স্বাস্থ্য খাতের মুক্তি বহুপক্ষের সম্মিলনে

হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা একটি পরিপূর্ণ টিমওয়ার্ক

সবার চোখের সামনেই হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ল বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা কোভিড–১৯ অতিমারির প্রাথমিক অভিঘাতেই। অথচ অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের অনেকেই এবং আমরা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সূচকের অর্জন নিয়ে গর্ব করি। এ রকম অবস্থায় স্বাস্থ্য খাতের এমন আকস্মিক দুর্দশা সবাইকে হকচকিত করেছে। তবে স্বাস্থ্য খাতের যেসব সূচকের অগ্রগতি প্রশংসিত হয়েছে, তা মূলত জনস্বাস্থ্য এবং সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসংশ্লিষ্ট এবং মূল কাজটি করেছেন মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাস্থ্য খাতের অধীনে চিকিৎসাসেবায়ও প্রচুর উন্নতি এবং বিস্তৃতি ঘটেছে। তবে তার বড় অংশজুড়ে রয়েছে বেসরকারি খাত। উইপোকা যেমন ভেতরে–ভেতরে সব খেয়ে চাকচিক্যময় খোলসটুকু রেখে দেয়, যা একসময় সামান্য চাপেই পিষ্ট হয়ে যায়; বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার এবং সুনির্দিষ্ট করে বললে চিকিৎসাব্যবস্থার কাঠামো উইপোকার বিশাল পালে আক্রান্ত হয়েই ছিল; কোভিডের অভিঘাতে তা সবার কাছে সুস্পষ্ট হলো মাত্র।

শহুরে মানুষের কাছে, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও ধনীদের কাছে এ এক অপরিচিত ও অভাবনীয় অসহায় বিষয়। অ্যাম্বুলেন্সে রোগী নিয়ে হাসপাতালের পর হাসপাতালের দরজায় কড়া নেড়েও কোনো লাভ হয়নি; রোগী মারা গেছেন অ্যাম্বুলেন্সেই, বিনা চিকিৎসায়। চিকিৎসক মেয়ে সরকারি কর্মকর্তা বাবাকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়েছেন শুধু হাসপাতালে একটি শয্যার জন্য। উড়োজাহাজ কেনার ক্ষমতা রাখেন, এমন ধনী ব্যক্তি না পেরেছেন বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে; না পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা। আইসিইউর ভেতরে দুই ভাই ভাগ করে পেয়েছেন একটি ভেন্টিলেটরের সেবা। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার মতো আবেগজাগানিয়া এমন অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে উলুধরা স্বাস্থ্যব্যবস্থার। সব উদাহরণের একটিই উপসংহার, আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার আমূল সংস্কার দরকার। এই নিবন্ধে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় বেসরকারি খাতের সাম্প্রতিক খতিয়ানকে প্রাধান্য দিয়ে দু–একটি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ ও সংস্কারের সূচনার সম্ভাব্য উপায় নিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।

খায়রুল ইসলাম

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর বহুপক্ষতা (প্লুরালিজম)। এখানে সরকার, বেসরকারি খাত, এনজিও, সামাজিক সংগঠন, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, আনানুষ্ঠানিক বেসরকারি সেবাদানকারীসহ অনেকেই স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত। গণতন্ত্রে বহুপক্ষতা উৎসাহব্যঞ্জক হলেও কোনো দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ‘অনিয়ন্ত্রিত’ বহুপক্ষতা ও বিশাল সংখ্যা—উভয় মিলে অরাজকতার জন্ম দিতে পারে। বিষয়টি বোঝার জন্য কিছু সংখ্যা উল্লেখ করছি। বাংলাদেশের সরকারি খাতে মাত্র হাজার বিশেক ডাক্তার কাজ করেন; এর দ্বিগুণসংখ্যক চিকিৎসক কাজ করেন বেসরকারি খাতে। যাঁরা সরকারি খাতের চিকিৎসক, তাঁরাও অফিসের সময় শেষে প্রাইভেট হয়ে যান। সরকারি খাতে আড়াই হাজার হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৫৫ হাজারের মতো; অথচ বেসরকারি খাতে শয্যাসংখ্যা প্রায় এর দ্বিগুণ। সরকারি খাতে আড়াই হাজার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরির বিপরীতে বেসরকারি খাতে নিবন্ধনকৃত ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরির সংখ্যা চার গুণ বেশি, প্রায় ১০ হাজার! স্নাতকোত্তর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ থেকে শুরু করে নার্সিং স্কুল, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, প্যারামেডিকেল, মেডিকেল টেকনোলজি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদি, ইউনানি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দ্বিগুণ থেকে দুই শ গুণ।

এ সবকিছু ছাপিয়ে বেসরকারি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে আছে প্রায় আড়াই লাখ ওষুধের দোকান। এদের কাছেই মানুষ প্রথমে ছুটে যায় অসুখ–বিসুখে। মোটা দাগে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে সরকারি–বেসরকারি সব মিলিয়ে যত খরচ হয়, তার দুই-তৃতীয়াংশই জনগণের পকেটের টাকা। জনগণ নিজ পকেট থেকে স্বাস্থ্য খাতে যত টাকা খরচ করে, তার দুই–তৃতীয়াংশই খরচ করে বেসরকারি খাতে; আর তার প্রায় ৭০ ভাগই যায় এই আড়াই লাখ ফার্মেসিতে ওষুধ কেনা বাবদ। দুই শ কোটি ডলারের বাংলাদেশের ওষুধশিল্প রমরমা আছে এদের মাধ্যমেই। কিন্তু মুশকিল হলো, এসব ওষুধের দোকান মুদিদোকানের মতো আচরণ করে। চাল, ডাল, তেল, লবণের মতো অ্যান্টিবায়োটিক থেকে শুরু করে যেকোনো ওষুধ যেকোনো পরিমাণে বিক্রি করতে পারেন দোকানিরা। কিন্তু কোভিড–১৯ অতিমারির প্রথম দিকে যখন আতঙ্ক তুঙ্গে, হাসপাতাল সুনসান, তখনো তাঁরা দোকান খোলা রেখেছেন; মানুষের পাশ থেকে কখনোই সরে যাননি।

স্বাস্থ্য খাতের জন্য বিপুল পরিমাণ থোক বরাদ্দ রাখলেও স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের রূপরেখা নিয়ে এখনো বুদ্ধিদীপ্ত আলাপ–আলোচনা খুব একটা হয়নি।

একইভাবে গত আট মাসে সাবান প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো কোভিড প্রতিরোধে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বার্তা ব্যাপকভাবে প্রচার করেছে; সেই সঙ্গে তাদের সাবানের বিজ্ঞাপনও প্রচার করেছে। বেসরকারি খাত মুনাফা করার জন্যই ব্যবসা করে; কিন্তু ব্যবসার সঙ্গে যদি সেবা নিশ্চিত হয়, আচরণবিধিতে উন্নয়নের বার্তা থাকে, তাহলে তাতে ব্যবসা এবং স্বাস্থ্যসেবা দুটোরই প্রসার ঘটে। বেসরকারি খাত থেকে দাতব্য চিকিৎসা প্রত্যাশা করা অবাস্তব। ওষুধের দোকানিরা করোনাকালে ব্যবসা করেছেন মানুষের পাশে থেকে, প্রচুর লাভ করেছেন, সেই সঙ্গে বিনা প্রয়োজনে উচ্চ শক্তিসম্পন্ন অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছেন, যার দীর্ঘমেয়াদি কুফলে আরেকটি অতিমারি হতে পারে। এই আড়াই লাখ ওষুধের দোকান বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় যুগপৎ সমস্যা এবং সম্ভাবনা। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি এটা নিয়ে নিশ্চুপ থাকলেও বিকেন্দ্রীকৃত মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একে সম্পদে পরিণত করা সম্ভব। স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারে এদের নিয়ে গঠনমূলক চিন্তাভাবনা করতে হবে।

ওষুধের দোকানদারেরা জনগণের পাশে থাকার যে নজির স্থাপন করতে পারলেন, বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি এবং হাসপাতাল ঠিক তার বিপরীত আচরণ করল। রাতারাতি সরকারি–বেসরকারি সব চিকিৎসকের প্রাইভেট প্র্যাকটিস, বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে গেল বা দারুণভাবে কমে গেল; এমনকি ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিগুলোও শামিল হলো একই কাতারে। কিডনি ডায়ালাইসিস, হার্ট অ্যাটাক, ব্রেন স্ট্রোক—এ রকম জরুরি রোগীর ভর্তিপ্রক্রিয়া জটিল হতে শুরু করল। একদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোভিড টেস্ট করা সম্ভবপর হচ্ছিল না; অন্যদিকে কোভিড টেস্ট ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা যাচ্ছিল না। সরকারের তরফ থেকে বেসরকারি হাসপাতাল বা ল্যাবকে টেস্ট করার অনুমতি দিতে অহেতুক অনেক দেরি করা হয়। অথচ সমালোচনার সমস্ত তির প্রাইভেট সেক্টরের দিকে ধাবিত হচ্ছিল। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্টাফরা রোগীর প্রতি যে আচরণ এবং দায়িত্ববোধ দেখিয়েছেন, তা কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে।

সংস্কারের জন্য এসব ক্লিনিক ব্যবসায়ীদের এবং সেখানকার সেবাদানকারীর মনোজগৎ ও আচরণের মূলে যেতে হবে। একটি সূচকই বলে দেয় সারকথা—প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রসবের ৭০ ভাগই সিজারিয়ান করে হয়, যা পৃথিবীর সর্বোচ্চ, প্রায় বিনা মূল্যে লেখাপড়া করে সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে প্রতিবছর ৪ হাজার চিকিৎসক বের হচ্ছেন। পক্ষান্তরে ৩০–৪০ লাখ টাকা খরচ করে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে বের হচ্ছেন ৬ হাজার চিকিৎসক। দুই শ্রেণির মূল্যবোধ এবং প্রণোদনায় ব্যাপক পার্থক্য। একই পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় নার্সিং, টেকনোলজিসহ চিকিৎসাসেবা–সংক্রান্ত সব স্টাফের বেলায়। অথচ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা একটি পরিপূর্ণ টিমওয়ার্ক। মোটিভেশন তথা প্রণোদনার এমন বিরাট পার্থক্য নিয়ে কোনো টিমওয়ার্ক সফল হওয়া দুষ্কর। তাই চিকিৎসাসেবায় যাঁরা আসবেন, তাঁদের সবার জন্য সেবা ও পেশাগত নৈতিকতা ও প্রণোদনার শিক্ষা উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় থেকেই শুরু করা উচিত। এর পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা–সংক্রান্ত সব কারিকুলামে নৈতিকতা ও প্রণোদনার সমজাতীয় কোর্স প্রবর্তন করা উচিত।

প্রায় আট মাস পর, অতীতের দিকে তাকিয়ে আমরা বিনা দ্বিধায় বলতে পারি যে অতিমারি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভেতর বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় ছিল অতি দুর্বল এবং টিমওয়ার্ক ছিল না বললেই চলে। জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ মন্ত্রণালয়ের আমলাদের কাছে গুরুত্ব পায়নি। তাঁদের মিথস্ক্রিয়ায় সদ্ভাবের চেয়ে আন্তক্যাডার স্নায়ুযুদ্ধই প্রধান। উপরন্তু প্রথাগতভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের চিন্তাজগৎ সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থাকেন্দ্রিক। স্বাস্থ্যব্যবস্থা কেবল সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়ে নয়, বরং সক্ষমতায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বেসরকারি এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের সব প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত। সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং সমগ্র দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা তথা জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থার মধ্যে যে সংখ্যাগত, গুণগত ও দায়িত্বগত পার্থক্য আছে, তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পেশাজীবী নেতাদের অনুধাবন করতে হবে এবং তাঁদের অনুধাবন কাজের মাধ্যমে দৃশ্যমান করতে হবে।

সবার জন্য সমমানের স্বাস্থ্যসেবা তথা সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বদরবারে অঙ্গীকার করেছেন। অতিমারি মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত কিছু পদক্ষেপ আশা জাগিয়েছে যে সবার জন্য সমমানের স্বাস্থ্যসেবা সরকার চাইলে নিশ্চিত করতে পারে। ধনী-গরিবনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব নাগরিক যেন সমমানের কোভিড রোগের চিকিৎসাসেবা পেতে পারেন, সে জন্য সরকার সিএমএইচ, কুর্মিটোলা, মুগদা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইত্যাদির পাশাপাশি বেসরকারি খাতের হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল এবং আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিনে নিয়েছিল। পুলিশ বাহিনীও বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালের কিছু শয্যা কয়েক মাসের জন্য কিনে নিয়েছিল। কোভিড মোকাবিলার সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে এসব ঘটনা খুব ছোট হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অর্থাৎ সরকার চাইলে এবং অর্থায়ন করলে সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতাল থেকেও সাধারণ জনগণের জন্য উন্নত মানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা যায়। এতে ধনী-গরিবনির্বিশেষে একই মানের সেবা পেতে পারেন। এই উদাহরণ সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার মডেল আকারে চালু করে সংস্কারের মূলনীতি দৃশ্যমান করা সম্ভব, যেখানে সরকার সেবাদানের পাশাপাশি সেবার মান নির্ধারণ, নিয়ন্ত্রণ, নিশ্চিতকরণ এবং বেসরকারি খাত থেকে সেবা কিনে নিয়ে সবার জন্য সমমানের সেবা নিশ্চিত করবে।

বর্তমান অর্থবছরে সরকার স্বাস্থ্য খাতের জন্য বিপুল পরিমাণ থোক বরাদ্দ রাখলেও স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের রূপরেখা নিয়ে এখনো বুদ্ধিদীপ্ত আলাপ–আলোচনা খুব একটা হয়নি। এমনকি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খসড়া দলিলেও গতানুগতিক ধারার বাইরে আমূল সংস্কারমূলক কোনো দিকনির্দেশনা দেখা যায়নি। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বরেণ্য শিক্ষাবিদ কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে শিক্ষা খাতের সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করেছিলেন। আমরা চাই, বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথে স্বাস্থ্য খাতের আমূল সংস্কারের জন্য সে রকম একটি স্বাস্থ্য কমিশন অচিরেই গঠন করবে, যে কমিশন স্বাস্থ্য খাতের বহুপক্ষীয় অংশীজনসহ সব শ্রেণির ভোক্তা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে সংস্কারের রূপরেখা প্রণয়ন করবে। আমরা আশাবাদী; স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই স্বাস্থ্য খাতের আমূল সংস্কারের রূপরেখা কর্মসূচি আকারে প্রয়োজনীয় অর্থায়নসহ বাস্তবায়িত হবে।


খায়রুল ইসলাম: জনস্বাস্থ্য পেশাজীবী এবং ওয়াটারএইডের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক। নিবন্ধে উল্লেখিত মতামত লেখকের নিজস্বা; সংস্থার কোনো দায় নেই।