স্নেহের শীর্ষেন্দু পায়রা নদীতে সেতু হবে

পায়রা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছিল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দু বিশ্বাস। চিঠির উত্তরে প্রধানমন্ত্রী সেখানে একটি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন। চিঠির উত্তর পেয়ে যারপরনাই খুশি শীর্ষেন্দু।
পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র শীর্ষেন্দু। মা শীলা রানী পটুয়াখালী সমবায় অধিদপ্তরের কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর। বাবা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। চাকরির সুবাদে পটুয়াখালী শহরে বসবাস করলেও শীর্ষেন্দুদের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের ছয়আনি গ্রামে। সেতু না থাকায় নৌপথে সেখানে যাওয়ার সময় তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
শীর্ষেন্দু প্রথম আলোকে বলে, গত ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্কুলে গিয়ে সে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠিটি লেখে। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য চিঠিটি মা শীলা রানীর কাছে দেয়।
শীলা রানী বলেন, ছেলের লেখা চিঠিটি গত আগস্টে ডাকযোগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠান তিনি। ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে মুঠোফোনে তাঁকে জানানো হয়, শীর্ষেন্দুর চিঠি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
তিন পাতার চিঠিতে শীর্ষেন্দু লেখে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সালাম ও শুভেচ্ছা নেবেন। আমি একজন সাধারণ নাগরিক।...আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠিতে। আমাদের মির্জাগঞ্জ পায়রা নদী পার হয়ে যেতে হয়। এ নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ। মানুষ ভয় পায়। কখনো নৌকা ডুবে যায়। কখনো কখনো ট্রলার ডুবে যায়। আমার থেকে ছোট ভাই-বোন তাদের মা-বাবাকে হারায়। তাই আমি চাই না কেউর মা-বাবা চলে যায়। আমি আমার মা-বাবাকে প্রচণ্ড ভালোবাসি। তাদের হারাতে চাই না। তাই আপনার কাছে একটাই অনুরোধ যে, আপনি মির্জাগঞ্জ পায়রা নদীর ওপর ব্রিজের ব্যবস্থা করুন।’
এই চিঠির জবাবে ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেখেন, ‘স্নেহের শীর্ষেন্দু, তোমার চিঠি পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।...আমি জানি পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রা নদীটি অত্যন্ত খরস্রোতা। নিজের পিতা-মাতাসহ অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এই নদীকেন্দ্রিক তোমার নিরাপত্তাসচেতনতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।...মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তোমাকে আশ্বস্ত করছি।’
পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চিঠিটি ২০ সেপ্টেম্বর স্কুলে এসে পৌঁছেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শীর্ষেন্দুর হাতে তুলে দেওয়া হবে।