
ছয় দফা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের প্রতিটি আন্দোলনে জনমত তৈরি করেছিলেন দৈনিক ইত্তেফাক-এর প্রতিষ্ঠাতা তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। ৪৭ বছর পর আজও তাঁর আদর্শ উজ্জ্বল।
গতকাল বুধবার মানিক মিয়ার ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এই সভার আয়োজন করে জাতীয় পার্টি (জেপি)। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, একজন ব্যক্তিই যে তাঁর লেখা দিয়ে একটা জাতিকে জাগাতে পারেন, তাঁর প্রমাণ মানিক মিয়া। বঙ্গবন্ধুর বিশাল সংগ্রামকে প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইত্তেফাক। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে তাঁর এই ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আজকের তরুণ প্রজন্মের সাংবাদিকেরাও এই পথে হাঁটবেন বলেও আশা করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ছয় দফা থেকে শুরু করে পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধুর যে স্বাধীনতা আন্দোলন, সেই আন্দোলনে জনমত গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন মানিক মিয়া।
অনুষ্ঠানের সভাপতি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু যেকোনো সমস্যায় মানিক মিয়ার কাছে ছুটে যেতেন। মানিক মিয়া পরামর্শ দিতেন। এরপর বঙ্গবন্ধু মাঠে নামতেন। আর মানিক মিয়া কলাম লিখতেন। এভাবেই স্বাধিকার ও স্বাধীনতার আন্দোলন এগিয়েছে। তাঁর কলাম ছিল অসাধারণ। এমন সাহসী সাংবাদিক বিরল। তবে মানিক মিয়া যেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন, সেই বাংলাদেশ গড়তে হলে ধনী-গরিবের বৈষম্য কমাতে হবে।
বিশিষ্ট আইনজীবী আমীর-উল-ইসলাম বলেন, ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যখন অসুস্থ হয়ে শেষবারের মতো ঢাকা থেকে পাকিস্তানে চলে যাচ্ছেন, তখন নেতা-কর্মীরা তাঁকে ঘিরে ধরেছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, তোমাদের জন্য আমি মাঠ আর কলম রেখে যাচ্ছি। মাঠের দায়িত্ব মুজিবের। আর কলমের দায়িত্ব মানিক মিয়ার। এই দুজন যত দিন আছেন, তত দিন মুক্তি আর অধিকার সংগ্রামের আন্দোলন চলবে।’
অনুষ্ঠানে মানিক মিয়ার ছেলে বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু উপস্থিত ছিলেন।
৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মানিক মিয়া পরিষদ গতকাল টিকাটুলীতে পরিষদের কার্যালয়ে আরেকটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। এ ছাড়া বরিশাল বিভাগ সমিতিও গতকাল তাদের কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে।