স্বাস্থ্যের বাতিল হওয়া সেই নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে আইনি নোটিশ

প্রতীকী ছবি

ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান ও কার্ডিওগ্রাফারের আড়াই হাজারের বেশি পদে নিয়োগ কার্যক্রম গত ২০ সেপ্টেম্বর বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ২৮ সেপ্টেম্বর অফিস আদেশ দেয়। নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও অফিস আদেশ বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালকসহ (প্রশাসন) বরাবরে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। মেডিকেল টেকনিশিয়ান পদে নিয়োগপ্রার্থী শুভ মণ্ডলসহ কয়েকজন প্রার্থীর পক্ষে আইনজীবী শেখ জাহাঙ্গীর আলম ওই নোটিশ পাঠান।

এর আগে গত বছরের ২৯ জুন মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ৮৮৯টি, মেডিকেল টেকনিশিয়ানদের ১ হাজার ৬৫০টি, কার্ডিওগ্রাফার পদে ১৫০ জনসহ মোট ২ হাজার ৬৮৯টি পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। করোনাকালে সরকারি হাসপাতালে কারিগরি জনবলের ঘাটতি মেটাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই সব পদে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অনিয়ম নিয়ে গত ১২ এপ্রিল প্রথম আলোয় ‘এখন এক কোটি দেব, পরে আরও পাবেন’ শিরোনামে প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি করেছিলেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পরদিন গত ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ওই জনবল নিয়োগ কার্যক্রম বিষয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, যেহেতু তদন্ত প্রতিবেদনে লিখিত পরীক্ষার খাতায় অস্পষ্টতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ রয়েছে, তাই বর্ণিত নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে পুনরায় স্বল্প সময়ে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করা হোক। ইতিপূর্বে যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের নতুনভাবে আবেদনের প্রয়োজন নেই; তাঁরা নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

এরপর গত ২৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অফিস আদেশ জারি করে। এর শেষাংশে বলা হয়, ২০ সেপ্টেম্বরের নির্দেশনার আলোকে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান ও কার্ডিওগ্রাফার পদে চলমান জনবল নিয়োগের কার্যক্রম বাতিল করা হলো। পুনরায় নতুন নিয়োগে স্বল্প সময়ের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে। ইতিপূর্বে যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের নতুনভাবে আবেদনের প্রয়োজন নেই; তাঁরা নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে এতে উল্লেখ করা হয়। এ অবস্থায় নিয়োগ বাতিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও অফিস আদেশ নিয়ে আজ আইনি নোটিশ পাঠানো হলো।

নোটিশদাতাদের আইনজীবী শেখ জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ২০ সেপ্টেম্বরের সিদ্ধান্ত ও ২৮ সেপ্টেম্বরের অফিস আদেশ বাতিল চেয়ে শুভ মণ্ডলসহ ৩০০ প্রার্থীর পক্ষে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পর তিনটি পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও প্রকাশিত ফলাফলের ভিত্তিতে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে নোটিশদাতাদের নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা তথা উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।