সেতু উদ্বোধনের দুই বছরেও সরানো হয়নি ফেরিঘাট

অবহেলা আর অযত্নে ফেলে রাখা হয়েছে পন্টুনসহ ঘাটের অন্যান্য সরঞ্জাম। কাজিরটেক ফেরিঘাট থেকে গতকাল তোলা l ছবি: প্রথম আলো
অবহেলা আর অযত্নে ফেলে রাখা হয়েছে পন্টুনসহ ঘাটের অন্যান্য সরঞ্জাম। কাজিরটেক ফেরিঘাট থেকে গতকাল তোলা l ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরে আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মাণ করা হয় আচমত আলী খান সপ্তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। সেতুটি উদ্বোধনের ১ বছর ১০ মাস পার হলেও ওই স্থানের ফেরিঘাটটি আজও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। ফলে ফেরি, পন্টুনসহ অন্য সরঞ্জাম অযত্নে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।

জেলা সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, মাদারীপুর-শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে ফেরি পারাপারের পরিবর্তে চীনের তত্ত্বাবধানে ২৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় আচমত আলী খান সপ্তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। ২০১৫ সালের ২০ আগস্ট ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর দীর্ঘদিন পেরোলেও কাজিরটেক এলাকার ফেরিঘাটে সরঞ্জাম স্থানান্তরের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কয়েক কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি দিনের পর দিন অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থেকে ঘাটেই নষ্ট হচ্ছে।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, ফেরিঘাটের বিভিন্ন স্থানে দুটি ইউটিলিটি টাইপ ফেরি ও তিনটি পন্টুন অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। ফেরির নিচের অংশে মরিচা পড়ে নষ্ট হতে চলেছে। পন্টুন তিনটির কয়েকটি অংশ চুরি হয়ে গেছে। যেটুকু অংশ ভালো আছে, সেটুকু আবার অবহেলায় পড়ে থেকে মাটিতে মিশে নষ্ট হচ্ছে।

এর আগে কাজিরটেক ফেরিঘাটে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ডাঙায় পড়ে থেকে মাটিতে মিশে ছয় লাখ টাকা মূল্যের একটি পন্টুন নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের দাবি, দ্রুত এই ফেরি ও পন্টুন সরিয়ে যথাযথ স্থানে ব্যবহার করলে অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে সরকার।

কাজিরটেক ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা আবদুর রব বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর সেতু নির্মাণের পর থেকে আর কোনো ফেরি চলাচল করে না এই ঘাটে। পন্টুনগুলো অনেক দিন ধরে এখানে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।

একই এলাকার ব্যবসায়ী আরাফাত হোসেন বলেন, কাজিরটেক ফেরিঘাটে এখনো দুটি ইউটিলিটি ফেরি আছে। তবে এটি এখন কোনো কাজে না আসায় অবহেলায় পড়ে নষ্ট হচ্ছে। এগুলো দেখাশোনার জন্য এখন কোনো কর্মীও নেই।

মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘ফেরি ও পন্টুন স্থানান্তরের জন্য ফরিদপুর সড়ক বিভাগকে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। তবে আশা করছি ফেরিঘাটটি শিগগিরই সরিয়ে নেওয়া হবে।’