৪৫ বছরেও বিজয়ী হতে পারেনি আওয়ামী লীগ

গৌতম চক্রবর্তী ও আহসানুল ইসলাম
গৌতম চক্রবর্তী ও আহসানুল ইসলাম

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনটিতে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হতে পারেননি। এবার এ আসনে বিজয়ী হওয়ার জন্য মরিয়া আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ, মামলা–হামলা, হুমকিতে ধানের শীষের কর্মীরা মাঠেই নামতে পারছেন না।

নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে নৌকার প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ১৯৭৩ সালের পর বিজয়ের মুখ দেখেছে ২০১৪ সালের নির্বাচনে। অবশ্য সে নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে অন্য কোনো দল নয়, নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে।

১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে বিজয়ী হন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী গৌতম চক্রবর্তী। ২০০১ সালে বিজয়ী হওয়ার পর গৌতম চক্রবর্তী জোট সরকারের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে গৌতম চক্রবর্তী এবং আওয়ামী লীগ থেকে আহসানুল ইসলাম টিটু মনোনয়ন পান। সেবার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হন খন্দকার আবদুল বাতেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে খন্দকার বাতেন হরিণ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সাংসদ আবদুল বাতেনকে মনোনয়ন দেয়।

এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য–বিষয়ক সম্পাদক আহসানুল ইসলাম টিটু। আর বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন গৌতম চক্রবর্তী। আহসানুল ইসলাম ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার সাবেক সাংসদ মকবুল হোসেনের ছেলে।

দলীয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও বিজয়ী হতে পারেননি আহসানুল ইসলাম। তিনি এবার সেই পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে বিজয়ী হওয়ার জন্য মরিয়া। যেকোনো প্রকারেই এবার বিজয়ী হতে চান তিনি।

>বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ, মামলা-হামলা, হুমকিতে ধানের শীষের কর্মীরা মাঠেই নামতে পারছেন না।

বিএনপির প্রার্থী গৌতম চক্রবর্তীর অভিযোগ, বিএনপির কোনো নেতা–কর্মীকেই মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ নিশ্চিত পরাজয় জেনে বিএনপির নেতা–কর্মীদের নামে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দিচ্ছে। একটি ‘গায়েবি’ মামলায় নাগরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং তিনজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ২৭ জন নেতা–কর্মী কারাগারে রয়েছেন। গত দুই দিনে নাগরপুরে ৬১ জন এবং দেলদুয়ারে ৪১ জন নেতা–কর্মীর নামে মামলা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আহসানুল ইসলাম জানান, নিশ্চিত পরাজয় জেনে বিএনপির প্রার্থী উল্টাপাল্টা অভিযোগ করছেন। নৌকার নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তাদের নামেই মামলা দেওয়া হয়েছে।

এ আসনে আরও চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র আশরাফুল ইসলাম, এনপিপির মামুনুর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের আখেনুর মিয়া ও বিএনএফের সুলতান মাহমুদ। আর তরিকত ফেডারেশনের মো. আনোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।