হাতের নাগালে ভেন্ডিং মেশিন, মাসিক নিয়ে অস্বস্তি ও ভোগান্তি কমেছে নারীদের

রাজধানীর আদাবরে বেসরকারি সংগঠন রিয়াদুল মুসলিমাতের এক শিক্ষার্থী ভেন্ডিং মেশিন থেকে স্যানিটারি প্যাড নিচ্ছে
ছবি: মানসুরা হোসাইন

মারিয়া আক্তারের মাসিকের সময় দিনে কম করে হলেও তিনটি স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে হয়। ১৬ মাস আগেও মারিয়া এ সময় হয় কাপড় ব্যবহার করত, না হয় পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে স্যানিটারি প্যাড কিনে ব্যবহার করত। সৎবাবা এবং সংসারে অভাব থাকায় সব সময় সে প্যাড কিনতে পারত না। তবে এ নিয়ে মারিয়ার অস্বস্তি ও ভোগান্তি দূর হয়েছে। ভেন্ডিং মেশিন থেকে হাতের নাগালে বিনা মূল্যে এখন স্যানিটারি প্যাড পাচ্ছে সে।

রাজধানীর আদাবরে রিয়াদুল মুসলিমাতের পাঁচতলা আবাসিক ভবনে গিয়ে কথা হয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তারের সঙ্গে। বেসরকারি সংগঠন রিয়াদুল মুসলিমাত এতিম ও সুবিধাবঞ্চিত মেয়েশিশুদের খাবার ও পড়াশোনার ব্যবস্থা করছে। বিনা মূল্যে সেলাইসহ বিভিন্ন কারিগরি কাজও শেখাচ্ছে। এখানে বর্তমানে মারিয়াসহ বিভিন্ন বয়সী ৫০ জন মেয়ে আছে। এসএসসি পর্যন্ত এবং কেউ চাইলে এরপরও পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটিতে ১০ বছর ধরে আছে মারিয়া। ভেন্ডিং মেশিন বসানোর পর প্রতিষ্ঠানটির মেয়েদের (যাদের মাসিক হয়েছে) প্রত্যেকের নামে একটি করে কার্ড করা হয়েছে। হোস্টেল সুপারের কাছ থেকে সেই কার্ড নিয়ে মেয়েরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী রাত বা দিনে যখন দরকার, তখনই স্যানিটারি প্যাড পাচ্ছে। ভেন্ডিং মেশিনে কার্ড ধরলে একটি করে স্যানিটারি প্যাড বের হয়।

রিয়াদুল মুসলিমাতের মেয়েদের জন্য এ ভেন্ডিং মেশিন (একধরনের যন্ত্র, যাতে মুদ্রা বা ক্রেডিট কার্ড দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পণ্য চলে আসে) বসানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে সংযোগ কানেকটিং পিপল ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

১৯৯০ সালে রিয়াদুল মুসলিমাতের যাত্রা শুরু হয়েছিল নূরসিয়া হকের হাত ধরে। প্রতিষ্ঠানটি চলছে সদস্য এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া সহায়তার মাধ্যমে। নূরসিয়া হক ২০১৮ সালে মারা যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁর পুত্রবধূ সৈয়দা লাসনা কবীর।

ভেন্ডিং মেশিন থেকে দিন বা রাত যখন প্রয়োজন, তখনই স্যানিটারি প্যাড নেওয়া যাচ্ছে। এটা মেয়ে ও নারীদের মধ্যে স্বস্তি এনেছে
ছবি: মানসুরা হোসাইন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক লাসনা কবীর প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠানে থাকা, খাওয়া, সেলাই শেখা—এ ধরনের সুযোগগুলো বিনা মূল্যে পাচ্ছে মেয়েরা। তবে মাসিক ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলোয় সংগঠনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা করা সম্ভব ছিল না। ভেন্ডিং মেশিন বসানোর আগে বাজারের চেয়ে কম দামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্যানিটারি প্যাড কিনে রাখা হতো। কোনো মেয়ের পক্ষে কিনে ব্যবহার করা সম্ভব হলে তারা তা কিনে ব্যবহার করত। আর এখন মেয়েরা যখন প্রয়োজন, তখনই বিনা মূল্যে তা পাচ্ছে।

তার কাছে ১০ টাকার যে নোট ছিল, তা পুরোনো থাকায় সে কোনোভাবেই মেশিন থেকে প্যাড বের করতে পারেনি। শিক্ষার্থীরা জানায়, ভেন্ডিং মেশিনটি ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষকেরা তাদের আরেকটু বুঝিয়ে দিলে সুবিধা হতো।
ভিকারুননিসার ধানমন্ডি শাখার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী

মেয়েরা এখন আর মাসিক নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পায় না। পেটব্যথাসহ নানা সমস্যাও মেয়েদের কম হচ্ছে। শুধু রিয়াদুল মুসলিমাত নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পোশাক কারখানা, করপোরেট অফিসের নারী ও শিক্ষার্থীরা হাতের নাগালে ভেন্ডিং মেশিন থেকে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী জানাল, করোনার পরে যখন প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলে, তখন স্কুলে গিয়ে দেখে, তাদের স্কুলে একটি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। সে আরও জানায়, সে দুই দিন ভেন্ডিং মেশিন থেকে স্যানিটারি প্যাড নিয়ে ব্যবহার করেছে। স্কুলে গেলে আগে সব সময় মাসিক নিয়ে একধরনের অস্বস্তি হতো।

কিন্তু এখন আর তা নিয়ে চিন্তা নেই। স্কুলে গিয়ে যেদিন বুঝতে পারল তার মাসিক শুরু হয়েছে, সেদিন তার ব্যাগে প্যাড ছিল না। সে তখন ভেন্ডিং মেশিন থেকে প্যাড নেয়।এখানে ১০ টাকা (পুরোনো টাকা দিলে সমস্যা হয়) দিয়ে প্যাড নিতে হয়। একবার তার কাছে টাকা ছিল না, তখন সে তার বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্যাড নিয়েছিল।

ফ্রিডম হাইজিন কর্নার নামে মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলসহ কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, টিএসসি, চারুকলা, বিজ্ঞান গ্রন্থাগারসহ বিভিন্ন জায়গায় বসেছে স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন। এসব স্থান থেকে ১০ টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্যানিটারি প্যাড সংগ্রহ করতে পারছেন।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ধানমন্ডি শাখার নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, তার কাছে ১০ টাকার যে নোট ছিল, তা পুরোনো থাকায় সে কোনোভাবেই মেশিন থেকে প্যাড বের করতে পারেনি। শিক্ষার্থীরা জানায়, ভেন্ডিং মেশিনটি ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষকেরা তাদের আরেকটু বুঝিয়ে দিলে সুবিধা হতো।

এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেইলি রোডে মূল ক্যাম্পাসের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, স্কুলে এমন সুবিধা আছে, তা তাঁকে মেয়ে জানায়নি। এই প্রতিবেদকের কাছ থেকে প্রথম শুনলেন। এই অভিভাবকের মতে, তাহলে তো মেয়ের মাসিক নিয়ে এখন নিশ্চিন্ত থাকা যাবে।

এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ ১০০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে।

এসব ভেন্ডিং মেশিন বসানোয় হাতের নাগালে স্যানিটারি প্যাড পাওয়ার পাশাপাশি বাজারের তুলনায় কম দামেও তা পাওয়া যাচ্ছে। বাইরে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এক পিস স্যানিটারি প্যাডের জন্য কম করে হলেও ১৪ টাকা লাগলেও ভেন্ডিং মেশিন থেকে তা ১০ টাকা বা কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে আরও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান এটি দিচ্ছে বিনা মূল্যে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ভেন্ডিং মেশিন থেকে স্যানিটারি প্যাড নিচ্ছে এক শিক্ষার্থী
ছবি: সৈয়দ জাকির হোসেন

২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) উদ্যোগে এবং এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চালু হয়েছে স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন। এ মেশিনের উদ্বোধন করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

ফ্রিডম হাইজিন কর্নার নামে মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলসহ কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, টিএসসি, চারুকলা, বিজ্ঞান গ্রন্থাগারসহ বিভিন্ন জায়গায় বসেছে স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন। এসব স্থান থেকে ১০ টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্যানিটারি প্যাড সংগ্রহ করতে পারছেন।

ডাকসুর সাবেক সদস্য ও স্যানিটারি প্যাডের ভেন্ডিং মেশিন বসানোর অন্যতম উদ্যোক্তা তিলোত্তমা সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ভেন্ডিং মেশিন বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্যই মেশিনগুলো বসানো হয়েছে। বাজারে স্যানিটারি প্যাডের দাম বাড়লেও ছাত্রীরা ১০ টাকা দিয়েই একটি প্যাড পাচ্ছেন। এতে শুধু স্যানিটারি প্যাডের ব্যবহার বেড়েছে, তা–ই নয়, প্যাড নিয়ে যে ট্যাবু, তা–ও দূর করা সম্ভব হচ্ছে।’

পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকেরাও ভেন্ডিং মেশিন থেকে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন। শিন শিন গ্রুপ সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আশুলিয়া, সাভার ও চট্টগ্রামের মোট পাঁচটি কারখানায় ভেন্ডিং মেশিন বসিয়েছে। পাঁচটি কারখানার ছয় হাজার নারী শ্রমিক এবং সেখানে কর্মরত অন্য নারীরা গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ সুযোগ পাচ্ছেন।

শিন শিন গ্রুপের পরিচালক মিফরাই মোস্তারী প্রথম আলোকে বলেন, কর্ণফুলী ইপিজেড, আদমজী ইপিজেডসহ পাঁচটি কারখানার নারী শ্রমিকদের এখন আর মাসিক নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে না। মেশিনগুলো বসানোর আগে নারীরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কেউ কাপড় ব্যবহার করতেন বা কেউ বাজার থেকে কিনে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতেন। তখন নারী শ্রমিকদের কাজে অনুপস্থিতির হার বেশি ছিল। হাইজিনগত সমস্যা বা স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি ছিল। এখন নারীরা অতি প্রয়োজনীয় পণ্যটি পাচ্ছেন একদম বিনা মূল্যে।

আপাতত নারীরা তাঁদের প্রতিষ্ঠানের কার্ড দিয়ে মাসে এক প্যাকেট (যাঁর যাঁর প্রয়োজন অনুযায়ী পাঁচটি বা সাতটির এসএমসির জয়া স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্যাকেট) স্যানিটারি প্যাড পাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠান বিশেষ প্রয়োজনে পাশে আছে—নারী কর্মীদের মনে এ অনুভূতিও দৃঢ় হয়েছে। সব মিলে শুধু নারী কর্মীরাই উপকৃত হচ্ছেন, তা–ই নয়, প্রতিষ্ঠানও লাভবান হচ্ছে।

মিফরাই মোস্তারী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরেই নারী কর্মীদের মাসের এ বিশেষ দিনগুলোয় পাশে থাকার কথা ভাবছিলাম। কেননা, নারী শ্রমিকদের দিনের বেশির ভাগ সময় কারখানাতেই কাটাতে হয়। আর মাসিকের দিনগুলোয় নারী শ্রমিকেরা বেশ অস্বস্তিতে থাকতেন।’

রেজওয়ান আহমেদ নূর একজন প্রকৌশলী। তিনি দুই কিশোরী মেয়ের বাবা। অনেক দিন থেকেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য, বিশেষ করে মাসিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করতে চাইছিলেন। ভার্টিক্যাল ইনোভেশনস নামের প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ান আহমেদ নূর দেড় বছর ধরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সাভার, রংপুর, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, করপোরেট অফিস ও পোশাক কারখানায় মোট ৯২টি ভেন্ডিং মেশিন বসিয়েছেন বাণিজ্যিকভাবে। রাজধানীর বাড্ডায় কারখানায় চার ধরনের ভেন্ডিং মেশিন বানানো হচ্ছে। একেকটি মেশিন বানাতে ১৮ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়।

রেজওয়ান আহমেদ নূর প্রথম আলোকে বলেন, এ পর্যন্ত ২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১০টি পোশাক কারখানা, ১৮টি অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে বানানো জ্যোতি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বসানো এসব মেশিন থেকে কোনো নারী চাইলে বিকাশের মাধ্যমেও স্যানিটারি প্যাডের প্যাকেট কিনতে পারেন।

এসব মেশিনে সরাসরি টাকা দিয়ে প্যাড নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তাঁদের আইডি কার্ড দিয়ে প্যাড নিতে পারেন। জ্যোতি ভেন্ডিং মেশিনগুলো ব্যবস্থাপনার জন্য ভার্টিক্যাল ইনোভেশনসের কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেন।

ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা (দিবা শাখার দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী) আলোচনায় আসে ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে। বিদায়ী শিক্ষার্থীরা সব সময় নিজেদের টাকায় স্কুলে অনুষ্ঠান করত। এ বছর মেয়েরা তা না করে সেই টাকা দিয়ে স্কুলকে একটি ভেন্ডিং মেশিন উপহার দিয়ে সবাইকে চমকে দেয়।

বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার হাসতে হাসতে প্রথম আলোকে বলেন, আগে মেয়েরা যাতে ব্যাগে সব সময় একটি স্যানিটারি প্যাড রাখে, তা বলে দেওয়া হতো। ভেন্ডিং মেশিন বসানোর পর মেয়েরা ব্যাগে প্যাড রাখার কথা মনেই রাখছে না। স্কুলের ২ হাজার ১০০ শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের কাছ থেকে কার্ড নিয়ে স্যানিটারি প্যাড নেওয়ার হিড়িক লেগে যায়।

নাছিমা আক্তার আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে একবার স্বাস্থ্য খাতে ১০ টাকা করে নেওয়া হয়। এ টাকা থেকে স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা হয়। এখন একটি কোম্পানি বিনা মূল্যে স্যানিটারি প্যাড দিয়েছে। তা দিয়েই চলছে। তিনি বলেন, মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন, তা না হলে শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে স্যানিটারি প্যাড দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।