সেতু না থাকায় দুর্ভোগে ৩৫ গ্রামের মানুষ

দুই পাশে পাকা সড়ক। মাঝখানে হড়াই নদ। সেতু না থাকায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নেই। এই চিত্র রাজবাড়ীর সদর উপজেলার বানিবহ ইউনিয়নের বারেকগ্রাম কালীবাড়ি মোড় এলাকার। ফলে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই অঞ্চলের ৩৫টি গ্রামের মানুষ। জেলা শহরে যেতে তাঁদের ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত ঘুরে যেতে হয়।
সদর উপজেলার বানিবহ, মূলঘর ও বসন্তপুর এবং বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ও জামালপুর ইউনিয়নের একাংশে পাটুরিয়া, বারুগ্রাম বাঘুটিয়া বিলের অবস্থান। এ বিলের মাঝখান দিয়ে হড়াই নদ বয়ে গেছে।
এলাকার কয়েকজন বলেন, বর্ষার সময় বিলে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। বর্ষার ঠিক আগে আবাদ হয় পাটের। শুষ্ক মৌসুমে এখানে পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদিত হয়। এসব পণ্যের জন্য জামালপুর, আড়কান্দি ও বালিয়াকান্দি হাট সুপরিচিত। এ অঞ্চলের মানুষ এসব পণ্য বিক্রির জন্য নদ পার হয়ে হাটে যায়। আবার বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে বিলের দক্ষিণ প্রান্ত ও বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষকে রাজবাড়ী শহরে যেতে হয়। কিন্তু সেতু না থাকায় বহরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি, পাটুরিয়া, নতুনচর, পুরোনোচর, বারুগ্রাম, আবাসন আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাঘুটিয়া, মাতলাখালী, চরগুয়াদাহ ও বাজার বেতেঙ্গা, জামালপুর ইউনিয়নের সর্পবেতেঙ্গা, রহমতপুর, শ্রীরামপুর, তুলশিবরাট, কোমরদিয়া, গোবিন্দপুর, জামালপুর বাজার, নলিয়াগ্রাম, ডাঙ্গাহাতিমোহন, সাঙ্গুরা, সন্ধ্যা ও মাশালিয়ার এলাকার মানুষকে বালিয়াকান্দি ঘুরে জেলা সদরে যেতে হয়। এর ফলে ৮-১৪ কিলোমিটার পথ অতিরিক্ত ঘুরতে হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, কালীবাড়ি মোড় এলাকায় হড়াই নদের দুই পাশে রাস্তা রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা থাকে। শুষ্ক মৌসুমে তা বন্ধ হয়ে যায়। নদের পানি কমে যাওয়ায় কিছুদিন আগে কালীবাড়ি মোড়ের পশ্চিম দিকে একটি সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। উত্তরে সদর উপজেলার মানুষকে পায়ে হেঁটে সাঁকো পার হতে হয়। রিকশা, ভ্যানসহ অন্য যানবাহন চলাচল করতে পারে না। দক্ষিণ পারের বাসিন্দারাও হেঁটে সাঁকো পার হন।
বারেকগ্রামের কৃষক সুশান্ত কুমার মণ্ডল বলেন, আশপাশের মধ্যে জামালপুর ও আড়কান্দির পাটের হাট সবচেয়ে বড়। এখান থেকে বিভিন্ন স্থানে পাটের চালান পাঠানো হয়। নদ পার হওয়ার পর জামালপুর হাটের দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। কিন্তু এখানে সেতু না থাকায় সরাসরি সড়কপথে যেতে অন্তত ২০ কিলোমিটার ঘুরতে হয়।
স্বর্পবেতেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পবিত্র দাস বলেন, বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন এলাকা থেকে বনভোজন ও বিনোদনের জন্য প্রচুর মানুষ এখানে ভিড় জমায়। কিন্তু সেতু না থাকায় সবার যাতায়াতে সমস্যা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সদর উপজেলার প্রকৌশলী স্বপন কুমার গুহ বলেন, ওই স্থানে সেতুর জন্য জরিপ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তসহ ৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।