৩ মাস আগে উদ্ধার, এখনো দেশে ফেরানো গেল না ভারতে পাচার কিশোরীকে

প্রতীকী ছবি

ভারতের মুম্বাই শহরের একটি যৌনপল্লি থেকে তিন মাস আগে উদ্ধার করা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া এক কিশোরীকে। কিন্তু এখনো মেয়েটিকে দেশে ফেরানো যায়নি।

উদ্ধার কিশোরীকে ফিরিয়ে আনতে সোমবার তার পরিবারের সদস্যরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করেছেন। মেয়েটিকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাঁরা। বর্তমানে মেয়েটি ভারতে সেফ হোমে আছে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, অভাব থেকে বাঁচতে চাকরি খুঁজছিল ১৭ বছরের সালমা। চার ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় সে। ছয় সদস্যের পরিবারে বাবা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। অসুস্থ হওয়ায় মা কোনো কাজ করতে পারেন না। এ অবস্থায় বান্ধবীর পরিচিত এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় সূত্রে মানব পাচারকারীদের ফাঁদে পা দেয় সে।

২০২০ সালের মে মাসে অবৈধ পথে ভারতে নিয়ে সালমা ও তার বান্ধবী তাহেরাকে (ছদ্মনাম) যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেয় পাচারকারীরা। প্রায় দেড় বছর পর তাহেরা ভারত থেকে পালিয়ে এলেও সালমা ফিরতে পারেনি। সালমার মায়ের করা মামলা সূত্রে মানব পাচার প্রতিরোধে কাজ করা একটি সংস্থার সহযোগিতায় মুম্বাইয়ের কামাটিপুরা যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করা হয় তাকে। এরপর গত বছরের ৫ ডিসেম্বর তাকে হেফাজতে নেয় সে দেশের পুলিশ। উদ্ধারের পর তিন মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত সালমাকে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি।

ভারতে সালমাকে উদ্ধারে সহযোগিতা করে বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা ‘জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার বাংলাদেশ’। সংস্থাটি ভারতের বেসরকারি সংস্থা ‘তালাশ’-এর সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে।

জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পাচারের পর ওই কিশোরী ভারতের একটি টেলিফোন নম্বর থেকে ফোন করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে। ‘তালাশ’–এর তৎপরতায় এই ফোন নম্বর ট্র্যাক করে ভারতের পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। বর্তমানে তাকে সেখানকার সরকারি একটি সেফ হোমে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তার নাগরিকত্ব যাচাইয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিষয়টি দুই দেশের সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়।

মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মানব পাচার প্রতিরোধ ইউনিট। সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম আক্তারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, অবৈধভাবে প্রবেশ করায় ওই কিশোরীকে কিছুদিন সাজা ভোগ করতে হবে। তবে এই সময়ে তিনি সেফ হোমে থাকবেন। সাজা ভোগ শেষ হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।