হল ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল মঙ্গলবার হল ছেড়েছেন। গত রোববার বাসচাপায় ছাত্র নিহত হওয়ার জের ধরে ক্যাম্পাসে ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে পরদিন সকালে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরিবহন ধর্মঘট শুরু হওয়ায় ছাত্ররা তখন হল ছাড়তে পারেননি।
উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল ছেড়েছেন। আগামীকাল (আজ) বুধবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস চলবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির পরবর্তী সভায় স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রমের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা একটি বাসের চাপায় বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান ওরফে টিটু নিহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক ভবনের ও উপাচার্যের ভবনের নিরাপত্তাকক্ষের জানালা ভাঙচুর এবং ভাড়া করা ৩৫টি বাসে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সোমবার সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ওই সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়তে পারেনি। বিষয়টির সমাধান করতে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বৈঠকে উভয় জেলার পরিবহন মালিক সমিতিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে তাঁরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন।
ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত চালকের শাস্তি ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোট। গতকাল দুপুরে জোটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো চালকের শাস্তি ও নিহত ছাত্রের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ‘নির্দেশদাতা প্রক্টরকে’ অবিলম্বে অপসারণ ও হামলায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিচার, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় চালু করে স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা, আবাসন-সংকট নিরসন করে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক ব্যবস্থা চালু, টিটুর ভাস্কর্য ও টিটুর নামে চত্বর স্থাপন করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চলাচলের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা।