'মুক্তিযোদ্ধা সনদ' নেওয়ার হিড়িক: তদন্ত কমিটি, নথিপত্র তলব

চাকরির মেয়াদ বাড়াতে বা অন্যান্য সুযোগ নিতে যেসব পদস্থ কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছেন, তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করতে তিনটি কমিটি গঠন করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

কমিটিগুলো আজ ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত ‘চাকরির শেষ সময়ে “মুক্তিযোদ্ধা সনদ” নেওয়ার হিড়িক’ প্রতিবেদনে যে কজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করবে। পাশাপাশি অন্য কোনো কর্মকর্তা একইভাবে সনদ নিয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবে।

দুটি কমিটির মধ্যে একটি কমিটির প্রধান করা হয়েছে একজন অতিরিক্ত সচিবকে এবং অন্য দুটি কমিটির প্রধান হবেন দুজন যুগ্ম সচিব।

কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আজ বুধবার টেলিফোনে ‘প্রথম আলো’কে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে যেসব অভিযোগ উঠছে, আমরা তা খতিয়ে দেখছি। তিন দিনের মধ্যে এসব কর্মকর্তার সকল নথিপত্র তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি একইভাবে যেসব অমুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা সেজে ভাতা/অনুদান নিচ্ছেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এসব নথিপত্র নিজে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আগামী সাত দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের নাম সংবাদ সম্মেলন করে আমি গণমাধ্যমে জানিয়ে দেব। এসব অনৈতিক কাজে মন্ত্রণালয়ের যে কর্মকর্তারা সহায়তা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে একইভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, গত পাঁচ বছরে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছেন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার মোট ১১ হাজার ১৫০ জন। এর মধ্যে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন সচিবের নাম অন্তর্ভুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধা গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বাস্থ্যসচিব নিয়াজ উদ্দিন মিঞা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব এ কে এম আমির হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব খোন্দকার শওকত হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবুল কাসেম তালুকদার। এভাবে সনদ নিয়েছেন চিকিত্সক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, ব্যাংকারসহ বিভিন্ন শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তা।