সেনাবাহিনীতে স্বয়ংক্রিয় কামান ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র

সেনাবাহিনীতে যুক্ত হলো স্বয়ংক্রিয় কামান । ছবি: প্রথম আলো
সেনাবাহিনীতে যুক্ত হলো স্বয়ংক্রিয় কামান । ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত হলো স্বয়ংক্রিয় (সেলফ প্রোপেলড) কামান ও ট্যাংক-বিধ্বংসী মেটিস এম-১ ক্ষেপণাস্ত্র। গতকাল রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব সরঞ্জাম এবং অন্যান্য ট্যাংক-বিধ্বংসী অস্ত্র, হালকা সাঁজোয়া যান ও শব্দ শনাক্তকরণ যন্ত্র সেনাবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
নতুন কেনা ১৫৫ মিলিমিটার স্বয়ংক্রিয় কামানটি ‘নোরা বি-৫২ এসপি গান’ হিসেবে পরিচিত। এটি সার্বিয়ার তৈরি। এই কামান সর্বোচ্চ ৪১ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। এই কামান দিয়ে মিনিটে পাঁচটি করে গোলা ছোড়া যায়। এ ছাড়া আরও ৩৬টি গোলা মজুত রাখার স্থান আছে এই কামানে। কামানটি ব্যবহার করবে বগুড়া সেনানিবাসের একমাত্র এসপি ইউনিট, আর্টিলারি কোরের ১১ এসপি রেজিমেন্ট।
রাশিয়ার তৈরি মেটিস এম-১ ক্ষেপণাস্ত্রটি দুই কিলোমিটার দূরের ট্যাংক ধ্বংস করতে সক্ষম। এর আঘাত ৯০০ মিলিমিটার পর্যন্ত ভেদ করতে পারবে। এর একেকটি ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ৩০ কেজির মতো। সেনাবাহিনীর ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের কাছে এটি হস্তান্তর করা হয়।
চীনের তৈরি ট্যাংক-বিধ্বংসী অস্ত্র পিএফ-৯৮টি নামের অস্ত্রটি মূলত হালকা কামান। এটি ৮০০ মিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারবে। কামানটিতে রাতেও নির্ভুলভাবে গোলা নিক্ষেপের ব্যবস্থা আছে।
হস্তান্তর করা হালকা সাঁজোয়া যানটি তুরস্কের তৈরি। এটি নয়জন সৈনিক নিয়ে ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম। ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট এই যানে করে রাতেও শত্রুর ওপর নির্ভুলভাবে আঘাত করতে পারবে।
যুক্তরাজ্যে তৈরি ‘সাউন্ড রেঞ্জিং ইকুইপমেন্ট’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারি রেজিমেন্টের লোকেটিং উইংয়ের কাছে গতকাল হস্তান্তর করা হয়। এ যন্ত্র সর্বোচ্চ ২৫ কিলোমিটার দূরের গোলাবারুদের শব্দ শুনে উৎস শনাক্ত করতে সক্ষম। তবে ১৫ কিলোমিটার দূরের শব্দ নির্ভুলভাবে শনাক্ত করতে পারবে।
এসব সামরিক সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্তি উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের এভিয়েশন চত্বরে সেনাবাহিনীর আর্টিলারি ও ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট সদস্যদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জিপে করে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি টারমার্ক এলাকায় নতুন সংযোজিত বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্রও পরিদর্শন করেন। সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, বিমানবাহিনীর প্রধানসহ সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সংযোজন ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ অর্জনের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করবে। এ ছাড়া ‘মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম’সহ আরও অনেক অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রের জন্য চুক্তি সই হয়েছে। সেগুলো শিগগিরই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে সংযোজিত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যাধুনিক কামান, মিসাইল, সাঁজোয়া যান ও অন্য সরঞ্জাম যুক্ত হওয়ায় গোলন্দাজ ও পদাতিক কোর তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব সদস্যের মনোবল অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।