১১ বছর পর মামলার কার্যক্রম শুরু

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী টিংকু দাশের বিরুদ্ধে ১৩ বছর আগের একটি হত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলার কার্যক্রম ১১ বছর স্থগিত ছিল।

তবে এই মামলার অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চলে। ১১ বছর আগে রায় দেওয়া হয়। রায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড, তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সাতজনকে খালাস দেন আদালত।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে টিংকু দাশের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম আবার শুরু হয়। আদালতে হাজির হওয়ার জন্য টিংকু দাশের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন আদালত।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ১২ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরের শেরশাহ কলোনি এলাকার শফিকুল আলমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি নগর ছাত্রদলের তথ্যবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে তাঁকে খুন করা হয় বলে তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে। এ ঘটনায় শফিকুলের মা নুর নাহার বেগম বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ছাত্রদলের তৎকালীন নেতা টিংকু দাশসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

২০০৮ সালে পুলিশের করা সন্ত্রাসীদের তালিকায় টিংকু দাশের নাম রয়েছে।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ৪ এপ্রিল মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। সে বছরের ২৫ জুন উচ্চ আদালত টিংকু দাশের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। তবে মামলার অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলে। ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক এই হত্যা মামলায় রায় দেন। মামলার রায়ে আবদুল কাদের, আবদুল মালেক ও মো. জাহাঙ্গীর নামের তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড; মো. আফসার, মো. সাবের ও লুৎফুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সাত আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি আইয়ুব খান প্রথম আলোকে বলেন, টিংকু দাশের মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া আদেশ গত ১৩ অক্টোবর প্রত্যাহার হয়। গত ৩১ অক্টোবর এই আদেশ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এসে পৌঁছায়। এরপর আসামি টিংকু দাশকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন আদালত। ১৭ ও ২৩ নভেম্বর ধার্য দিনে তিনি আদালতে হাজির হননি। আদালত আগামী ২৯ নভেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

পাঁচলাইশ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) গিয়াস উদ্দিন ১১ নভেম্বর আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, নগরের বাদুড়তলায় টিংকু দাশের ঠিকানায় গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আট বছর আগে তিনি ওই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।

টিংকু দাশকে গত বছরের ১৫ জুন নাশকতার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছয় মাস আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের উপকারাধ্যক্ষ জাহেদুল আলম।

মামলার বাদী ও নিহত শফিকুল আলমের মা নুর নাহার বেগম বলেন, টিংকু দাশের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় তাঁরা খুশি।

শফিকুলের বাবা মাহাবুল আলমের দাবি, টিংকু দাশের নেতৃত্বে তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।