২২ বছর পর ধানের শীষের প্রার্থী, প্রিয়াঙ্কা লড়বেন হুইপ আতিউরের বিরুদ্ধে

শেরপুর-১ (সদর) আসনে ২২ বছর পর ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এই আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলীর মেয়ে চিকিৎসক সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা। তিনি জেলার তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।
সর্বশেষ ১৯৯৬ সালের ১২ জুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন দলের জেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি প্রয়াত নজরুল ইসলাম।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ আসনে বিএনপির মূল প্রার্থী ছিলেন হযরত আলী। কিন্তু কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণখেলাপির কারণে হযরত আলীর প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে—এ আশঙ্কায় দল হযরতের মেয়ে সানসিলা জেবরিনকেও বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়। এ ছাড়া জেলা বিএনপির দুই নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও ফজলুল কাদেরও মনোনয়নপত্র জমা দেন।
গত রোববার মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিনে রিটার্নিং কর্মকর্তা আনার কলি মাহবুব ঋণখেলাপির কারণে হযরত আলীর এবং মনোনয়ন বিষয়ে দলের চিঠি না থাকায় শফিকুল ইসলাম ও ফজলুল কাদেরের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। এর ফলে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সানসিলা জেবরিনের মনোনয়ন নিশ্চিত হয়ে যায়। আর এতে দীর্ঘ ২২ বছর পর শেরপুর-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী পেতে যাচ্ছেন বিএনপিদলীয় নেতা-কর্মীরা।
২৫ বছর বয়সী সানসিলা জেবরিন এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হুইপ মো. আতিউর রহমান, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী ইলিয়াছ উদ্দিনসহ পাঁচ প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়বেন। চিকিৎসক সানসিলা জেবরিন রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজের প্রভাষক।
চারদলীয় জোটের রাজনীতির কারণে বিএনপি ২০০১ ও ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ আসনটি জামায়াতে ইসলামীকে ছেড়ে দেয়। যে কারণে ওই দুটি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেয়নি। এ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন জামায়াতের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিউর রহমানের কাছে পরাজিত হন। মানবতাবিরোধী অপরাধে কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের পর এ আসনে নতুন করে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে বিএনপি। জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ায় তাঁর মেয়ে সানসিলা জেবরিন বিএনপির প্রার্থী হিসেবে লড়বেন।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তৌহিদুর রহমান গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, শেরপুর-১ আসনটি দীর্ঘদিন ধরে দলের হাতছাড়া। এবার বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছেন। দল যাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে, তাঁর পক্ষেই নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন বলে তিনি আশা করেন।
সানসিলা জেবরিন বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পর এ আসনে বিএনপি থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। এটা অনেক আনন্দের ব্যাপার। এ আসনে ধানের শীষের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। তবে এখানে আওয়ামী লীগের একজন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। একজন সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে হুইপ আতিউর রহমানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। এ জন্য নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমি মনে করি, রাজনীতিতে হারজিত থাকবেই। নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, তবে ধানের শীষের জয় হবেই।’