‘স্বর্ণের পুতুল’ কিনতে গিয়ে অপহরণের শিকার

অপহরণ
প্রতীকী ছবি

ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বছরখানেক ধরে একটি মেসে ভাড়া থাকতেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার শামীম হোসেন। সেখানেই চারজনের সঙ্গে সখ্য হয় তাঁর। শামীম তাঁদের বলেন, খানসামায় স্বল্পমূল্যে স্বর্ণের পুতুল ও ডলার পাওয়া যায়।

এটা শুনে বুধবার সকালে শামীমের বাড়িতে যান চারজন। একপর্যায়ে তাঁদের অপহরণ করেন শামীম ও তাঁর সহযোগীরা। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করেন ১৫ লাখ টাকা।

বুধবার সন্ধ্যায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকদিঘী ইউনিয়নের বেকিপুল বাজার এলাকা থেকে দুজনকে আটক করার পর চিরিরবন্দর থানার পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। আটক ব্যক্তিরা হলেন খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া এলাকার আনারুল ইসলাম (৩৫) এবং একই এলাকার উত্তরপাড়া গ্রামের নিতাই রায় (৩০)।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে ঢাকা থেকে খানসামায় গিয়ে চারজন শামীমের বাড়িতে অবস্থান নেন। সেখানে তাঁদের কাছ থেকে শামীমের সহযোগী আনারুল ইসলাম এসে স্বর্ণের পুতুল দেওয়ার কথা বলে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

দুপুরের পর কয়েকটি মোটরসাইকেলে চারজনকে তুলে বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরানো হয়। এরই মধ্যে তাঁদের স্বজনদের কাছে বিকাশের মাধ্যমে আরও ৫০ হাজার টাকা নেন চক্রের অন্যতম সদস্য আনারুল। সন্ধ্যায় চিরিরবন্দর উপজেলার বেকীপুল বাজার এলাকায় অপহরণকারীরা ছেড়ে দিতে চাইলে তাঁরা চিৎকার শুরু করেন। তাঁদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন আনারুল ও নিতাই রায়কে আটক করে চিরিরবন্দর থানায় খবর দেন।

চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার বলেন, স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে দুজনকে আটক করা হয়েছে। যেহেতু খানসামা উপজেলার ঘটনা, তাই তাঁদের খানসামা থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা থেকে যাওয়া চারজন হলেন কামরাঙ্গীরচর এলাকার লিটন মুন্সি (৫০), মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার হৃদয় হোসেন (২২), ঢাকার দোহার থানার এক তরুণী (২২) ও চাঁদপুরের মতলব থানার এক নারী (৪০)।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়েছে এবং দুজন অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে। উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অপহৃতরা বলছেন তাঁরা গরু কিনতে এসেছেন। তবে আটক প্রতারক চক্রের দুই সদস্য বলছেন, তাঁরা ডলার বিক্রির জন্য টাকা নিয়েছেন। আটক আনারুল ও নিতাই চন্দ্রের বিরুদ্ধে খানসামা থানায় আগেও প্রতারণার দুটি মামলা রয়েছে।

ওসি জানান, এ বিষয়ে থানায় অপহৃত লিটন মুন্সি বাদী হয়ে একটি প্রতারণা মামলার প্রক্রিয়া চলমান। প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের আটকের চেষ্টা চলছে। প্রতারক চক্রের সদস্যদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।