১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১০ জন করে নাম দিতে পারবে রাজনৈতিক দলগুলো

আজ রোববার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে অনুসন্ধান কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে কমিটির প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
ছবি: দীপু মালাকার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চেয়েছে অনুসন্ধান কমিটি। ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেল পাঁচটার মধ্যে সিইসিসহ পাঁচটি পদে সুপারিশ করার জন্য অনধিক ১০ জনের নাম প্রস্তাব করতে পারবে দলগুলো। এ ছাড়া ব্যক্তিপর্যায়ে আগ্রহী ব্যক্তিরাও নিজ নিজ নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।

আজ রোববার রাতে এই কমিটির সাচিবিক দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শফিউল আজিমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে নাম চাওয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্তসহ প্রস্তাবিত নাম সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অথবা ই–মেইলে ([email protected]) নাম পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

এর আগে আজ বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে অনুসন্ধান কমিটির প্রথম বৈঠকে নাম চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছিলেন।

পাঁচ বছর আগে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের সময়ও রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চেয়েছিল অনুসন্ধান কমিটি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত ওই সব নাম প্রকাশ করা হয়নি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে। স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবারের মতো আইন অনুযায়ী ইসি গঠিত হচ্ছে। এ জন্য গত ২৭ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ জাতীয় সংসদে পাস হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সম্মতির পর বিলটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। অর্থাৎ এটি আইনে পরিণত হয়।

এই আইনেও আগের মতো অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমেই ইসি গঠিত হচ্ছে। ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের জন্য গতকাল শনিবার এই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।
আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে (সভাপতি) গঠিত এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। কমিটি গঠনের পরদিনই আজ প্রথম বৈঠক করে অনুসন্ধান কমিটি।

নতুন আইন অনুযায়ী, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করতে হবে অনুসন্ধান কমিটিকে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, অনুসন্ধান কমিটি চাইলে ১৫ কার্যদিবসের আগেও ইসি গঠনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করতে পারবে।

অনুসন্ধান কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য ২ জন করে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে। এ ১০ জনের মধ্য থেকে সিইসিসহ ৫ জনকে নিয়ে ইসি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।

অনুসন্ধান কমিটির কাজ সম্পর্কে আইনে বলা হয়েছে, এই কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করা হবে।