'আমরা গরিব, ছেলের জামিন হবে না'
তানভীরের মতো ২০১২ সালের ২ অক্টোবর থেকে সাগর-রুনি মামলায় কারাবন্দী নিরাপত্তাকর্মী পলাশ রুদ্র পাল। তাঁর বিরুদ্ধেও গত ২৬ মাসে কোনো প্রমাণ মেলেনি।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা সদরের এক পাশে ধামাই চা-বাগানের শিলঘাট ডিভিশন। এখানেই এক টিলার ওপরে পলাশদের বাড়ি। বাড়ি বলতে মাটির দেয়ালের দুটি ঘর। বাবা ব্রজেন্দ্র রুদ্র পাল আর মা কল্পনা পাল দুজনেই চা-বাগানের শ্রমিক। তিন ভাইয়ের মধ্যে পলাশই সবার বড়।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পলাশের মা কল্পনা রুদ্র পাল সন্ধ্যাবাতি দিচ্ছিলেন। পলাশের খোঁজ করতে সাংবাদিক এসেছে শুনেই দৌড়ে আসেন তিনি। হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরি ছেলেটারে দেখি না। আমার ছেলেরে আমার বুকে আনিয়া দাও। আমার ছেলে কোনো দোষ করেনি।’
কথা হয় পলাশের বাবা ব্রজেন্দ্র রুদ্র পালের সঙ্গে। সাগর-রুনি হত্যা মামলায় গতকাল একজন জামিন পেয়েছেন—এ কথা শুনে ব্রজেন্দ্র বললেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। উকিল ধরতে পারব না। আমার ছেলের জামিনও হবে না। তাই পলাশের মা প্রতিদিন সন্ধ্যাবাতি দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে ছেলের মুক্তির জন্য প্রার্থনা করে।’
রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির পেছনে গার্ডেন রোডে পলাশের স্ত্রী ময়না বেগম তাঁদের দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। তবে গতকাল সেখানে গিয়ে ময়নাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুই বছর আগে ময়নার সঙ্গে প্রথম আলোর প্রতিবেদকের কথা হয়। তখন তিনি বিভিন্ন বাসায়-মেসে রান্না করে সংসার চালাচ্ছিলেন। তখন তাঁদের বড় ছেলের ছয় আর ছোটটার তিন বছর বয়স ছিল।
পলাশের ছোট ভাই সুভাষ রুদ্র পাল জানান, ময়নার সঙ্গে তাঁদের কোনো যোগাযোগ নেই। দুই ছেলেকে নিয়ে ময়না কোথায় আছেন তা তাঁরা জানেন না।