে দিয়েছি। রাসায়নিক ও জৈবিক ইস্যুগুলো এনেছি। ফলপ্রসূ যোগাযোগের মাধ্যমে সবাইকে তদারক ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে।
হ্যাচারিতে কী ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা দেখা দরকার। আবার মধ্যস্বত্বভোগীরা ভালো ও খারাপ বাচ্চা মিশিয়ে ছোট খামারিদের কাছে বিক্রি করেন। বড় খামারিদের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু ছোট খামারিদের মান নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।
পোলট্রির জন্য পানি, অন্যান্য প্রাণী, এমনকি যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের অপরিচ্ছন্নতাও ঝুঁকির কারণ হতে পারে। সবাই মিলে সতর্ক থাকলে ভবিষ্যতে পোলট্রির ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

সুচাত শান্তিপদ
সুচাত শান্তিপদ

সুচাত শান্তিপদ: ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে আমরা পোলট্রিশিল্প করেছি। ১৮ বছর এ দেশে কাজ করছি। শুরুতেই বুঝতে পেরেছিলাম এখানে পোলট্রিশিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা পুষ্টির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছি। ভালো শস্য থেকে ভালো মানের খাবার উৎপাদনে ভূমিকা রাখছি। আমরা মানের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দিই না।
বাংলাদেশে যেমন পোলট্রি খাদ্য উৎপাদিত হয়, তেমনি বিদেশ থেকেও আমদানি হয়। সব ধরনের পোলট্রি খাদ্যের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার সচেতন থাকা প্রয়োজন। এ জন্য দরকার টিমওয়ার্ক। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে এবং সতর্ক থাকলে পোলট্রির ডিম ও মাংসের ক্ষেত্রে খাদ্যনিরাপত্তা আরও নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশে পোলট্রির মানসম্মত খাদ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখছি। এ ক্ষেত্রে অনেকের সহযোগিতা পেয়েছি। বাংলাদেশে অনেক মাঝারি ও ছোট ফার্ম রয়েছে। এদের ভূমির সমস্যা, নগদ অর্থের সমস্যা, বায়োসিকিউরিটির সমস্যা ইত্যাদি। তাই এরা ফার্মের সঠিক উন্নয়ন করতে পারছে না। এরা কীভাবে আরও ভালো করতে পারে, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
পোলট্রিশিল্পের ক্ষেত্রে বায়োসিকিউরিটি একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ শিল্পে যতই অভিজ্ঞতা থাকুক, বায়োসিকিউরিটি দিতে না পারলে বিপর্যয় আসতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

মো. আসাদুজ্জামান
মো. আসাদুজ্জামান

মো. আসাদুজ্জামান: আন্তর্জাতিক কৃষি ও খাদ্য সংস্থার মতে, একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বছরে গড়ে ১০৪টি ডিম খাওয়া প্রয়োজন। দেশে বছরে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ডিম খান গড়ে ৫০ থেকে ৬০টি।
এখন বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় তিন কোটি ডিম উৎপাদিত হয়। বছরে ১০৪টি ডিম খেতে হলে আমাদের আরও দেড় কোটি ডিম উৎপাদন করতে হবে। অনেক দেশের মতো আমরা যদি প্রতিদিন একটি করে ডিম খাই, তাহলে প্রতিদিন ডিমের প্রয়োজন হবে ১৬ কোটি।
১৬ কোটি ডিম উৎপাদনের জন্য আমাদের যে জমির প্রয়োজন, সেটা কি আছে? একটা উপায় হলো, এ শিল্পের আধুনিকায়ন ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা।
বাংলাদেশে এমন প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের প্রতিদিন ১৮ লাখ ডিম উৎপাদিত হয়। সাধারণত যেকোনো খামারে তিন থেকে চারতলার বেশি মুরগি পালন করতে দেখা যায় না। কিন্তু একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠানে ১২ তলা পর্যন্ত মুরগি পালন করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানের একটা হাউসে সাড়ে তিন লাখ মুরগি থাকে।
নীলফামারী ও পঞ্চগড়ে আমাদের দুটি ফার্ম আছে। এ দুটি ফার্মই সম্পূর্ণ নারীদের দ্বারা পরিচালিত। সিকিউরিটি গার্ড থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত নারী।
আমাদের ২০টি ব্রিডার ফার্মের মধ্যে এ দুটি ফার্ম সবচেয়ে বেশি লাভবান। ভবিষ্যতে ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণ করতে হলে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও খামারের আধুনিকায়ন করতে হবে।

এম নজরুল ইসলাম
এম নজরুল ইসলাম

এম নজরুল ইসলাম: বিভিন্ন সময় খাদ্য নিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ২০১৪ সালে আমের ফরমালিন নিয়ে ব্যাপক কথা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্যের কথা বলে আমরা যেন খাদ্য থেকে বঞ্চিত না হই, সেটা ভাবতে হবে।
বছরে প্রায় ৫৩ হাজার শিশু অপুষ্টির কারণে মারা যায়। পুষ্টিহীন একজন নারীর সন্তানও পুষ্টিহীন হয়। পুষ্টিহীনতা ছাড়িয়ে যায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এ কথা সত্যি যে পুষ্টি পরিস্থিতির লক্ষণীয় পরিবর্তন হয়নি।
পোলট্রি খাত ২০১৯ সাল পর্যন্ত করের আওতামুক্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটি আবার করের আওতায় আনা হয়েছে। এ কর সহনীয় মাত্রার অনেক বেশি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার পরও ২০১৫–১৮ সালের আমদানি নীতিতে আমদানি করা পণ্যের অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা, কস্টমস কর্তৃপেক্ষর অহেতুক হয়রানি, এইচএস কোডের জটিলতাসহ উচ্চ হারে কর আদায় হচ্ছে। এ অবস্থায় পোলট্রিশিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে আমরা সরকারের সহযোগিতা চাই। এ শিল্পের প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এগিয়ে আসবেন বলে আশা করি।

সাইদুর রহমান বাবু:
সাইদুর রহমান বাবু:

সাইদুর রহমান বাবু: সরকারের একটা পোলট্রি নীতিমালা আছে। এখানে বলা আছে কীভাবে পোলট্রিশিল্পের উন্নয়ন হবে। কিন্তু এই নীতিমালার কোনো বাস্তবায়ন নেই।
খামার করতে গেলে, ফিডমিল করতে গেলে সরকারের নীতিমালা মানতে হবে। সরকারের নীতিমালায় নিবন্ধন করতে হবে। আজ দেশে কতগুলো পোলট্রি খামার আছে, ফিডমিল আছে, সরকারের কাছে এর কোনো হিসাব নেই।
আমরা চাই, নীতিমালার মধ্য দিয়ে এ খাত এগিয়ে যাক। ধারণা করছি, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে জনসংখ্যা হবে ১৭ কোটি ৫০ লাখ। এই জনসংখ্যাকে আমরা ডিম, মাংস দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাই।
তাই সরকারের নীতি যদি বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে এটা কোনোভাবে সম্ভব হবে না। আমরা আশা করব, দ্রুত সরকারের নীতিমালা বাস্তবায়িত হবে। পোলট্রিশিল্প একটা সুশৃঙ্খল নীতিমালার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাবে।

গোলাম রহমান
গোলাম রহমান

গোলাম রহমান: এ পর্যন্ত আলোচনায় অনেক তথ্য এসেছে। বাংলাদেশে সরকার, জনগণ সবাই মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা করি। বাংলাদেশ হলো পৃথিবীতে মুক্তবাজারে সবচেয়ে আস্থাশীল জাতি। ব্যবসায়ে মুনাফা ও নিয়ন্ত্রণ—দুটোই যদি ঠিক থাকে, তাহলে মুক্তবাজারের চাকা ঘোরে।
সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যেকের সরকারকে কর দেওয়া প্রয়োজন। আমরা ভোক্তারা কী চাই? আমরা চাই মানসম্মত পণ্য ও সহনীয় দাম। দেশে এখনো নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টি অর্জিত হয়নি।
একজন আলোচক বলেছেন, প্রায় ৫৫ শতাংশ পোলট্রি আসে মাঝারি ও ছোট খামার থেকে। এসব পোলট্রিতে সব ক্ষেত্রে মান বজায় থাকে না। এসব ক্ষেত্রেও যেন পোলট্রির মান বজায় থাকে, সেটি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। উৎপাদন যদি বাড়ে, তাহলে দাম কমে আসবে।
ভোক্তারা আরও বেশি করে ডিম ও মুরগি কিনতে পারবে। তাই উৎপাদন যেন বাড়ে, সে জন্য যে নীতি নেওয়া প্রয়োজন, সরকার এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে বলে আশা করি।
দিন দিন এ শিল্প সম্প্রসারিত হচ্ছে, আরও হবে। কিন্তু পোলট্রির মানের ক্ষেত্রে যেন কোনো ব্যত্যয় না ঘটে, সেটা সতর্কভাবে বিবেচনায় নিতে হবে।

প্রিয় মোহন দাশ: দেশে সঠিক তথ্য-উপাত্ত নেই। আমরা যা-ই পরিকল্পনা করি না কেন, সবই অনুমাননির্ভর। প্রতিটি খামারের রেজিস্ট্রেশন থাকা প্রয়োজন।
একেক ধরনের খামারকে একেকটা ভাগে ফেলা উচিত। খামারগুলোকে বিভিন্ন বিভাগে ফেললে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বরং খামার করতে উৎসাহিত হবে।
পোলট্রির ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সেবা চালু করা প্রয়োজন। শিক্ষার ক্ষেত্রে পোলট্রির বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করতে হবে। এর মূল পাঠ্য হবে পোলট্রি ব্যবস্থাপনা ও রোগনিয়ন্ত্রণ।
হ্যাচারি মালিকদের সব রকম ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও বলব, সালমোনিলা ও মাইক্রোপ্লাজমা ফ্রি বাচ্চা দেওয়ার চেষ্টা করুন। বাচ্চার দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে কম রাখার চেষ্টা করুন।
ইদানীং পাশ্ববর্তী দেশ থেকে অসুস্থ বাচ্চা দেশে আসছে। যেকোনোভাবে হোক এটা প্রতিেরাধ করা জরুরি। তা না হলে এ বাচ্চার মাধ্যমে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবে।
ওষুধ কোম্পানিকে বলব যেনতেনপ্রকারে ওষুধ বানিয়ে বাজারে ছাড়বে না। তাহলে হাতুড়ি চিকিৎসা কখনো বন্ধ হবে না।
প্রযুক্তি সহায়তা মানে এই নয় যে টেকনিক্যাল পারসন ফার্মে ফার্মে গিয়ে মুরগি কাটবে। আমার ব্যক্তিগত মত হলো, অনেক প্রতিষ্ঠান টেকনিক্যাল সার্ভিসের নামে রোগ ছড়ায়। এ ক্ষেত্রে নিজেদের ল্যাব দিতে হবে। এখানে লোকজন এসে সেবা নেবে।
টিকা আমদানি না করে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা প্রয়োজন। ২০০৩ সালে শেরাটন হোটেলে বলেছিলাম, জীব নিরাপত্তার ওপর জোর দিতে হবে। এটা হলে বার্ড ফ্লু আসবে না। ২০০৯ সালে এসে সরকার এটা উপলব্ধি করেছে। ২০০৮ সালে তৈরি করা সরকার পোলট্রি নীতিতে কিছু সমস্যা আছে। এ নীতিকে সংশোধন করে প্রয়োগের উদ্যোগ নিতে হবে। কোনো নিয়মনীতি শুধু ছাপিয়ে দিলে হবে না, এটা প্রয়োগের উদ্যোগ নিতে হবে।
পোলট্রিশিল্পকে ঠিকভাবে এগিয়ে নিতে পারলে নারীদের ব্যাপক ক্ষমতায়ন ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আব্দুল কাইয়ুম: পোলট্রিশিল্প দেশে মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। পোশাকশিল্পের পরই পোলট্রিশিল্পে নারীদের বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে।
আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় দেশের মানুষ বেশি পরিমাণ ডিম ও মুরগির মাংস খেতে পারছে। পোলট্রির খাদ্যমান যেন সর্বোচ্চ পর্যায় বজায় থাকে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখবে বলে আশা করি।
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
যাঁরা অংশ নিলেন
গোলাম রহমান : সভাপতি, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
প্রিয় মোহন দাশ : অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
মসিউর রহমান : সভাপতি, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন
খালেদা ইসলাম : অধ্যাপক, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শাহ্ মুনির হোসেন : সিনিয়র ন্যাশনাল অ্যাডভাইজর, ফুড অ্যান্ড সেফটি প্রোগ্রাম, ফাও—ইউএন
সামসুল আরেফিন খালেদ : সভাপতি, ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ
মো. সিরাজুল হক : সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন,বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ
এম নজরুল ইসলাম : সদস্য, সাধারণ পরিষদ, এফবিসিসিআই
মঞ্জুর মোরশেদ খান : সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন
আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান : সভাপতি, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
সাইদুর রহমান বাবু : সাধারণ সম্পাদক, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
শুচাত শান্তিপদ : সভাপতি, সিপি বাংলাদেশ
মো. আসাদুজ্জামান : লেয়ার সেলস ইনচার্জ, কাজী ফার্মস লি.সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম : সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো