'বেইমান পাকিস্তান কোনো কথাই রাখেনি'

পাকিস্তান কথা দিয়েছিল যারা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত তাদের দেশে ফেরত নিয়ে বিচার করবে, পাকিস্তান তাদের কৃতকর্মের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইবে। কিন্তু বেইমান পাকিস্তান রাষ্ট্র তাদের কোনো কথাই রাখেনি। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলনের আহ্বায়ক ও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার স্বাধীনতা হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

ভবিষ্যতের কর্মসূচি তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির ২১টি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন শাজাহান খান। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সৈন্যের বিচারের জন্য দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ, বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের দ্রুত ফেরত পাঠানো, পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা আদায়সহ নানা বিষয় সন্নিবেশ করা হয়েছে।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর পাকিস্তানি ১৯৫ সেনা কর্মকর্তার প্রতীকী বিচারের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ গণবিচার’ নামের এ সংগঠনের। সংগঠনটির নেতারা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের পরামর্শ ভিত্তিতে নামের সংগঠনটির সঙ্গে ‘আন্দোলন’ শব্দটি যুক্ত করেছে এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে সংগঠনটির নাম হবে ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন’।
সংবাদ সম্মেলনে শাজাহান খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৭১ সালের লজ্জাজনক পরাজয়কে এখনো তারা (পাকিস্তান) মেনে নিতে পারেনি। এ কারণে পাকিস্তান প্রতিনিয়তই নানা রকম চক্রান্ত করে চলেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। আজ যখন এ দেশে দেশীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাস্তবায়ন হচ্ছে, তখন আমরা দেখছি মুখোশের আড়াল ছেড়ে প্রকাশ্যে বেরিয়ে এসেছে পাকিস্তানের নোংরা মুখচ্ছবি। এ পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল স্তরের, সকল শ্রেণিপেশার মানুষের দল মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন।’
এরপর সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আগামী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে জামায়াত ইসলামী ও দলটির অনুসারী অন্য সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধের জন্য সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য ৩ ফেব্রুয়ারি স্পিকার বরাবর স্বারকলিপি পেশ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং দেশের অন্য জেলাগুলোতে সমাবেশ, ২ মার্চ সব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি প্রদান করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ গণবিচার আন্দোলন। এ ছাড়া ১৯৫ সেনা কর্মকর্তার প্রতীকী বিচার আগামী ২৬ মার্চের পরিবর্তে ৩১ মার্চ নির্ধারণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমত কাদির গামা, সাংসদ শিরিন আখতার, চলচ্চিত্রকার কাজি হায়াৎ, সাংবাদিক অঞ্জন রায় প্রমুখ।