'নিরাপত্তাহীন' সাংসদ লতিফের জিডি মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে

প্রকাশ্য জনসভায় ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ায় চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দলীয় সাংসদ (চট্টগ্রাম-১১) এম এ লতিফ নগরের ১৬টি থানায় ই-মেইলের মাধ্যমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বন্দর থানায় একটি জিডি নথিভুক্ত হয়েছে।
পুলিশ জানায়, এক পৃষ্ঠার জিডিতে সাংসদ এম এ লতিফ নিজের ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করেছেন। নগরের ১৬টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ই-মেইলে পাঠানো এই জিডিতে সাংসদের স্বাক্ষর রয়েছে।
জিডিতে বলা হয়, ‘আমাকে (এম এ লতিফ) প্রতিরোধ করাসহ হত্যার নির্দেশনা দিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরী তাঁর অনুসারীদের আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়ে হত্যার দায়দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আমার জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন।’
গত সোমবার বিকেলে নগরের লালদীঘি ময়দানে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সাংসদ লতিফকে উদ্দেশ করে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আপনি (সাংসদ এম এ লতিফ) চট্টগ্রামের মাটিতে চলাফেরা করবেন না। কোনো যুবক কিংবা ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করতে পারে।
এতে যদি সে (লতিফ) মৃত্যুবরণ করে, তাহলে আমাকে প্রধান আসামি করতে পারবেন। আসামির কাঠগড়ায় যেতে মহিউদ্দিন চৌধুরী রাজি আছে। সে যাতে চট্টগ্রামে ঢুকতে না পারে, এ জন্য তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।’
গত ৩০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরকে ঘিরে সাংসদ লতিফের উদ্যোগে নগরের বিভিন্ন সড়কে ফেস্টুন টাঙানো হয়। এসব ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়ায়। পরে সাংসদ লতিফ এক সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন যে ছবি বিকৃত করা হয়েছে। তাঁর উপস্থিতিতে গ্রাফিক ডিজাইনার ছবি বিকৃত করার দায় নেন এবং ক্ষমা চান।
সাংসদ লতিফের পাঠানো জিডির বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল জলিল মণ্ডল গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এম এ লতিফ সাহেব জিডি পাঠিয়েছেন। দেখা যাক কী হয়।’
তবে সাংসদ এম এ লতিফ জিডি করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ আমার জিডির কথা বললে তা দেখাতে বলেন। আমি কোনো জিডি করিনি।’
এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মহিউদ্দিন গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংসদ এম এ লতিফ সাহেবের জিডি নথিভুক্ত হয়েছে। তিনি লালদীঘি মাঠে অনুষ্ঠিত মহিউদ্দিন চৌধুরী সাহেবের একটি জনসভায় বক্তৃতার বিষয়ে উদ্বেগ করেছেন।’
সাংসদের জিডির বিষয়ে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।